অস্ট্রেলিয়ার মাটি পাকিস্তানের জন্য ছিল দুর্গ। এই সফরের আগে এখানে তারা অস্ট্রেলিয়াকে ওয়ানডেতে হারাতে পারেনি প্রায় ৭ বছর। আর সিরিজ জেতেনি ২২ বছর। দুটি আক্ষেপই দূর হলো মোহাম্মদ রিজওয়ানের হাত ধরে।
অ্যাডিলেডে আগের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ১৬৩ রানে গুটিয়ে পাকিস্তান ম্যাচ জিতেছিল ৯ উইকেটে। রবিবার (১০ নভেম্বর) পার্থে আরও একবার গতির ঝড় তুলে অস্ট্রেলিয়াকে ১৪০ রানে অলআউট করল পাকিস্তান। এরপর ১৩৯ বল হাতে রেখে ম্যাচ জিতল ৮ উইকেটে। সে সঙ্গে ২-১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ জিতল ২২ বছর পর।
সবশেষ ২০০২ সালের জুনে তারা অস্ট্রেলিয়ায় ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিল ২-১ ব্যবধানে। তখন নাসিম শাহর জন্মই হয়নি! সাইম আইয়ুবের বয়স ছিল এক মাসের কম। সেই তরুণরাই এবার নাস্তানাবুদ করল অস্ট্রেলিয়াকে।
পার্থের গতিময় পিচে অস্ট্রেলিয়া ৩১.৫ ওভারে গুটিয়ে যায় ১৪০ রানে, যা পাকিস্তানের বিপক্ষে তাদের সর্বনিম্ন স্কোর। আগের সর্বনিম্ন ছিল এক ম্যাচে আগেই করা ১৬৩। শাহিন শাহ আফ্রিদি ও নাসিম শাহ ৩টি করে উইকেট নিলেও ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হারিস রউফ। সিরিজ সেরাও হয়েছেন তিনি।
জবাবে সাইম আইয়ুবের ৪২, আব্দুল্লাহ শফিকের ৩৭, বাবর আজমের ২৮* ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের ৩০*-এ সহজ জয় পাকিস্তানের।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সর্বোচ্চ ৩০ রান করের শন অ্যাবট। ছয়জন ব্যাটার আউট এক অঙ্কের ঘরে। পাকিস্তানের পেসারদের দাপটে এই সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার কোনো ব্যাটার ফিফটি পাননি! আর চার পেসার নিয়েই অস্ট্রেলিয়াকে এভাবে বেঁধে রাখে পাকিস্তান।
পঞ্চম বোলার হিসেবে সাইম আইয়ুব, সালমান আগাদেরও করতে হয়নি তেমনি কিছু। স্টিভেন স্মিথ, মারনাস লাবুশানে, প্যাট কামিন্স, মিচেল স্টার্ক, জশ হ্যাজলউডরা বিশ্রামে থাকলেও অস্ট্রেলিয়ার তরুণরা দেখালেন তাদের জায়গা নিতে এখনও প্রস্তুত নন তারা।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ দুই টেস্টে ৪০ উইকেট নিয়েছিলেন পাকিস্তানের স্পিনাররা। এবার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২৬ উইকেট নিলেন পেসাররা, যা তিন ম্যাচের সিরিজে পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ।
বিগ ব্যাশ খেলে সমৃদ্ধ হওয়া হারিস রউফ নিয়েছেন ১০ উইকেট। শাহিন শাহ আফ্রিদি নিয়েছেন ৮টি, নাসিম শাহ ৫ ও মোহাম্মদ হাসনাইন ৩টি। ১০ উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরা হারিস রউফ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া: ৩১.৫ ওভারে ১৪০/৯( অ্যাবট ৩০, শর্ট ২২, জাম্পা ১৩; আফ্রিদি ৩/৩২, নাসিম ৩/৫৪) ; পাকিস্তান: ২৬.৫ ওভারেই ১৪৩/২(সাইম ৪২, শফিক ৩২, রিজওয়ান ৩০*; মরিস ২/২৪); ফল: পাকিস্তান ৮ উইকেটে জয়ী; সিরিজ: পাকিস্তান ২-১ ব্যবধানে জয়ী। ম্যাচ ও সিরিজ সেরা : হারিস রউফ।