হার-ই নিয়তি হয়ে উঠেছিল পাকিস্তানের। ঘরের মাঠও তাদের জন্য হয়ে উঠেছিল দুর্গমগিরি। টেস্টে ক্রিকেটে একটি জয় জয়ের খোঁজে তাদের বছরের পর বছর অপেক্ষা। অবশেষে দেশের মাটিতে জয়ের আনন্দ পেল পাকিস্তান। ইংল্যান্ডকে হারিয়ে মুলতান টেস্ট দিয়ে দিয়ে ১ হাজার ৩৪৭ দিনের অপেক্ষা ফুরাল শান মাসুদদের।
মুলতানের দ্বিতীয় টেস্ট ১৫২ রানে জিতেছে পাকিস্তান। স্বাগতিকদের দেওয়া ২৯৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ড অলআউট হয় মাত্র ১৪৪ রানে। তাতে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির পর প্রথমবার ঘরের মাঠে জয়ের দেখা পেল পাকিস্তান। সেবার রাওয়ালপিন্ডিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৯৫ রানে হারিয়েছিল স্বাগতিকরা।
অধিনায়ক মাসুদও হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন। অধিনায়ক হওয়ার পর যে এটিই তার প্রথম জয়। সব মিলিয়ে টানা ৬ টেস্ট হারের পর মুলতানে জয়ের দেখা পেয়েছে পাকিস্তান। হারের বৃত্ত ভাঙার পর মাসুদের চোখেমুখে স্বস্তির ছাপ। ম্যাচ শেষে বলেছেন, “প্রথমটা (জয়) সবসময়ই বিশেষ। যখন কিনা কঠিন সময় পার করে এটি আসে। গত কয়েক সপ্তাহ কঠিন সময় পার করতে হয়েছে। তবে আমাদের পরিকল্পনা ছিল পুরো ২০ উইকেট নেওয়ার। যেটি আমরা পেরেছি।”
পাকিস্তানের এই পরিকল্পনা পূর্ণতায় রূপ দিয়েছেন দুই স্পিনার সাজিদ খান ও নোমান আলী। এই দুই স্পিনারই নিয়েছেন ইংল্যান্ডের ২০ উইকেট। প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডকে বলতে গেলে একাই গুঁড়িয়ে দিয়েছিলেন সাজিদ। নিয়েছিলেন ৭ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে এই অফস্পিনারকে ছাড়িয়ে গেছেন নোমান। বাঁহাতি স্পিনার একাই নিয়েছেন ৮ উইকেট।
দুই ইনিংস মিলিয়ে নোমানের শিকার ১১ উইকেট (৩ ও ৮)। অন্যদিকে সাজিদ পেয়েছেন ৯ উইকেট (৭ ও ২)। ১৯৭২ সালের পর প্রথমবার দুই বোলার মিলে নিলেন প্রতিপক্ষের ২০ উইকেটের সবক’টি। নোমান-সাজিদের আগে সবশেষ এই কীর্তি ছিল অস্ট্রেলিয়ার বব মাসি (১৬ উইকেট) ও ডেনিস লিলির (৪ উইকেট)। ঘটনাক্রমে সেটাও ছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে।
২৯৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নামা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নোমান ও সাজিদকে ছাড়া আর কোনও বোলার ব্যবহার করেনি পাকিস্তান। সাজিদ শুধু ওপেনার বেন ডাকেট ও ওয়ান ডাউনে নামা ওলি পোপকে আউট করেছেন। বাকি ৮ উইকেট নোমানের। ইংল্যান্ডের হয়ে কিছুটা লড়াই করেছেন বেন স্টোকস (৩৭)।
উইকেটসংখ্যায় নোমান এগিয়ে থাকলেও ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠেছে সাজিদের হাতে। আর মুলতানের জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ ১-১ সমতায় ফিরিয়েছে পাকিস্তান।