জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া ২০২২ সালের নভেম্বরে এক বিরল স্বীকারোক্তি দিয়েছিলেন। তিনি তখন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান। দেশটির সেনাবাহিনী যে দশকের পর দশক ধরে রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করেছে, তা স্বীকার করে নিয়েছিলেন তিনি। নিজের বিদায়ী ভাষণে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ভবিষ্যতে সামরিক বাহিনী পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করবে না।
কিন্তু মাত্র ১৪ মাস যেতেই সেই প্রতিশ্রুতি স্রেফ উবে যায়। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে পাকিস্তান। পুরো নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সামরিক বাহিনীর ছায়া পড়ছে বলে মনে করছেন অনেকে।
নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে কি না, এনিয়ে সংশয় রয়েছে পর্যবেক্ষকদের। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফকে (পিটিআই) তাদের নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। ইমরানসহ দলটির অনেক নেতা কারাগারে। অনেকে পলাতক। নির্বাচনে দলটির সদস্যদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়াই করতে হবে।
দেশটির সাংবাদিকরা ইমরান খান এবং পিটিআই নিয়ে কোনও প্রতিবেদন করতে পারছেন না। সেনাবাহিনীর আরোপিত সেন্সরশিপ এক্ষেত্রে বড় বাধা। নির্বাচনের মৌসুম অথচ কোনও উৎসবের আমেজ নেই। উল্টো যেন এক অশনি সংকেত ঝুলছে।
পাকিস্তানের এই নিরুত্তাপ রাজনৈতিক আবহাওয়ার মূলে আছে সেনাবাহিনীর প্রভাব। দেশটির স্বাধীনতার ৭৭ বছরে প্রায় ৩ দশকই সরাসরি ক্ষমতায় ছিল প্রতিষ্ঠানটি। বাকি সময়েও পর্দার আড়াল থেকেই ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে রেখেছে।
শ্বাসরুদ্ধকর এই গণতন্ত্রে কোনও প্রধানমন্ত্রীই ক্ষমতার পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি। কিন্তু চারজন সামরিক শাসকের মধ্যে তিনজনই নয় বছরের বেশি সময় রাজত্ব করেছেন।
পাকিস্তান তার দ্বাদশ সাধারণ নির্বাচনের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে। দেশটির প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও বিশ্লেষকদের মুখে একটাই প্রশ্ন, পাকিস্তানের ২৪ কোটি মানুষ কি বেসামরিক-সামরিক ক্ষমতার ভারসাম্যহীনতাকে সংশোধন করতে পারবে। সমালোচকদের অনেকেই অবশ্য এই নির্বাচনকে প্রহসনেই বলতে চাইছেন।
‘কর্তৃত্বাধীন গণতন্ত্র’
লাহোরভিত্তিক সাংবাদিক ও সম্পাদক বদর আলম বলেন, “সেনাবাহিনী মনে করে তারা পাকিস্তানের অস্তিত্বের কেন্দ্র। এখনও তারা রাষ্ট্রের সবচেয়ে প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠান হিসেবে রয়ে গেছে। বছরের পর বছর ধরে তাদের প্রত্যক্ষ শাসনের ফল এটি।”
পাকিস্তানের সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও পিটিআই (পাকিস্তান-তেহরিক-ই-ইনসাফ) সংশ্লিষ্ট অবসরপ্রাপ্ত রাজনীতিবিদ আসাদ উমর মনে করেন, ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার মাত্র এক বছর পরেই ভারতের সঙ্গে যুদ্ধের ফলেই পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর সেনাবাহিনীর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়।
এর মাত্র এক দশক পরে ১৯৫৮ সালে দেশে প্রথমবারের মতো সামরিক শাসন চালু হয়। তখন সেনাপ্রধান জেনারেল আইয়ুব খান ক্যু করে ক্ষমতা দখল করেন। এরপর থেকে সেনাবাহিনী ক্রমাগত সরকারের যে কোনও দপ্তরের চেয়ে বেশি বাজেট বরাদ্দ পেয়ে আসছে।
দুইবারের অর্থমন্ত্রী, পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) সাবেক নেতা মিফতাহ ইসমাইল আল জাজিরাকে বলেন, “১৯৫৮ সালে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণ এবং সামরিক আইনের প্রবর্তনের পর থেকে পাকিস্তানে তাদের রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ স্বাভাবিক হয়ে গেছে।”
পাকিস্তান সৃষ্টির পর প্রথম কয়েক বছর দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো ছিল না। প্রতিটি ক্ষেত্রই ছিল টালমাটাল, একমাত্র ব্যতিক্রম ছিল সেনাবাহিনী। মন্দার ঢেউ তাদের স্পর্শ করেনি। উল্টো সমাজে তাদের ক্ষমতা অনেক বেশি বাড়ে। এই অবস্থা তাদের রাজনৈতিক প্রভাবও বহুগুণ বাড়িয়ে তোলে।
সাংবাদিক আলম বলেন, “এটিই একমাত্র প্রতিষ্ঠান যেটি ব্রিটিশ ভারত থেকে পাকিস্তান পুরোপুরিভাবে উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছে। এর চেইন অব কমান্ড, রসদ, এমনকি ঘাঁটি ও অস্ত্রও।”
ভারতের সঙ্গে ১৯৪৮, ১৯৬৫, ১৯৭১ ও ১৯৯৯ সালের যুদ্ধের ফলে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর ভূমিকা আরও প্রবল হয়। আলম বলেন, “নিজেদেরকে বাস্তব বা কল্পিত ভারতীয় হুমকির বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা অবলম্বন হিসেবে আরও সম্প্রসারিত ও শক্তিশালী করতে সেনাবাহিনী সবসময়ই রাষ্ট্র থেকে প্রচুর অর্থ পেয়েছে।”
শুরুর বছরগুলোতে সেনাবাহিনীর ক্রমবর্ধমান প্রভাব পাকিস্তানের রাজনৈতিক বিন্যাসকে এমনভাবে গড়ে তুলেছে যাকে রাজনৈতিক বিজ্ঞানী আসমা ফায়েজ ‘কর্তৃত্বাধীন গণতন্ত্র’ বলে অভিহিত করেন।
ফায়েজ হলেন লাহোর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্র বিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক। তিনি আল জাজিরাকে বলেন, “পাকিস্তান একটি হাইব্রিড শাসনব্যবস্থার সুন্দর উদাহরণ, যেখানে রাজনীতি শ্রেণি বিভক্ত।”
‘আন্ডার দ্য গুন : পলিটিক্যাল পার্টিস অ্যান্ড ভায়োলেন্স ইন পাকিস্তান’ বইয়ের লেখক নিলুফার সিদ্দিকির মতে, পাকিস্তানের রাজনৈতিক দলগুলোর ত্রুটির কারণেই সামরিক বাহিনী ঘনঘন হস্তক্ষেপ করে। রাজনৈতিক দলগুলো গোষ্ঠীকেন্দ্রিক, পরিবার নিয়ন্ত্রিত এবং অভ্যন্তরীণ চর্চায় অগণতান্ত্রিক।
কথা ছিল এবারের জাতীয় নির্বাচন হবে গত নভেম্বরে। কিন্তু দেশটির নির্বাচন কমিশন ২০২৩ সালের আদমশুমারির পর নতুন সংসদীয় এলাকা নির্ধারণে আরও সময় দরকার বলে কালক্ষেপণ করে। পাকিস্তানের ইতিহাসে একমাত্র ২০১৩ সালেই শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর হয়েছিল।
সাবেক এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নাম প্রকাশ না করার শর্তে আল জাজিরাকে বলেন, “শুরু থেকেই তারা সবকিছুতে জড়িত। তারা নিজেদের আলাদা করতে পারে না। ব্যবস্থাটা এমনভাবে কাজ করত যে, কেবল সেনাবাহিনীর মন খুশি করেই ক্ষমতায় যাওয়া যায়।”
গণতন্ত্রের প্রতিশ্রুতি
১৯৮৮ সালের অগাস্ট মাসে জেনারেল জিয়াউল হক বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার পর পাকিস্তান ১১ বছরের সামরিক শাসন থেকে মুক্তি পায়। এরপর ১৯৮০-এর শেষের দিকে এবং ১৯৯০-এর দশকে বেসামরিক সরকারগুলো ক্ষমতায় আসে।
পরবর্তী এগারো বছরে পাকিস্তানে চারটি নির্বাচন হয়। এর প্রতিটিই কারচুপি, ভোট জালিয়াতি ও সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপের অভিযোগে দুষ্ট। বেনজির ভুট্টো নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) দুই নির্বাচনে (১৯৮৮, ১৯৯৩), আর নওয়াজ শরীফ নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান মুসলিম লীগ নওয়াজ ১৯৯০ ও ১৯৯৭ সালে জেতে।
চারটি সরকারের মধ্যে কোনোটিই তাদের মেয়াদ শেষ করতে পারেনি। উভয়েই ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগের মুখোমুখি হয়, যা আজও দল দুটিকে তাড়িয়ে বেড়ায়।
পাকিস্তানে সর্বশেষ সরাসরি সামরিক অভ্যুত্থান ঘটেছিল ১৯৯৯ সালের অক্টোবর মাসে। তখন তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল পারভেজ মোশাররফ পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ সরকারকে উৎখাত করে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফকে কারাগারে পাঠান।
২০০৮ সাল পর্যন্ত মোশাররফের শাসন চললেও এই সময়েই পিপিপি এবং পিএমএল-এন পরস্পরের হাত ধরেছিল। ২০০৬ সালে তারা একটি ঐতিহাসিক দলিল, ‘চার্টার অফ ডেমোক্রেসি’তে একমত হন। পূর্বে বিরোধ থাকলেও, বেনজির এবং নওয়াজ একমত হন যে, তারা ‘অসাংবিধানিক উপায়ে একে অপরকে ক্ষতিগ্রস্ত করবেন না’। সরকার উৎখাত করতে বা ক্ষমতা দখলে সেনাবাহিনীর সহায়তা চাইবেন না।
২০০৭ সালের ডিসেম্বরে একটি রাজনৈতিক সমাবেশে বেনজির হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার পর তার স্বামী আসিফ আলী জারদারি পিপিপির নেতৃত্ব নেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে পিপিপি ক্ষমতায় আসে। শরীফের পিএমএল-এন দ্বিতীয় স্থানে থাকে।
সাবেক মন্ত্রী উমরের মতে, চুক্তিতে সই করার ধারণাটি ঠিক হলেও, পক্ষগুলো আসলে তা মেনে চলেনি।
২০১৩ সালের নির্বাচনে কেবল পিপিপি থেকে পিএমএল-এন ক্ষমতার হস্তান্তরই হয়নি, উত্থান হয় পিটিআইয়ের। ক্রিকেটের সাবেক তারকা ইমরান খানের নেতৃত্বে দলটি জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছায়। পরের পাঁচ বছরে পিটিআইয়ের সমর্থন আরও বাড়ে। ইমরান খান পিএমএল-এন সরকারের দুর্নীতিকে লক্ষ্য করে আন্দোলন করতে থাকেন। অন্যদিকে সেনাবাহিনী ও সরকারের মধ্যে ফাটলও ক্রমাগত বাড়তে থাকে।
২০১৮ সালে ইমরান খান ক্ষমতায় এলে তার সমালোচকরা বলতে থাকেন, শরীফকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সেনাবাহিনীই তাকে বাছাই করেছে। শরীফ ২০১৭ সালে ‘সৎ ও সত্যবাদী’ না হওয়ার অভিযোগে প্রথমে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারান। এরপর ২০১৮ সালের জুলাইয়ে নির্বাচনের মাত্র কয়েকদিন আগে দুর্নীতির অভিযোগে জেলে যান। তার মেয়েও গ্রেপ্তার হন। আর তার দলের উপর দমন-পীড়ন চলে।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত ইমরান খান ও সেনাবাহিনীর মধ্যেও উত্তেজনা বাড়তে থাকে। ২০২২ সালের এপ্রিলে সংসদে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে তাকে ও তার সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। ইমরান অভিযোগ করেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর ষড়যন্ত্রের ফল। যদিও উভয় পক্ষই অভিযোগ অস্বীকার করে।
শরীফ এবং ইমরানের অভিজ্ঞতায় বোঝা যায়, পাকিস্তানের রাজনীতিবিদরা কেন প্রায়ই সেনাবাহিনীর ইচ্ছার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে চলতে বাধ্য হন।
সাংবাদিক আলম বলেন, “সেনাবাহিনীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে গেলে কারাবাস, বিচার, নেতিবাচক মিডিয়া প্রচার, এমনকি হত্যার মতো ভয়ঙ্কর পরিণামের মুখোমুখি হওয়ার ঝুঁকি তাদের নিতে হয়।”
সেনাবাহিনীকে শুদ্ধিকরণ?
তবে সবার মতেই, ইমরান ও তার দল এমন নির্যাতনের মুখোমুখি হয়েছেন, যা পাকিস্তানের রাজনীতিতে সেনাবাহিনী ও রাজনৈতিক নেতাদের সম্পর্কের মধ্যে আগে দেখা যায়নি। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর খানকে খুনের চেষ্টা হয়। গত আগস্ট থেকে তিনি কারাগারে আছেন। দুর্নীতি ও রাষ্ট্রের গোপন তথ্য প্রকাশের অভিযোগে বিচারে তিনি দণ্ডপ্রাপ্ত। ইমরান অবশ্য এসব অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলছেন।
ইমরানের দলও রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের দমন-পীড়নের মুখোমুখি হচ্ছে। গত ৯ মে ইসলামাবাদে আদালতের বাইরে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৪৮ ঘণ্টারও কম সময়ে জেল থেকে মুক্তি পান তিনি। কিন্তু তার সমর্থকরা দেশজুড়ে দাঙ্গা-হাঙ্গামায় জড়িয়ে পড়েন। তারা সরকারি ভবন ও সেনা স্থাপনায় হামলা চালায়।
তিনি যে গ্রেপ্তার হবেন, এই আশঙ্কা আগেই করেছিলেন ইমরান খান। ডয়চে ভেলেকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এই আশঙ্কার কথা বলেছিলেন। এরপরই মূলত তাকে তোষাখানা মামলায় তিন বছরের জেল দেওয়া হয়।
তিনি এখন রাওয়ালপিণ্ডির কেন্দ্রীয় আদিয়ালা কারাগারে বন্দি। এই অবস্থাতেই মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় গোপনীয় বিষয় ফাঁসের অভিযোগে করা আরেক মামলার রায় হয়। এতে তাকে আরও ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
গত ১৩ জানুয়ারি ইমরান বলেছিলেন, তার বিরুদ্ধে করা সব মামলা তুলে নেওয়া হবে যদি তিনি আপস করেন। এমন বার্তা তার কাছে পাঠানো হয়েছে বলেও তিনি সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন।
তিনি আরও বলেন, “আগের দুই প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ ও আসিফ আলী জারদারিও তোশাখানা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। কিন্তু তাদের সাজাও হাই কোর্টে স্থগিত হয়েছিল। নওয়াজ শরীফের মেয়ে মরিয়ম নওয়াজও তোশাখানা থেকে একটি বিএমডব্লিউ গাড়ি পেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তা রাষ্ট্রীয় তোশাখানায় জমা দেননি। তারপরও তার বিরুদ্ধে করা মামলাও হাই কোর্টে স্থগিত হয়েছিল।”
তথ্যসূত্র : আল জাজিরা, ডয়চে ভেলে, ডন।