দেশে অর্থনৈতিক সংকট চলতে থাকায় রাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রাপ্য মাসিক বেতন-ভাতা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন নাকভি।
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট কার্যালয় জানিয়েছে, আসিফ আলি জারদারি তার প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রাপ্য বেতন নেবেন না।
মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশে সতর্কতামূলক আর্থিক ব্যবস্থাপনাকে উৎসাহিত করার জন্য তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট জাতীয় কোষাগারের ওপর চাপ কমানোকে অপরিহার্য বলে মনে করেন। তাই নিজের বেতন-ভাতা বাতিল করেছেন।
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পদের বেতন ৮ লাখ রুপিরও বেশি। আগের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি মাসে ৮ লাখ ৪৬ হাজার ৫৫০ রুপি বেতন নিতেন।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নাকভিও বেতন না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এর আগে তিনি (২০২৩-২৪ মেয়াদে) পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (টুইটার) এক পোস্টে নাকভি জানান, এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে তিনি প্রতিটি সম্ভাব্য উপায়ে দেশকে সমর্থন ও সেবা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও জানিয়েছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় মহসনি নাকভি রাষ্ট্র থেকে তার মাসিক বেতন-ভাতা নেবেন না।
চলতি মাসের প্রথম দিকে যখন সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়ে যে, নকভি পাকিস্তানের পরবর্তী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হবেন, তখন পিএমএল-এন ও পিপিপি উভয়ই অস্বীকার করে যে, তিনি তাদের প্রার্থী। একজন প্রবীণ পিএমএল-এন নেতা নকভির নিয়োগে হতাশাও প্রকাশ করেন এবং জোর দিয়ে বলেন যে, তিনি তাদের দলের লোক না।
পিএমএল-এন তাকে পিপিপির লোক বলে উল্লেখ করে। অন্যদিকে পিপিপি নেতারা নকভিকে ‘রাওয়ালপিন্ডির লোক’ বলে অভিহিত করেছেন। রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর অবস্থিত।
নাকভি গত ১১ মার্চ পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হন। এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি তাকে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবেও নিয়োগ দেওয়া হয়।
পাকিস্তানে গত কয়েক বছর ধরেই অর্থনৈতিক সংকট চলছে। তার মধ্যেই গত ৮ ফেব্রুয়ারি দেশটিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
নির্বাচনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দলের প্রার্থীরা সবচেয়ে বেশি আসন পেলেও কোনও দলই সরকারর গঠনের মতো একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। পরে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএলএন) ও পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) জোট বেঁধে সরকার গঠন করে।
নওয়াজ শরীফের ভাই শেহবাজ শরিফ আবারও প্রধানমন্ত্রী হন। আর প্রেসিডেন্ট হন পিপিপি প্রধান আসিফ আলি জারদারি।
সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিরোধের জেরে ইমরান খান ২০২২ সালের এপ্রিলে পার্লামেন্টে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবে ক্ষমতাচ্যুত হন।
সূত্র : টাইমস নাউ ও ডন