কারাগার থেকে আদালতে আনার পর আগের মতো সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা না বলে শুধু দোয়া চাইলেন সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
চুপ হয়ে যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেছেন, কথা বললে মামলা ও রিমান্ডের সংখ্যা বাড়তে থাকে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের ৯ দিন পর ১৪ আগস্ট গ্রেপ্তার করা হয় পলককে। তারপর তার বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা হয়, এসব মামলায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়।
সোমবার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা একটি মামলার হাজিরায় পলককে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে নেওয়া হয় ঢাকার আদালতে। তাকে প্রথমে রাখা হয় সিএমএম আদালতের হাজতখানায়।
পলক প্রিজনভ্যান থাকা অবস্থায় সাংবাদিকরা লোহার জানালার কাছে গিয়ে তার সঙ্গে কথা বলতে চান। তিনি তখন বলেন, “কথা বললে মামলা ও রিমান্ডের সঙ্গে বাড়তে থাকে। কথা বলে কী লাভ? আমার জন্য দোয়া করবেন।”
এর কিছুক্ষণ পরে প্রিজনভ্যানের মধ্যে এক পুলিশ সদস্য উঠে পলককে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও মাথায় হেলমেট পরিয়ে দেন। এরপর তাকে পুলিশের নিরাপত্তা বেষ্টনী দিয়ে মহানগর দায়রা আদালতের হাজতখানায় নেওয়া হয়।
হাজতখানায় নেওয়ার পথে পলক আবার বলেন, “কথা বললে মামলা ও রিমান্ডের সংখ্যা বাড়তে থাকে। পেছনে হ্যান্ডকাপও দেওয়া হয়। কথা বলার অধিকার কি আমাদের আছে? এখন পর্যন্ত ৭৮ মামলার আসামি করা হয়েছে।”
পলকের আইনজীবী ফারজানা ইসলাম রাখি সাংবাদিকদের জানান, দুদকের মামলায় পলকের হাজিরার দিন ধার্য ছিল বলে তাকে কাশিমপুর কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়।
সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য হলেও পলককে কারাগারে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তার আইনজীবী।
তিনি বলেন, “কাশিমপুর কারাগারের চার নম্বর সেলে তাকে হাই সিকিউরিটির মধ্যে রাখা হয়েছে। কোনও প্রকার ডিভিশন দেওয়া হচ্ছে না। সাধারণ কয়েদিদের মতো করে তাকে রাখা হচ্ছে।
“তার ফ্যামিলির সাথে কোনও প্রকার যোগাযোগ পর্যন্তও করতে দেওয়া হচ্ছে না। দেশের খবর জানার জন্য অখ্যাত চারটি পত্রিকা তাকে দেওয়া হয়। জাতীয় কোনও পত্রিকা তাকে দেওয়া হচ্ছে না।”
পলক গ্রেপ্তার হওয়ার পর গত ১২ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে এই মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন। গত ৬ ফেব্রুয়ারি তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
জুনায়েদের সঙ্গে তার স্ত্রী আরিফা জেসমিনও এই মামলার আসামি। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে প্রায় ১৯ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।
মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, পলকের ২৪টি ব্যাংক হিসাবে ঘুষ, দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে ৩২ কোটি ৪ লাখ ৯৫ হাজার ৩১৪ টাকা জমা হয়। এর মধ্যে ২৯ কোটি ৮৪ লাখ ৭২ হাজার ৯৫ টাকা তুলে নেওয়া হয়। ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এই টাকা লেনদেন হয়েছে।



