আর একটা ম্যাচ। তারপরই টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিবেন মাহমুদউল্লাহ। হায়দরাবাদে শনিবার সেই ম্যাচের পর শেষ হচ্ছে একটা অধ্যায়ও। পঞ্চপাণ্ডবখ্যাত মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে পড়ছে যবনিকা।
এই ফরম্যাটে তাদের বিকল্প তাহলে কারা? আদৌ কি তৈরি হয়েছে বিকল্প, দেখে নেওয়া যাক।
মাহমুদউল্লাহ
শনিবার শেষ টি-টোয়েন্টি খেলবেন মাহমুদউল্লাহ। তার বিদায়ী ম্যাচে দলের পক্ষ থেকে কি সংবর্ধনা দেওয়া হবে? শুক্রবার হায়দরাবাদে সংবাদ সম্মেলনে ফিল্ডিং কোচ নিক পোথানস জানালেন, ‘‘দুঃখিত, এটা অভ্যন্তরীণ ব্যাপার (দলের)।’’
১৪ থেকে ২০ নম্বর ওভারে ফিনিশার হিসেবে খেলেছেন মাহমুদউল্লাহ। ক্যারিয়ারের শুরুতে টি-টোয়েন্টিতে মাহমুদউল্লাহর স্ট্রাইক রেট ছিল ১০৩.৭৮। তবে ২০১৬ থেকে ২০১৯-এ ফিনিশারের ভূমিকায় তার স্ট্রাইক রেট বেড়ে হয় ১৩২.৩৩। গত চার বছরে অবশ্য নিজের ছায়া হয়ে পড়েন তিনি। এই সময়ে স্ট্রাইক রেট কমে হয় ১১০.২০।
২০১৬ থেকে ২০১৯ সালের যে মাহমুদউল্লাহ ঝড় তুলেছিলেন ফিনিশিংয়ে, সেই ভূমিকাটা নিতে পারেন কে? দিল্লেতে অবসরের ঘোষণায় মাহমুদউল্লাহ নিজেই বলেছিলেন, ‘‘টি-টোয়েন্টিতে ৬-৭ নম্বরে ব্যাট করা সবচেয়ে কঠিন। পাঁচ ইনিংসের মধ্যে তিনটিতে ব্যর্থ হওয়া স্বাভাবিক। জাকের আলী অনিক, শামীম পাটোয়ারি, আফিফ হোসেন, এবং ইয়াসির রাব্বির মতো খেলোয়াড়দের আমি ভবিষ্যতে ফিনিশার হিসেবে দেখতে চাই। তাদের সাহসী হতে হবে, ব্যর্থতার ভয় না করে টিম ম্যানেজমেন্ট, কোচ ও অধিনায়কের সমর্থন পেতে হবে।’’
তাদের কেউ মাহমুদউল্লাহর জায়গাটা নিতে পারেন কিনা সেটাই দেখার।
সাকিব আল হাসান
মিডলঅর্ডারে দলের হাল ধরবেন আর ৪টা ওভার করে দিবেন-এমন অলরাউন্ডার কমই আছে বিশ্ব ক্রিকেটে। সাকিব আল হাসানের বিকল্প খুঁজে পাওয়া তাই সহজ নয়।
মেহেদী হাসান মিরাজের বোলিং টেস্ট আর ওয়ানডেতে কার্যকরী, তবে টি-টোয়েন্টিতে এতটা ভয়ঙ্কর নন তিনি। ২৭ ম্যাচে উইকেট কেবল ১৪টি।
ব্যাটিংয়েও সাকিব আল হাসানের মতো আক্রমণাত্মক নন মিরাজ। তার স্ট্রাইক রেট কেবল ১১৬.৩৪। সাকিবের বিকল্প হিসেবে তাই একজন ব্যাটার ও একজন বোলার আপাতত খেলাতে হবে বাংলাদেশকে।
তামিম ইকবাল
২০২২ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছেন তামিম ইকবাল। এরপর ১৭জন ওপেনার খেলিয়েছে বাংলাদেশ, সেভাবে সফল হননি কেউ। একটা সময় লিটন দাস ও নাঈম হাসানকে ভাবা হচ্ছিল সেরা বিকল্প। কিন্তু ব্যর্থ তারাও।
গত বছর ৯টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে রনি তালুকদারের স্ট্রাইক রেট ছিল ১৪১.৯৫। তবে দীর্ঘ মেয়াদে সুযোগ পাননি তিনি। তানজিদ হাসান ও পারভেজ হোসেন ইমনও ব্যর্থ।
মুশফিকুর রহিম
৪ নম্বর পজিশনেই বেশিরভাগ সময় খেলেছেন মুশফিকুর রহিম। ১০২ ম্যাচে ১১৫.০৩ স্ট্রাইক রেটে তার রান ১৫০০। ২০২২ সালে তিনি টি-টোয়েন্টি ছাড়ার পর ৪ নম্বরে খেলছেন তাওহিদ হৃদয়।
হৃদয় অবশ্য খারাপ করছেন না। ৩১ ম্যাচে ১২৭.২৫ স্ট্রাইক রেটে তার রান ৬২১। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে না হলেও বিপিএলে একটি সেঞ্চুরি আছে হৃদয়ের।
মাশরাফি বিন মর্তুজা
এই ফরম্যাটে ৫৪ ম্যাচে ৪২ উইকেট মাশরাফি বিন মর্তুজার। ৭ বছর আগে টি-টোয়েন্টি ছাড়া পেসার মাশরাফির বিকল্প পেয়ে গেছে বাংলাদেশ। মুস্তাফিজুর রহমান এই ফরম্যাটে নিয়েছেন ১৩১ উইকেট, তাসকিন আহমেদ ৭৪টি। এমনকি হালের তানজিম হাসান সাকিবও মুগ্ধ করেছেন গত বিশ্বকাপে।
তবে অধিনায়ক মাশরাফির বিকল্প এখনও খুঁজে পায়নি বাংলাদেশ। নাজমুল হোসেন শান্ত’র নেতৃত্ব নিয়ে সমালোচনা হয়েছে গত ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবালরা না থাকায় নেতৃত্ব একটা বড় শূন্যতার জায়গা বাংলাদেশের।