রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় মারা যাওয়া আওয়ামী লীগ নেতা ইসহাক আলী খান পান্নার লাশ বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করেছে ভারতের মেঘালয় পুলিশ।
ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক পান্না গত ২৪ আগস্ট রাতে সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত পথে অবৈধভাবে ভারত যাওয়ার পথে মারা গিয়েছিলেন।
শনিবার দুপুরে সিলেটের তামাবিল ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে তার লাশবাহী ফ্রিজিং ভ্যান বাংলাদেশে আসে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), ইমিগ্রেশন পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন ও পরিবারের সদস্যরা পান্নার লাশ বুঝে নেন।
সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমেই লাশটি ভারত থেকে বাংলাদেশে হস্তান্তর করা হয়েছে। ভারতের মেঘালয় পুলিশ সব আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ বিজিবি ও পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।
এ সময় পান্নার পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে লাশটি হস্তান্তর করা হয়।
পান্নার স্ত্রী ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলের সাবেক ভিপি আইরিন পারভীন বাঁধন। ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। এই দম্পতির একটি ছেলে রয়েছে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা লুকিয়ে আছেন। কেউ কেউ এর মধ্যে গ্রেপ্তারও হয়েছেন।
এরমধ্যে পান্নাসহ কয়েকজন ভারতে পালিয়ে যান। সিলেটের এক আওয়ামী লীগ নেতা জানিয়েছিলেন, উঁচু পাহাড় অতিক্রম করে অনেকে নিরাপদে যেতে পারলেও পান্না হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
২৬ আগস্ট মেঘালয় রাজ্যের পূর্ব জৈন্তিয়া পাহাড়ের দোনা ভোই গ্রামের একটি সুপারিবাগানে অর্ধগলিত অবস্থায় পান্নার লাশটি পাওয়ার তথ্য জানায় মেঘালয় পুলিশ । এলাকাটি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে।
পান্না ১৯৯৪ সালে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে পিরোজপুর-২ আসন থেকে তিনি দলীয় মনোনয়ন পেলেও পরে জোটগত কারণে তার নির্বাচন করা হয়নি। কেন্দ্রীয় কমিটিতে না থাকলেও আওয়ামী লীগে সক্রিয় ছিলেন তিনি।
পান্না ২০১২ সালের সম্মেলনের পর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক এবং পরে বিভিন্ন উপ-কমিটির সদস্য হয়েছিলেন। মৃত্যুর আগপর্যন্ত ছিলেন পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি নামে একটি বিমা কোম্পানির চেয়ারমান ছিলেন তিনি।