রূপালী ব্যাংকের পটুয়াখালী শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার গোলাম কবির ফরাজী। গায়ে একটি পোস্টার সেঁটে ঘুরছেন শহরের পথে পথে।
পটুয়াখালী নিউ মার্কেট এলাকায় হাতে বাজারের ব্যাগ আর বুকে পোস্টার সাঁটা ফরাজীর ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সোশাল মিডিয়ায়। কেন তিনি এই ভূমিকায়, তা নিয়ে উঠেছে কৌতূহল।
ফরাজী সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির প্রতিবাদ এবং ঘুষখোরদের প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করতে তার এই পদক্ষেপ।
তার পোস্টারে লেখা- ‘ঘুষখোর দুর্নীতিবাজ জারজরা, চড়া দামে বেশি জিনিস কিনবি না, বেশি কিনে বাজার চড়া করবি না’।
পটুয়াখালী জেলা শহরের সদর রোডে ভাড়া বাসায় থাকেন ফরাজী। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তার সংসার। ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে তিনি ব্যাংকার হিসেবে কাজ শুরু করেন রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংকে।
তার দাবি, চাকরি করেও টানাটানির মধ্যে সংসার চালাতে হচ্ছে তাকে। দুর্নীতি না থাকলে তাকে এই সমস্যায় পড়তে হতো না।
তাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে নেমেছেন জানিয়ে ফরাজী বলেন, “আমাদের মতো সাধারণ মানুষদের জীবনযাপনে সৎ পথে থাকা অনেক কষ্ট। ঘুষখোর ও দুর্নীতিবাজরা এই সমাজ ব্যবস্থাকে নষ্ট করে ফেলছে।
“আমি ছোটবেলা থেকেই একজন প্রতিবাদী মানুষ। এজন্য আমি তাদের বিরুদ্ধে আমার জায়গা থেকে যতটুকু পারি, ততটুকু প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতির মধ্যে সম্প্রতি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতির ধারণা সূচকে বাংলাদেশের অবনমন দেখা যায়। সেই অবস্থায় ফরাজীর পদক্ষেপকে অনেকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
পটুয়াখালীর মিঠাপুকুর পাড়ের বাসিন্দা অপু রহমান সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও দুর্নীতির কারণে আজ সাধারণ মানুষের জীবনযাপন খুব কঠিন হয়ে পড়েছে। আমি এক ভাইকে দেখেছি তার বুকের সঙ্গে পোস্টার লাগিয়ে ঘুরছেন। আমি তার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।”
সাইফুল ইসলাম নামে নতুনবাজারের এক ব্যবসায়ী সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “দেশে দুর্নীতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা মানুষ এখন মুখ দিয়ে বলতে চায় না। কতটা সহ্যের সীমা পার হলে একটা মানুষ শরীরে পোস্টার লাগিয়ে রাস্তায় নামতে পারে, সেটুকু ভাবুন শুধু।”
দুর্নীতি ঠেকাতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান রেখে এই ব্যবসায়ী বলেন, “নয়ত দুর্নীতি ঘুনপোকার মতো সমাজটাকে খাবে।”