জিম্বাবুয়ে এতদিন ছিল ‘দুঃসময়ের বন্ধু’। খারাপ পারফরম্যান্সের সময় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ খেলে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নিতেন বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা। সেই জিম্বাবুয়ের কাছে এবার ৭ বছর পর টেস্ট হেরেছে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে নাজমুল হোসেন শান্তর দল অলআউট হয়েছিল ২০০ রানের আগে। দ্বিতীয় ইনিংসে শুরুটা ভাল করলেও ৩০০ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেনি স্কোরটা।
সোমবার থেকে চট্টগ্রামে শুরু হতে যাওয়া দ্বিতীয় টেস্টের আগে আজ (রবিবার) সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশি কোচ ফিল সিমন্সও স্বীকার করে নিলেন দলের বাজে খেলার কথা। ছন্দে ফিরতে দেশের মানুষকে ধৈর্য ধরতে বললেন সিমন্স, ‘‘আমি বাংলাদেশের মানুষের কাছে ধৈর্য ধরার অনুরোধ জানাই। আমি জানি এ দেশের মানুষের ক্রিকেটের প্রতি আবেগ কতটা গভীর। আমরা দলের উন্নতির জন্য সঠিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি। এজন্য আপনাদের ধৈর্য প্রয়োজন। আমরা ঠিক কাজটা করার চেষ্টা করছি, যাতে ভালো খেলতে পারি, সেটা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি।’’
এনামুল হক বিজয়কে আনতে গিয়ে দ্বিতীয় টেস্টের দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে আরেক ওপেনার জাকির হাসানকে। জাকির অবশ্য সিলেট টেস্টের একাদশেই ছিলেন না। মাহমুদুল হাসান জয় টিকে গেলেও তার টেস্টে সবশেষ ১৭ ইনিংসে নেই ফিফটি।
বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটির ব্যর্থতা নিয়ে নিয়ে সিমন্স বললেন, ‘‘এটা (ঘরোয়া ক্রিকেটের কাঠামো) আদর্শ পদ্ধতি নয়। কিন্তু বাংলাদেশের ঘরোয়া প্রতিযোগিতা এমনভাবেই সাজানো। এখন ডিপিএলের সময়। আমাদের উদ্বোধনী জুটি অনেক দিন ধরেই সমস্যা তৈরি করছে।’’
সিলেটে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত দুই ইনিংস মিলে করেছেন ১০০ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে উইকেটে সেট হয়েও ফিরেন ৬০ রানে। এভাবে উইকেট বিলিয়ে দেওয়ায় তাকে নিয়ে হয়েছে সমালোচনা। অন্য ব্যাটাররাও পারেননি নিজেদের মেলে ধরতে।
বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতা নিয়ে সিমন্স বললেন, ‘‘চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও রান করেছে সে (শান্ত)। একজন ব্যাটারের উন্নতি অনেকটাই নির্ভর করে সে মাঠের বাইরে কীভাবে কাজ করছে। আমরা সবাই জানি, প্রথম ইনিংসে ইউনিট হিসেবে আমরা ঠিকঠাক ব্যাটিং করতে পারিনি। নিজেদেরই সমস্যায় ফেলেছি। আমরা ইতিবাচক টেস্ট ক্রিকেট খেলতে চাই। শুধু ঠেকিয়ে ঠেকিয়ে ২০০ রান করার চিন্তা নেই। আপনারা বারবার বলছেন, পরিবর্তনের কথা। আমরা যেখানে যেতে চাই, তার জন্য কিছুটা সময় লাগবেই।’’
পিএসএলের জন্য দ্বিতীয় টেস্টে নেই নাহিদ রানা। সিলেটে প্রথম ইনিংসে ৩ উইকেট পাওয়া এই পেসারকে নিয়ে সিমন্স বললেন, ‘‘আমরা শক্তি হারিয়েছি মনে হয় না। আমরা গতি হারিয়েছি। এখানে রানার মতো জোরে বল করতে পারে, এমন কেউ নেই। স্কিলটা আছে, বিশেষ করে চট্টগ্রামে আমরা যেভাবে বল করি। এখানকার উইকেট সব সময় ধীরগতির হয়। আশা করি, আমরা টার্ন পাব আর পেসাররা তাঁদের স্কিল দিয়ে কাজটা করবে। আমাদের পেসারদের স্কিল আছে। হাসান পাকিস্তানে গিয়ে পাঁচ উইকেট নিয়েছে, যে জায়গাটা এখানকার চেয়ে খুব বেশি আলাদা নয়।’’
নাহিদের জায়গায় স্পিনার তানভীর আহমেদ ডাক পেয়েছেন দ্বিতীয় টেস্টে। এজন্যই হয়তো চট্টগ্রামে টার্ন চাইলেন সিমন্স। পেসার না স্পিনারের ওপর বেশি আস্থা রাখা হবে সেটা নিশ্চিত না করলেও জিম্বাবুয়ের ২০ উইকেট নিতে আশাবাদী সিমন্স, ‘‘আমার মনে হয় টেস্টে আপনার পাঁচজন বোলার দরকার। আমাদের মিরাজের মতো অলরাউন্ডার আছে। মনে হয় না ওই দিকে যাব (চার বোলার)। ২০ উইকেট নিতে আপনার অবশ্যই পাঁচজন বোলার লাগবে।’’