Beta
শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

সেপটিক ট্যাংকে পাওয়া দেহাবশেষ এমপি আনারের, ধারণা হারুনের

কলকাতা থেকে ঢাকায় ফিরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন হারুন অর রশীদ। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
কলকাতা থেকে ঢাকায় ফিরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন হারুন অর রশীদ। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
[publishpress_authors_box]

কলকাতায় সঞ্জীবা গার্ডেন্সের সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার হওয়া দেহাবশেষ এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারেরই বলে মনে করছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

বাংলাদেশ ও ভারতে গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের বক্তব্য এবং পারিপার্শ্বিক অন্যান্য ঘটনা বিবেচনায় নিয়েই এই ধারণার কথা জানিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার বিকালে কলকাতা থেকে ঢাকায় ফিরে বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন হারুন।

এখন পর্যন্ত উদ্ধার হওয়া দেহাবশেষ ডিএনএ পরীক্ষার ফল জানা যায়নি। হারুন বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে মাংসের টুকরোগুলোর ডিএনএ টেস্ট করে কলকাতা পুলিশ তথ্য জানাবে।

আনার হত্যার তদন্তকাজ সফল হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, যেসব তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করতে কলকাতা গিয়েছিলাম, তা পাওয়া গেছে। আলামত উদ্ধারসহ বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করায় আনার হত্যার তদন্ত অনেকটাই এগিয়েছে। ফরেনসিক রিপোর্ট পেলেই তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।

তিনি বলেন, আনোয়ারুল আজীম আনারকে গত ১৩ মে কলকাতার মাটিতে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় বাংলাদেশে একটি মামলা হয়েছে, কলকাতায় হয়েছে হত্যা মামলা। এরই মধ্যে তিনজন গ্রেপ্তারও হয়েছে।

“আমাদের কাছে গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করা এবং ঘটনাস্থলের প্রমাণগুলো দেখতেই সেখানে গিয়েছিলাম।”

ভিকটিমের লাশ বা লাশের অংশবিশেষ না পাওয়া গেলে তদন্তকারী কর্মকর্তার সুরতহাল, ভিসেরা ও মেডিকেল রিপোর্ট দিতে বেগ পেতে হয়। এসব না পেলে মামলা নিষ্পত্তি করাও কঠিন হয়ে যায় উল্লেখ করে হারুন অর রশীদ বলেন, “আমরা সেখানে গিয়ে বাংলাদেশে গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের দেওয়া তথ্য ক্রস এক্সামিনেশন করেছি। এছাড়া কলকাতায় গ্রেপ্তার হওয়া আসামি যে তথ্য দিয়েছে তাও যাচাই-বাছাই করেছি। কলকাতার সিআইডিকে সঙ্গে নিয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং তথ্য-উপাত্ত মিলিয়ে দেখার চেষ্টা করেছি।”

কলকাতা পুলিশকে স্যুয়ারেজ লাইন ও সেপটিক ট্যাংক দেখার জন্য অনুরোধ করেছিলেন জানিয়ে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখার এই কর্মকর্তা বলেন, “সেখান থেকেই ভিকটিমের মরদেহের কিছু টুকরো উদ্ধার করা গেছে। এখন ভারতীয় পুলিশ ফরেনসিক ও ডিএনএ পরীক্ষা করে এ বিষয়ে চূড়ান্ত তথ্য জানাবে।

“আমরা প্রাথমিকভাবে মনে করি, স্বাভাবিক ফ্লাশের মাধ্যমে মাংসগুলো সেখানে যায়নি। তাই আমরা মনে করছি, মরদেহের খণ্ডাংশগুলো এমপি আনারের।”

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনার ১২ মে কলকাতায় গিয়েছিলেন। পরদিন তাকে সঞ্জিবা গার্ডেন্সের ওই ফ্ল্যাটে হত্যা করা হয় বলে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের তথ্য।

এরপর গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ লাগোয়া রাজ্যটির বনগাঁ থেকে গ্রেপ্তার করা হয় জিহাদ হাওলাদার নামে এক বাংলাদেশিকে। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জিহাদ জানিয়েছে এমপি আনারের লাশের টুকরো ফেলা হয়েছিল ভাঙ্গড়ের কৃষ্ণমাটি এলাকায়।

এরপর লাশের অংশবিশেষের সন্ধান পেতে গত তিন ধরে দফায় দফায় কৃষ্ণমাটি এলাকার জিরান গাছা বাগজোলা খাল ও সংলগ্ন এলাকায় তল্লাশি চালানো হয়। কিন্তু খুঁজে পাওয়া যায়নি কিছু।

ঢাকা থেকে ডিবি কর্মকর্তারা কলকাতায় পৌঁছনোর পর সঞ্জিবা গার্ডেন্সে তল্লাশি জোরদারের সিদ্ধান্ত হয়।

বলা হচ্ছে, কলকাতার অভিজাত এলাকায় সঞ্জিবা গার্ডেন্সের ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশি শাহীন। তার পরিকল্পনায়ই এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। হত্যা পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী হিসাবে পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা শিমুল বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। তিনি আমানুল্লাহ নামে ভারতে গিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে এসেছিলেন।

আনোয়ারুল আজিম আনার ১৯৬৮ সালের ৩ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তার বাড়ি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার মধুগঞ্জ বাজার এলাকায়।

পেশায় ব্যবসায়ী আনার আওয়ামী লীগের কালিগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ঝিনাইদহ-৪ আসন থেকে ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে পরপর তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত