Beta
শনিবার, ৫ অক্টোবর, ২০২৪
Beta
শনিবার, ৫ অক্টোবর, ২০২৪

মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের রায় স্থগিতে আবেদন, শুনানি পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে

supreme-court-bangladesh
Picture of প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

রবিবার আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদনটি জমা দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুল আলম।

একটি রিট আবেদনের চূড়ান্ত রায়ে গত ৫ জুন কোটা বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট। 

রাষ্ট্রপক্ষ তার বিরুদ্ধে করা আপিলের আবেদনে রায়ের ওপর সর্বোচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ চেয়েছে।

তবে রাষ্ট্রপক্ষের আবদেনে হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেননি চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম। তিনি এবিষয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য আগামী ৪ জুলাই দিন ঠিক করে দিয়েছেন।

আদালতে আপিল আবেদনের পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। রিট আবেদনকারীদের পক্ষে মোতাহার হোসেন সাজু শুনানি করেন।

এদিকে রায় স্থগিতে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রতিক্রিয়ায় অন্যতম রিট আবেদনকারী অহিদুল ইসলাম তুষার বলেছেন, তারা আইনি লড়াই চালিয়ে যাবেন।

তিনি সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “আমরা তো আমাদের পক্ষে হাইকোর্টের রায় পেয়েছি। মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পেরেছি যে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করেছে। তবে আমরা এখনও কোনও ফাইল পাইনি। সেটা পেলে আমরা আইনি লড়াই করব।”

মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুল হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের এই পদক্ষেপে হতাশা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার ক্ষমতায়, সুপ্রিম কোর্টেও এটা স্যাটেলড ম্যাটার, সংবিধানও সমর্থন করেছে, মহামান্য হাইকোর্ট রায়ও দিয়েছে। তারপরও কেন তারা আবেদন করল, এটা দুঃখজনক ব্যাপার।

“এখন দেখা যাক, তারা তাদের মতো করে লড়ুক, আমরা আমাদের মতো করে লড়ব।”

এদিকে কোটা পুনর্বহালে হাইকোর্টের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় রবিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে। সেই বিক্ষোভ থেকে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে সব কোটা বাতিলের দাবি তোলা হয়।

চাকরিতে কোটা সংস্কারে একদল শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পাঁচ বছর আগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কোটা বাতিলের ওই পরিপত্র জারি করেছিল।

তার আগে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষিত ছিল; এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ।

কোটা থাকায় মেধাবীরা বঞ্চিত হচ্ছে- এই দাবি তুলে কোটাবিরোধী আন্দোলন শুরুর পর ২০১৮ সালের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে সব কোটা তুলে দেওয়ার ঘোষণা দেন।

এরপর মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয় কোটা পদ্ধতি পর্যালোচনা করে প্রতিবেদন দিতে। তারপরই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কোটা সংস্কার করে প্রজ্ঞাপন দিয়েছিল।

২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করার বিষয়ে পরিপত্রে বলা হয়, নবম গ্রেড (পূর্বতন প্রথম শ্রেণি) এবং দশম থেকে ত্রয়োদশ গ্রেডের (পূর্বতন দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হবে।

আর নবম গ্রেড (পূর্বতন প্রথম শ্রেণি) এবং দশম থেকে ত্রয়োদশ গ্রেডের (পূর্বতন দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হলো।

মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ কোটা নবম গ্রেড (পূর্বতন প্রথম শ্রেণী) ও দশম গ্রেড থেকে ত্রয়োদশ গ্রেড (পূর্বতন দ্বিতীয় শ্রেণি) বাতিল করে (তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি) ১৪ থেকে ২০তম গ্রেডে রাখা হয়।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সেই পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে ২০২০ সালে রিট আবেদন করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি তুষারসহ সাতজন শিক্ষার্থী।

সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০২১ সালে রুল জারি করে হাইকোর্ট। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, পাবলিক সার্ভিস (পিএসসির) চেয়ারম্যানসহ ৬ জনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

দীর্ঘ শুনানি শেষে ৫ জুন রুলটি যথাযথ ঘোষণা করে রায় দেয় বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত