Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ জুন, ২০২৫
Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ জুন, ২০২৫

যদিও বিশ্ব প্লাস্টিকে ম্রিয়মাণ

বিশ্বব্যাপী এ পর্যন্ত উৎপাদিত সাতশ কোটি টন প্লাস্টিক বর্জ্যের মধ্যে পুনর্ব্যবহৃত হয়েছে ১০ শতাংশেরও কম। প্রতি বছর লাখ লাখ টন প্লাস্টিকের বর্জ্য পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ে। উন্নত দেশগুলো প্লাস্টিক বর্জ‍্য হাজার হাজার কিলোমিটার দূরের দেশে পাঠিয়ে দেয়। সেখানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এগুলি পুড়িয়ে দেওয়া হয় বা ফেলে দেওয়া হয়। শুধু বাছাই ও প্রক্রিয়াকরণের সময় প্লাস্টিক বর্জ্যের বার্ষিক ক্ষতির আনুমানিক মূল‍্য ৮০-১২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সিগারেটের টুকরা – যার ফিল্টারে ক্ষুদ্র প্লাস্টিকের তন্তু রয়েছে – পরিবেশে পাওয়া সবচেয়ে সাধারণ ধরনের প্লাস্টিক বর্জ্য।

১,৭২,০০০ মাউন্ট এভারেস্ট!

মাউন্ট এভারেস্ট। পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের একটি।
0 ফুট
প্লাস্টিক ওশান্সের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে প্রতিবছর মানুষের ব্যবহৃত প্লাস্টিক ব্যাগের সংখ্যা ৫০ হাজার কোটি। ধরা যাক, একটি প্লাস্টিক ব্যাগের গড় দৈর্ঘ্য ১২ ইঞ্চি। তাহলে এক বছরে ব্যবহৃত ব্যাগের দৈর্ঘ্য যা দাঁড়ায় তা মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতার প্রায় ১ লাখ ৭২ হাজার গুণ।
0 কোটি

একবার ব্যবহার উপযোগী প্লাস্টিক কী

প্লাস্টিকের জগতে বড় অংশই হচ্ছে একবার ব্যবহার উপযোগী বা সিংগেল ইউজ প্লাস্টিক (এসইউপি)। ২০১৮ সালে কলিন্স ডিকশনারির ভোটে ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ হয় ‘সিংগেল ইউজ’। এর অর্থ বলা ছিল, একবার ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করা সামগ্রী।

জাতিসংঘের সংজ্ঞা বলছে, কোনো প্লাস্টিক যদি উচ্চ ঘনত্বের পলিইথিলিন (এইচডিপিই), কম ঘনত্বের ইলিইথিলিন (এলডিপিই), পলিইথিলিন টেরেফথালেট (পিইটিই), পলিস্টিরিন (পিএস), পলিপ্রপাইলিন (পিপি) অথবা এক্সপ্যান্ডেড পলিস্টিরিন (ইপিএস)-এর পলিমার হয় তবে সেসব অবশ্যই শুধু একবার ব্যবহারযোগ্য পণ্য।

এমনকি টুথব্রাশ অনেকদিন ও একাধিকবার ব্যবহার করা গেলেও তা একবার ব্যবহারযোগ্য পণ্যের কাতারেই পড়বে।

স্কটিশ সংসদেও একবার ব্যবহারযোগ্য ব‍্যাগের সংজ্ঞা অনুমোদিত হয়েছে। পাতলা বা ৪৯ মাইক্রনের বেশি নয় এমন পুরুত্বের প্লাস্টিক অথবা হাতল ছাড়া ৪৩৯ মিলিমিটার দৈর্ঘ্য ও ৪০৪ মিলিমিটার প্রস্থের প্লাস্টিক হলে তা একবার ব্যবহারযোগ্য ব‍্যাগ।

দেশে নিষিদ্ধ নয় একবার ব্যবহারের প্লাস্টিক

২০০২ সালের জানুয়ারিতে ঢাকা শহরে পলিথিনের বিরুদ্ধে প্রথম পদক্ষেপ ঘোষণা হয়। পরে ওই বছর ২ মার্চ থেকে সারাদেশে পলিথিনের ব্যবহার নিষিদ্ধ হয় ।

বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে বলা আছে, কোনো পলিথিন শপিং ব্যাগ বা পলিইথিলিন বা পলিপ্রোপিলিনের তৈরি যে কোনও সামগ্রী পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হলে সরকারি গ্যাজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা সারা দেশে বা কোনো নির্দিষ্ট এলাকায় এ ধরনের সামগ্রীর উৎপাদন, আমদানি, বাজারজাত, বিক্রয়, বিক্রয়ের জন্য প্রদর্শন, মজুদ, বিতরণ,বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পরিবহন বা ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার নির্দেশ জারি করা যাবে।

এই আইনে পলিথিন শপিং ব্যাগ বলতে পলিইথিলিন, পলিপ্রোপিলিন বা এর কোনো যৌগ থেকে তৈরি ব্যাগ, ঠোঙ্গা বোঝানো হয়েছে।

বাংলাদেশে পলিথিনের শপিং ব্যাগ নিষিদ্ধ করা হলেও এই আইনে সুনির্দিষ্ট করে একবার ব‍্যবহারের উপযোগী প্লাস্টিকের কোনও সংজ্ঞা দেয়া হয়নি। এমনকি আইনে একবার ব্যবহার্য পলিথিনও সুনির্দিষ্টভাবে নিষিদ্ধ করা হয়নি।

যেভাবে এল প্লাস্টিক

ইংল্যান্ডের নর্থউইচের একটি রাসায়নিক কারখানায় দুর্ঘটনাক্রমে পলিইথিলিন, সবচেয়ে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত প্লাস্টিক, তৈরি হয়। যদিও পলিইথিলিন আগে ছোট ছোট ব্যাচে তৈরি করা হয়েছিল, এটি ছিল প্রথম শিল্পগতভাবে ব্যবহারযোগ্য উপাদানের সংশ্লেষণ। এর সম্ভাবনা দেখে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সেনাবাহিনী গোপনে এটি ব্যবহার শুরু করে।

১৯৩৩
সুইডিশ কোম্পানি সেলোপ্লাস্ট এক-টুকরা পলিইথিলিন শপিং ব্যাগের পেটেন্ট নেয়। ইঞ্জিনিয়ার স্টেন গুস্তাফ থুলিনের ডিজাইন করা প্লাস্টিক ব্যাগ দ্রুত ইউরোপে কাপড় এবং প্লাস্টিককে প্রতিস্থাপিত করতে শুরু করে।
১৯৬৫
এতদিনে ইউরোপে ব্যাগের বাজারের ৮০ শতাংশ চলে গেছে প্লাস্টিক ব‍্যাগের দখলে। এখন তা ছড়িয়ে পড়তে শুরু করল যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে। প্লাস্টিক কোম্পানিগুলি কাগজ এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য ব্যাগের চেয়ে তাদের একবার ব্যবহারযোগ্য পণ্যকে উচ্চমানের হিসাবে বাজারজাত করতে শুরু করে।
১৯৭৯
যুক্তরাষ্ট্রের দুই বৃহত্তম সুপারমার্কেট চেইন সেইফওয়ে ও ক্রোগার প্লাস্টিক ব্যাগ ব‍্যবহার শুরু করে। তখন পর্যন্ত ক্রেতারা এই ব‍্যাগ পুরোপুরি মেনে নিতে পারেননি। তবু একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক ব্যাগ অন‍্যান‍্য বিকল্পের চেয়ে সস্তা, আরও বেশি দোকান সেইফওয়ে ও ক্রোগারের অনুসরণ করে প্লাস্টিক ব‍্যাগ ব‍্যবহার করতে শুরু করে। এই দশকের শেষ নাগাদ প্লাস্টিক ব্যাগ সারা বিশ্বে কাগজের ব্যাগকে প্রায় পুরোপুরি হঠিয়ে দেবে।
১৯৮২
নাবিক ও গবেষক চার্লস মুর আবিষ্কার করলেন গ্রেট প্যাসিফিক গার্বেজ প্যাচে প্রচুর পরিমাণে প্লাস্টিক বর্জ্য জমে আছে। এই বর্জ‍্য শুধু সমুদ্রের প্রাণীদের জীবনকেই হুমকির মুখে ফেলছে না। বরং প্লাস্টিক আবর্জনার এই বিশাল সংগ্রহটি একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পণ্যের দীর্ঘস্থায়ী ও ক্ষতিকারক প্রভাবকেই চোখে আঙুল দিয়ে দেখায়।
১৯৯৭
বন্যার সময় ড্রেনেজ ব‍্যবস্থা অকার্যকর করতে প্লাস্টিক ব‍্যাগ বড় ভূমিকা রাখছে- এটা জানার পর বিশ্বের প্রথম দেশ হিসাবে পাতলা প্লাস্টিক ব্যাগ নিষিদ্ধ করল বাংলাদেশ। অন্যান্য দেশগুলি এরপর বাংলাদেশকে অনুসরণ করতে শুরু করে।
২০০২
বিশ্বব্যাপী প্রতি মিনিটে ১০ লক্ষ প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহার করা হয়।
২০১১

জুলাই ২০১৮ পর্যন্ত জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি (ইউএনইপি) পর্যালোচনা কর দেখে ১৯২টি দেশের মধ্যে ১২৭টিতে প্লাস্টিক ব্যাগের সমস্যা সমাধানে আইন তৈরি হয়েছে।

২০১৮

নিষিদ্ধ : তবু মাথাপিছু ২২ কেজি

১৯৮২ সালে বাংলাদেশে পলিথিনের চল শুরু হয়। চটের ব্যাগের পুরনো অভ্যাস ত্যাগ করে আধুনিক পলিথিনে দ্রুত সবাই অভ্যস্ত হয়ে যায়।

তবে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন (১৯৯৫) অনুসারে ২০০২ সালের ১ মার্চ থেকে তৎকালীন সরকার বাংলাদেশে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। ঘোষণায় বলা হয়েছিল, “পলিথিনের শপিং ব্যাগ বা অন্য যে কোনো সামগ্রী,যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর, সেসব উৎপাদন, আমদানি, বাজারজাতকরণ, বিক্রয়, বিক্রয়ের জন্য প্রদর্শন, মজুদ,পরিবহন ইত্যাদি নিষিদ্ধ।”

এরপরও ৮০ শতাংশ মানুষ প্রতিদিন পলিথিন ও প্লাস্টিক সামগ্রী ব্যবহার করছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, দেশে প্রতিদিন ২৪ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি হচ্ছে।

নিষিদ্ধ ও পরিবেশের জন্য হুমকি পলিথিন শপিং ব্যাগের উৎপাদন, বিপণন ও ব্যবহার বন্ধে পরিচালিত অভিযানে গত পাঁচ বছরে ৬ কোটি টাকার বেশি জরিমানা করা হয়েছে।
২০০২ সালে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর থেকে ৯৩১ টন পলিথিন জব্দ করা হয়েছে। ৫২টি কারখানা উচ্ছেদ হয়েছে। এই সময়ে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে ১৭০ জনকে; জব্দ করা হয়েছে দুই হাজার টনের বেশি মালামাল।

২০১০ সালের জুলাই থেকে পরিবেশ অধিদপ্তরের এনফোর্সমেন্ট তৎপরতার অধীনে নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদনকারী কারখানাগুলোকে উচ্ছেদ এবং মালিকের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করা হচ্ছে।

সংবাদমাধ্যমে এ বছর জানুয়ারিতে আসা তথ্য অনুসারে, প্রায় তিন হাজার কারখানায় দৈনিক এক কোটি ৪০ লাখ নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদিত হচ্ছে। মাঝারি ও ছোট আকারের এসব কারখানাগুলোর অধিকাংশই রয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।

বেসরকারি সংস্থা সিপিডির গবেষণা অনুসারে, ২০০৫ সালে ঢাকায় মাথাপিছু প্লাস্টিকের ব্যবহার ছিল ৯ কেজি ২০০ গ্রাম; যা ২০২২ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২ কেজি ২৫০ গ্রাম।

বিশ্বে মোট প্লাস্টিক দূষণের প্রায় ৩ শতাংশই হচ্ছে বাংলাদেশে। সাগরে প্লাস্টিক দূষণে শীর্ষে থাকা বিশ্বের ১০টি দেশের তালিকায় আছে বাংলাদেশও।

কোনো একক দেশের পক্ষে প্লাস্টিক দূষণ কমানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই ‘এন্ড প্লাস্টিক পলিউশন: টুওয়ার্ডস অ্যান ইন্টারন্যাশনাল লিগ্যালি বাইন্ডিং ইনস্ট্রুমেন্ট’ শিরোনামে ২০২২ সালে জাতিসংঘের অধীনে আলোচনা শুরু হয়। বৈশ্বিক চুক্তির সমর্থক দেশ হিসেবে বাংলাদেশও যোগ দেয়। মোট ১৭৫টি দেশ এই চুক্তিতে সায় দেয় তখনই।

২০২৪ সালের এপ্রিলে কানাডার অটোয়াতে জাতিসংঘের পরিবেশ সম্মেলনে বাংলাদেশ থেকে বলা হয়, উজান ও প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে আসা প্লাস্টিক বর্জ্যের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশ। ২০২৪ সাল শেষ হওয়ার আগেই এই আন্তর্জাতিক চুক্তির চূড়ান্ত অনুলিপি হওয়ার কথা রয়েছে।

সাগরে প্লাস্টিক দূষণে শীর্ষ ১০ দেশ

ফিলিপিন্স

৩৬.৩৮%

ভারত

১২.৯২%

মালয়েশিয়া

৭.৪৬%

চীন

৭.২২%

ইন্দোনেশিয়া

৫.৭৫%

ব্রাজিল

৩.৮৬%

ভিয়েতনাম

২.৮৮%

বাংলাদেশ

২.৫২%

থাইল‍্যান্ড

২.৩৩%

নাইজেরিয়া

১.৯%

সুত্র : https://ourworldindata.org (২০১৯)

প্লাস্টিক ব্যাগের বিকল্প

আরাফাত জুট

(ছবিতে ক্লিক করুন)
আরাফাত জুট তৈরি করছে পাট এবং কটন সুতার মিশ্রনে তৈরি করছে বাজারের থলে। পাট ও কটন সুতার ফেব্রিক তৈরি করে তা দিয়ে ব্যাগ তৈরি হচ্ছে নিজস্ব কারখানায়। বিভিন্ন জায়গা থেকেই এখন অর্ডার আসছে বলে জানান আরাফাত জুটের স্বত্তাধিকারী মুর্শিকুল ইসলাম। ব্যাগের বিভিন্ন আকার আকৃতির উপর নির্ধারণ করে দাম ১৫-৮০ টাকা পর্যন্ত পড়ে। এই ব্যাগ ব্যবহার করা যাবে অনেকদিন।

ক্রিস্টাল বায়োটেক

(ছবিতে ক্লিক করুন)
ক্রিস্টাল বায়োটেক তৈরি করছে এক ধরণের ব্যাগ, যা দেখতে পলিথিনের মত হলেও আসলে তা পলিথিন না। ভূট্টার স্টার্চ থেকে তৈরি হচ্ছে এই ব্যাগ। রাজশাহীতে কারখানা তৈরি করে এখন বাণিজ্যিক ভাবে তৈরি হচ্ছে এই ব্যাগ। পলিথিনের মত যেকোন জায়গায় ব্যবহার করা যায় এই ব্যাগ। এই ব্যাগের দাম ২টাকা থেকে শুরু করে ২০ টাকা পর্যন্ত হয়।

শালবৃক্ষ

(ছবিতে ক্লিক করুন)
মেটেরিয়াল ডেভলপার উদ্যোগ শালবৃক্ষ। তারা সবজির উচ্ছিষ্ট অংশ দিয়ে একটি ফেব্রিক তৈরি করেছে, যার নাম পলকা। এই উপাদান দিয়ে কাপড়ের মত দেখতে ব্যাগ তৈরি করা যাবে। পাশাপাশি পাটের কাপড় ও ব্রাউন কাগজের উপর আবরণ দেওয়া যাবে যাতে তা পলিথিনের মত পানিরোধক হয়। সুতার সঙ্গে মিশিয়ে কিছুটা পলিথিনের মত দেখতে পাতলা ব্যাগও তৈরি করা যাবে।

বাংলাদেশে কোন পলিথিন বেআইনি

পরিবেশ অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয় থেকে জানা যায়, পলিথিন ব্যাগ উৎপাদন নিষিদ্ধ হলেও ৫৫ মাইক্রনের চেয়ে বেশি পলিথিনজাতীয় পণ্য বা মোড়ক উৎপাদনের অনুমোদন রয়েছে। আর এটাই সুযোগ করে দিচ্ছে পলিথিন ব্যবসায়ীদের।

মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানাচ্ছে, ৫৫ মাইক্রনের বেশি পলিব্যাগ উৎপাদনের অনুমতি পাওয়া কারখানা মালিকরা তাদের কাঁচামাল অন্যদের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে। সেইসঙ্গে বিভিন্ন প্লাস্টিক পণ্য তৈরির পর যে কাঁচামাল থেকে যায় সেগুলোও ব্যবহার করা হয় পলিথিন ব্যাগ তৈরিতে।

তবে মন্ত্রণালয়ের এক সূত্র সকাল সন্ধ্যাকে জানায়, এর আগে বিভিন্ন সময়ে পলিথিনের বিরুদ্ধে অভিযান হলেও রক্ষা হয়নি। অভিযান বন্ধ হলেই ফের শুরু হয়। কিন্তু এবার পরিবেশ মন্ত্রণায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পলিথিন উৎপাদন, বিপণন ও ব্যবহার নিষিদ্ধে সব ধরনের পদক্ষেপ নেবে।

চাই বায়ো প্লাস্টিক

সব ধরনের পণ‍্য পাট বা সুতার ব্যাগে বহন করা সম্ভব। কিন্তু প্যাকেজিংয়ে পাট/সুতা ব‍্যবহার সম্ভব নয়। পাতলা সুতাবা পাতলা পাট ব্যাগের দাম হতে পারে ২০-২৫ টাকা। তবে এগুলো পুনরায় ব্যবহারের উপযোগী নয়। পুনরায় ব্যবহার উপযোগী ব্যাগের খরচ পড়বে অন্তত ৫০-৬০ টাকা।

পাট/সুতা কোনোটিই মাছ-মাংস বহন করার উপযোগী নয়। এগুলোর বিকল্প ব্যাগ হতে পারে বায়ো প্লাস্টিক। ১০ কেজি ওজন বহন করতে পারবে এমন ব্যাগের দাম পড়বে ৩-৪ টাকা। যা প্রায় পলিথিনের কাছাকাছি ব‍্যয়।

তবে বাংলাদেশে এখন শুধু দুটি কারখানায় বায়ো প্লাস্টিক উৎপাদন হয়, যা দিয়ে চাহিদার মাত্র ১০% পূরণ করা সম্ভব।

লেখা : জাকিয়া আহমেদ, আইরিন সুলতানা, অনিক রায়