চট্টগ্রাম মহানগরীর অন্তত পাঁচটি মোড়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করতে যাচ্ছে পুলিশ। ইউনিফর্ম পরেই পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)।
ছাত্র-গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের। এরপর দেশজুড়ে শুরু হয় নানা অরাজকতা। থানাগুলোয় হামলা, আগুন, হত্যাসহ নানা সহিংসতার পর পুলিশশূন্য হতে শুরু করে দেশের বিভিন্ন এলাকা।
কর্মস্থলসহ নিজেদের নিরাপত্তার দাবিতে কর্মবিরতিতে যান পুলিশ সদস্যরা। যার পরিপ্রেক্ষিতে ভেঙে পড়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা ও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। এ অবস্থায় মাঠে নামে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সড়ক-মহাসড়কে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব নেয় তারা। চট্টগ্রামেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে যাওয়ায় মঙ্গলবার থেকে এই দায়িত্ব পালন সম্ভব নয় বলে জানায় চট্টগ্রামের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থীরা।
রবিবার সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে বসে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন এবং চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ। নগরের দামপাড়া পুলিশ লাইনসের কমিশনার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে বৈঠক শেষে সিএমপি কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বিফ্রিং করেন।
পুলিশ কমিশনার বলেন, “সোমবার থেকে নগরের গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি মোড়ে আমাদের ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। তাদের সঙ্গে প্রতিটি পয়েন্টে থাকবেন একজন করে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি। প্রথমদিকে আগ্রাবাদ, দেওয়ানহাট, টাইগারপাস, লালখানবাজার, ওয়াসা মোড়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাজ শুরু করবে।”
শিক্ষার্থীদের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের প্রশংসা করে তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “সোমবার থেকে আমরা পোশাকে বের হবো। তখন যদি তোমরা আমাকে ধাওয়া করো তাহলে কিন্তু আমি চলে যাব। গত পরশুও এক পুলিশ সদস্যকে মারধর করা হয়েছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এসব শিক্ষার্থীদের কাজ নয়। এসব বিষয়ে খুব সাবধান হতে হবে।”
বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম বলেন, “তোমাদের তারুণ্য এবং মেধাকে আমরা সম্মান জানাই। এখন তোমাদের দাবি করার সময় না। তোমাদের দাবি তোমরা আদায় করে নিয়েছ। তাই এখন নতুন করে কোনও দাবি উত্থাপন না করে সবার উচিত সুন্দরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত রাষ্ট্রটিকে গঠন করা। এখন আমাদের প্রধান প্রায়োরিটি আইনশৃঙ্খলা।”
শিক্ষার্থীদের নিয়েই পুলিশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে জানিয়ে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, “দ্রুত চট্টগ্রামের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পুলিশকে কাজে ফেরাতে হবে। পুলিশের মধ্যে যে ভয় তা শিক্ষার্থীদের দূর করতে হবে।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ বলেন, “প্রতিটি থানায় দল গঠন করা হচ্ছে। সেই অনুযায়ী কাজ করা হবে। পুলিশের নিরাপত্তার জন্য কাজ করবে শিক্ষার্থীরা।”