Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

কক্সবাজারে থানায় ফিরছে পুলিশ, সেবা স্বাভাবিকের চেষ্টা

কক্সবাজার সদর মডেল থানার সামনে সেনাবাহিনীর পাহারা। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
কক্সবাজার সদর মডেল থানার সামনে সেনাবাহিনীর পাহারা। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
Picture of আঞ্চলিক প্রতিবেদক, কক্সবাজার

আঞ্চলিক প্রতিবেদক, কক্সবাজার

ছাত্র-গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর দেশের অন্য এলাকার মতো হামলা ও আগুনের শিকার হয় কক্সবাজারের দুইটি থানা। এর জের ধরে জেলার ৯ উপজেলার সব থানা, পুলিশ ফাঁড়ি এবং তদন্ত কেন্দ্র ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যান পুলিশ সদস্যরা। ফলে জেলা জুড়ে তৈরি হয় পুলিশ শূন্যতা।

টানা চার দিন পর সেই পরিস্থিতির পরিবর্তন হতে শুরু করেছে। ধীরে ধীরে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন পুলিশ সদস্যরা।

এর আগে গত বুধবার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ সদস্যদের নিজ নিজ কর্মস্থলে ফেরার নির্দেশ দিয়েছিলেন নতুন আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম। শুরুতে সেই আহ্বানে তেমন সাড়া না মিললেও শুক্রবার কক্সবাজারের কয়েকটি থানায় পুলিশ সদস্যদের যোগ দিতে দেখা গেছে।

এসব থানার নিরাপত্তায় আনসার সদস্যের পাশাপাশি কাজ করছেন সেনা সদস্যরাও।

বিকালে কক্সবাজার সদর মডেল থানার নিরাপত্তা পরিস্থিতি দেখতে যান লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানভীর হোসেন।

তিনি জানান, কক্সবাজারের সব থানার কার্যক্রম এখন থেকে স্বাভাবিক। জনগণকে সব ধরনের সেবা দিতে পুলিশ সদস্যরা কাজ শুরু করেছেন। প্রতিটি থানায় আগে থেকেই নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন আনসার সদস্যরা। এখন তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন সেনা সদস্যরাও।

এক প্রশ্নের উত্তরে লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানভীর বলেন, “এখন থেকে পর্যটকরা কক্সবাজার ভ্রমণে নিরাপদ। পর্যটক ও পর্যটক সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তায় সেনা সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।”

গত ৫ আগস্ট হামলায় কক্সবাজার সদর থানা প্রাঙ্গণে থাকা জব্দ করা দেড় শতাধিক মোটর সাইকেল, থানার চেয়ার, টেলিব, কম্পিউটার, গাড়িসহ সব কিছু পুড়িয়ে দেওয়া জয়। পুড়িয়ে দেওয়া মামলার সব নথিপত্রও। মালখানায় জব্দ থাকা আলামতও লুট করা হয়।

একই অবস্থা সদর থানার সামনের ট্রাফিক অফিসেও।

এরই মথ্যে কিছু গাড়ি ও মালামাল উদ্ধার করে শিক্ষার্থীরা ফেরতে এনেছেন বলে জানালেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানভীর।

তিনি বলেন, “এটা শতভাগ শিক্ষার্থীদের অধীনে হচ্ছে। তারা লুট করা মালামাল উদ্ধার করে সেনাবাহিনীর কাছে জমা দিচ্ছে। সেনাবাহিনী সেগুলো পুলিশকে হস্তান্তর করছে। শিক্ষার্থীদের আহ্বানে অনেকেই লুট করা মালামাল ফেরতও দিচ্ছেন।”

কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, কক্সবাজারে সদর ও ঈদগাঁও থানায় আগুন দেওয়া হয় এবং লুটপাট চালানো হয়। অন্য থানাগুলোয় হামলা হয়নি। শুক্রবার পর্যন্ত এসব থানায় ধীরে ধীরে ফিরছেন তাদের সহকর্মীরা।

তবে যোগ দেওয়ার পরেও ভয় কাটছে না বলে জানালেন দুই পুলিশ সদস্য। তারা বলছেন, থানায় যোগ দিতে সাদা পোশাকে এসেছেন। পথে কেউ চিনে ফেলে হামলা করে কিনা তা নিয়ে আতঙ্কে ছিলেন।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি মো. রাকিবুজ্জামান বলেন, “আইজিপি স্যার সবাইকে কাজে যোগ দিতে বলেছেন। সে নির্দেশে অনেকেই যোগ দিয়েছেন। কিন্তু ভেতরে যাওয়ার মত পরিস্থিতি নেই। সবকিছু এখনও এলোমেলো। ল্যাপটপ, কম্পিউটার, চেয়ার, টেবিল সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে। এজন্য থানায় কর্মরত পুলিশ সদস্যদের অনেকে যোগ দিতে পারছেন না।”

আপাতত পুলিশ সদস্য ছাড়া আর কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না বলেও জানালেন তিনি।

জেলা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, কক্সবাজার জেলায় থানাসহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রায় দেড় হাজার পুলিশ সদস্য দায়িত্বপ্রাপ্ত। ৫ আগস্টের পর হামলায় অন্তত ১০০ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

থানাগুলোয় কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে জানতে চাইলে জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত কোনও প্রতিবেদন তৈরি করা হয়নি। তবে হামলার শিকার থানাগুলোয় সবকিছু ঠিক করার চেষ্টা চলছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত