সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে তখন দেশজুড়ে চলছে বিক্ষোভসহ নানা কর্মসূচি। যা ঠেকাতে তৎকালীন সরকারের পক্ষ থেকে জারি করা হয় কারফিউ।
সেই কারফিউয়ের মধ্যেই ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের এক উপপরিদর্শকের গুলিতে নিহত হন কলেজছাত্র ইমাম হাসান তাইম। যার বাবাও পুলিশের একজন উপপরিদর্শক।
ইয়াম হাসান তাইম হত্যা মামলায় শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক শাহাদাৎ আলীকে আগেই গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সোমবার তাকে ১০ দিনের জন্য হেফাজতে নিতে ঢাকার মহানগর হাকিম মোশাররফ হোসেনের আদালতে আবেদন করেছিলেন তদন্ত কর্মকর্তা ডেমরা জোনাল টিমের এসআই মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
শুনানি শেষে বিচারক শাহাদাৎ আলীর ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
নিহত তাইম নারায়ণগঞ্জের সরকারি আদমজী নগর এম. ডব্লিউ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাবা মো. ময়নাল হোসেন ভূঁইয়া রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে উপপরিদর্শক হিসেবে কর্মরত।
গত ২০ আগস্ট তাইমের মা পারভীন আক্তার এই মামলা করেন। মামলায় ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ ইকবাল হোসেনসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়। মামলার অন্য আসামিরা হলেন এডিসি শাকিল মোহাম্মদ শামীম, এসি তানজিল আহমেদ, যাত্রাবাড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাকির হোসেন ও এসআই শাহাদাৎ আলী।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত ২০ জুলাই দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল ছিল। সেসময় তাইম তার দুই বন্ধুর সঙ্গে যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় চা খেতে যায়। সেখানে কিছু আন্দোলনকারী বিক্ষোভ করছিল। তখন ইকবাল হোসেন, শামীম ও তানজিল আহমেদের নির্দেশে জাকির হোসেনসহ অন্যরা বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট ও গুলি ছোড়ে।
এজাহারে বলা হয়েছে, “এতে প্রাণ ভয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা এলোপাতাড়ি ছোটাছুটি করতে থাকে। তাইম ও তার দুই বন্ধু লিটন চা স্টোরের ভেতর ঢুকে দোকানের সামনের সাটার টেনে দেয়। কিন্তু সাটারের নিচের দিকে আধা হাত পরিমাণ জায়গা খোলা ছিল। এসময় সেখানে অবস্থানকারীদের পুলিশ টেনে বের করে।
“জাকির হোসেন গুলির থেকে বাঁচতে চাইলে সবাইকে দৌড় দিতে বলে। তখন তাইম সবার আগে দৌড় দেয়। জাকির গুলি করে। বিনা চিকিৎসায় তাইম সেখানেই মারা যায়।”