Beta
বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫

বাংলাদেশ নিয়ে ট্রাম্পের বক্তব্য যে চোখে দেখছে সরকার

ধর্মীয় সহাবস্থান নিশ্চিত করাসহ আট দফা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে শনিবার ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করে সংখ্যালঘু ঐক্য মোর্চা। ছবি : জীবন আমীর
ধর্মীয় সহাবস্থান নিশ্চিত করাসহ আট দফা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে শনিবার ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করে সংখ্যালঘু ঐক্য মোর্চা। ছবি : জীবন আমীর
[publishpress_authors_box]

বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যে গুরুত্ব দিচ্ছে না অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যেই জিতুক না কেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গুণে বাংলাদেশেরও কোনও সমস্যা হবে না বলে মনে করেন তার উপদেষ্টা শফিকুল আলম।

আগামী ৫ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হবে, তাতে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প এবং ডেমোক্রেট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের।

সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বৃহস্পতিবার সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ এক পোস্টে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের নিন্দা জানান।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর যে বর্বর সহিংসতা হয়েছে, আমি তার তীব্র নিন্দা জানাই। দেশটি একটি গোলযোগপূর্ণ দেশে পরিণত হয়েছে।”

তিনি প্রেসিডেন্ট থাকলে এমন ঘটনা ঘটত না বলে দাবি করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস সারাবিশ্বেই হিন্দুদের বিষয়ে উদাসীন।

এই প্রসঙ্গে ভারত এবং দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে নিজের সুসম্পর্কের কথাও বলেন ট্রাম্প।

সম্প্রতি বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগ নেতাদের পাশাপাশি হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকেও আক্রান্ত হয়। তা নিয়েই ওই মন্তব্য করেন ট্রাম্প।

তার ওই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে শনিবার কথা বলেন বলে জানিয়েছে বাসস।

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ট্রাম্পের বক্তব্যটি ‘সম্পূর্ণ রাজনৈতিক’ দাবি করে প্রেস সচিব বলেন, “বাংলাদেশে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ নয়জন সংখ্যালঘু মারা যাওয়ার বিষয়ে যে রিপোর্ট দিয়েছে, তা বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, এখানে রিলিজিয়াস মোটিভিশনের চাইতে পলিটিক্যাল অ্যাফিলিয়েশন বা অন্য কোনও কারণ ছিল।

“লবিস্টরা হয়ত এ বিষয়ে প্রভাব বিস্তার করেছে। বাংলাদেশে কোনও সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়নি।”

২০১৯ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ করেছিলেন প্রিয়া সাহা।

ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন নিয়ে ওয়াশিংটনে গিয়ে তার কাছে অভিযোগ করেছিলেন বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহা।

তখন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-নেতারা সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। তারা বলেছিলেন, প্রিয়া সাহা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশ্যে মিথ্যা ও কাল্পনিক অভিযোগ করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল বাংলাদেশে ওপর কেমন প্রভাব ফেলতে পারে, তা নিয়ে আলোচনার মধ্যে বিষয়টি নিয়েও প্রেস সচিব শফিকুল এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত অনুষ্ঠানে কথা বলেন বলে বাসস জানিয়েছে।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

শফিকুল আলম বলেন, মার্কিন নির্বাচনে কমলা হ্যারিস বা ডোনাল্ড ট্রাম্প যেই বিজয়ী হোক না কেন, তা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য কোনও সমস্যা তৈরি করবে না।

“প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে ডেমোক্রেট এবং রিপাবলিক দুই পার্টিরই সিনিয়র লিডারদের খুব ভালো সম্পর্ক। তার বন্ধু দুই দলের মধ্যেই আছে। সম্পর্ক অনেকখানি নির্ভর করে ব্যক্তিগত অ্যাটাচমেন্টের ওপর। ড. ইউনূস একজন গ্লোবাল লিডার। তাই মার্কিন নির্বাচনে কমলা হ্যারিস বা ডোনাল্ড ট্রাম্প যে-ই বিজয়ী হোক না কেন, আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনও চ্যালেঞ্জ হবে না।”

ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে প্রেস সচিব বলেন, “আমরা চাচ্ছি, তাদের সাথে আমাদের সুসম্পর্ক বজায় থাকুক। বাংলাদেশে যে অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থান হয়েছে, তাতে আমরা সারাবিশ্বের সাপোর্ট পেয়েছি। পতিত স্বৈরাচার সরকারের সাথে ভারত থাকা সত্ত্বেও কোনও কাজে আসেনি। জনগণ জেগে উঠলে কোনও অপশক্তিই টেকে না।”

‘আগামী মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল বাংলাদেশের রাজনীতিতে কোনও প্রভাব ফেলবে না’ শীর্ষক এই ছায়া সংসদে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, “নির্বাচনের আগে ট্রাম্পের বক্তব্য ভোটের রাজনীতির কৌশল।

“যেহেতু কমলা হ্যারিস ভারতীয় বংশোদ্ভূত, আমেরিকায় অবস্থানরত ভারতীয়রা বেশিরভাগই কমলাকে সমর্থন দেওয়ায় ট্রাম্প ভারতীয় হিন্দুদের সহানুভূতি পাওয়ার জন্য এই ধরনের মন্তব্য করেছেন।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত