দেশের ১১টির বেশি বন্যাকবলিত জেলায় বিপর্যস্ত হয়ে আছে জনজীবন। অনেক এলাকায় অবশ্য বন্যার পানি নামছে। আর পানি সরে গেলে উপদ্রুত সব এলাকাতেই পানিবাহিত রোগের দেখা মিলবে।
বিশেষ করে ডায়রিয়া থেকে শিশু থেকে বড়দের স্বাস্থ্যসুরক্ষায় তাই এখনই সতর্ক থাকা জরুরি।
এই দুর্যোগে বন্যার পানি পান করা যাবে না। পানি অবশ্যই আধা ঘণ্টা ফুটিয়ে পান করতে হবে। পানি ফুটানোর ব্যবস্থা না থাকলে পানি বিশুদ্ধ করতে বড়ি, ফিটকিরি ব্যবহার করা যেতে পারে।
বন্যার পরে বাড়িঘর, পয়ঃনিষ্কাশন এবং বাড়ির উঠান-বারান্দা পরিস্কার করে নিতে হবে। কোনো মরা-পঁচা প্রাণী দেখা গেলে মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে।
বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর ঘর ধুয়েমুছে জানালা খুলে রেখে তাজা আলো-বাতাস চলাচল করতে দিন; এতে ঘরের স্যাঁতস্যাঁতে ভাব দূর হবে।
পানি দূষণ নিয়ে সাবধান থাকতে বাড়ির পানি সরবরাহের লাইনে কোনো ছিদ্র আছে কি না তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে। পানির ট্যাংক, পাইপ এবং বাড়ির কলের কোনোটিতে ছিদ্র বা ফাটল পাওয়া গেলে দ্রুত মেরামত করতে হবে; অথবা পাল্টে নিতে হবে।
বন্যার পানিতে থাকা রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু থেকে সংস্পর্শ এড়াতে পানিরোধী বুট এবং গ্লাভস পরা যেতে পারে। বন্যার পানির সংস্পর্শে আসার পর সাবান এবং পরিষ্কার পানি দিয়ে হাত-পা বা শরীর ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে করে ত্বকের সংক্রমণের শঙ্কাও কমে আসবে।
যদি কারও ডায়রিয়া হয়েই যায়, তাহলে তাকে স্বাভাবিক খাবারই খেতে দিতে হবে। এছাড়া ঘন ঘন খাবার স্যালাইন দিতে হবে। ডায়রিয়া হয়েছে এমন শিশুকে মায়ের বুকে দুধ দিতে হবে।
এছাড়া ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীকে ডাবের পানি, চিড়ার পানি, ডালের পানি, ভাতের মাড়, চালের গুড়ার জাউ খেতে দেওয়া যাবে।
সাধারণত দূষিত পানি ও খাবার থেকে মানুষের শরীরে টাইফয়েড হয়ে থাকে। বন্যা ও এই সময়ের বৃষ্টিতে শরীর ভেজা থাকার কারণে পরে শ্বাসকষ্ট, সর্দি-কাশি এবং শিশুদের নিউমোনিয়া দেখা দিতে পারে।
দূষিত পানি ও পচাবাসি খাবার থেকে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত হয়ে কলেরা রোগও ছড়াতে পারে।
ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, জ্বর-সর্দি হলে সহায়তাকারী মেডিকেল টিম অথবা হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। প্রয়োজনে রোগীকে হাসপাতালে নিতে দেরি করা যাবে না।