দেশে ভোক্তা পর্যায়ে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) ১২ কেজির সিলিন্ডারের দাম কমেছে। নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, আগের দামের চেয়ে এক টাকা কমে নভেম্বরে এই সিলিন্ডার বিক্রি হবে ১ হাজার ৪৫৫ টাকায়।
অক্টোবরে যার নির্ধারিত দাম ছিল ১ হাজার ৪৫৬ টাকা ছিল।
মঙ্গলবার নতুন এই দাম ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। নতুন দাম বুধবার সন্ধ্যা ছয়টা থেকে কার্যকর হবে।
এর আগে অক্টোবরে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৩৫ টাকা বাড়িয়েছিল বিইআরসি; সেপ্টেম্বরে বেড়েছিল ৪৪ টাকা।
নভেম্বর মাসের জন্য প্রতিকেজি এলপিজির দাম ১২১ টাকা ২৫ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা আগের মাসে ১২১ টাকা ৩২ পয়সা ছিল। এই মূল্যহার অনুযায়ী অন্যান্য পরিমাণের সিলিন্ডারের দাম ঠিক করা হয়েছে।
নতুন ঘোষণায় যানবাহনের জন্য ব্যবহৃত অটোগ্যাসের দাম ঠিক করা হয়েছে প্রতি লিটার ৬৬ টাকা ৮১ পয়সা। আগের মাসে এই দাম ছিল ৬৬ টাকা ৮৪ পয়সা।
বাসাবাড়ির জন্য রেটিকুলেটেড পদ্ধতিতে সরবরাহ করা এলপিজির দাম প্রতিকেজি ১১৭ টাকা ৪৩ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা আগের মাসে ১১৭ টাকা ৪৯ পয়সা নির্ধারিত ছিল।
সৌদি আরমকোর ঘেষিত মূল্য অনুযায়ী আন্তর্জাতিক বাজারে অক্টোবর মাসে এলপিজির মিশ্রণ প্রোপেন ও বিউটেনের দাম ছিল প্রতিটন ৬২১ দশমিক ৭৫ ডলার। নভেম্বর মাসের জন্য তা ৬৩১ দশমিক ৭৫ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।
আন্তর্জতিক বাজারে দাম বাড়লে দেশের বাজারে না বাড়িয়ে কেন এক টাকা কমানো হলো তা জানতে চাইলে বিইআরসির পরিচালক (গ্যাস) প্রকৌশলী ফজলে আলম সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “আমরা যতগুলো প্যারামিটার নিয়ে কাজ করি তার একটি হচ্ছে শিপিং কস্ট। গত মাসের আমদানি চালান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, শিপিং কস্ট আগের মাসের তুলনায় প্রতিটনে প্রায় ১১ ডলার করে কমেছে। এর একটা প্রভাব পড়েছে দামে।”
অর্থাৎ পরিবহন খরচ কমায়, সেই খরচ হিসাব করেই ১২ কেজির সিলিন্ডারে এলপিজির দাম কমানো হয়েছে এক টাকা।
২০২১ সালের এপ্রিল মাস থেকে এলপিজির দাম নির্ধারণ করে আসছে বিইআরসি। এলপিজি তৈরির মূল উপাদান প্রোপেন ও বিউটেন বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়। প্রতি মাসে এলপিজির এ দুই উপাদানের মূল্য প্রকাশ করে সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠান আরামকো। এটি সৌদি কার্গো মূল্য (সিপি) নামে পরিচিত।
এই সৌদি সিপিকে ভিত্তিমূল্য ধরে দেশে এলপিজির দাম সমন্বয় করে বিইআরসি। আমদানিকারক কোম্পানির চালান (ইনভয়েস) মূল্য থেকে গড় করে পুরো মাসের জন্য ডলারের দাম হিসাব করে বিইআরসি।
বাজারে সাড়ে ৫ কেজি থেকে শুরু করে ৪৫ কেজি পর্যন্ত বিভিন্ন আকারের সিলিন্ডার সরবরাহ করা হয়। গৃহস্থালি রান্নার পাশাপাশি রেস্তোরাঁ, পরিবহন, ছোট-বড় শিল্পকারখানায়ও এলপিজি ব্যবহার করা হচ্ছে। এই বাজারের ৯৯ শতাংশের বেশি বেসরকারি খাতের দখলে।