Beta
শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Beta
শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর ‘সুযোগ নেই’ : বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

মঙ্গলবার ডিআরইউ আয়োজিত মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
মঙ্গলবার ডিআরইউ আয়োজিত মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
Picture of প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

শুল্ক অব্যাহতির মেয়াদ শেষ হওয়ায় আগের দামে ভোজ্যতেল বিক্রি করতে চান মিলমালিকরা। তবে ভোজ্যতেলের দাম বাড়নোর ‘সুযোগ নেই’ বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।

রমজান মাস সামনে রেখে ভোজ্যতেলের কাঁচামাল আমদানি ও উৎপাদন পর্যায়ে গত ৭ ফেব্রুয়ারি জারিকৃত এসআরওতে (বিধি-বিধান) ৫ শতাংশ শুল্ক কমানো হয়েছিল, যার মেয়াদ শেষ হয়েছে ১৫ এপ্রিল।

এ কথা উল্লেখ করে সোমবার দেওয়া মিলমালিকদের চিঠিতে জানানো হয়েছে, ১৬ এপ্রিল থেকে বাজারে ভোজ্যতেল (পরিশোধিত পাম তেল ও পরিশোধিত সয়াবিন তেল) ভ্যাট অব্যাহতি–পূর্ববর্তী মূল্যে সরবরাহ করা হবে, যা আজ (মঙ্গলবার) থেকে কার্যকর হবে।

তবে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের এভাবে তেলের দাম বাড়োনোর ঘোষণা দেওয়ায়, তা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, সয়াবিনের আগের দামে ফিরে যাওয়ার সুযোগ নেই। তবে ভ্যাট প্রত্যাহারের সময় শেষ হয়েছে, এটা ঠিক। এখন ট্যারিফ কমিশনের মাধ্যমে হিসাব করা হবে; এনবিআরকে জানানো হবে।

ব্যবসায়ীদের তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া চিঠি পাননি জানিয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আমার কাছে এই চিঠি আসে নাই। আমি এখন অফিসে যাব, তারপর জানার চেষ্টা করব কী হয়েছে।”   

মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী।

আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের উপর যৌক্তিক কর আরোপ করতে হবে। কারণ আমাদের এটা মাথায় রাখতে হবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের উপর কর বাড়িয়ে ধরলে শেষ পর্যন্ত সাধারণ মানুষের উপরই তা পড়ে। পণ্যের দামও বেড়ে যায়। ফলে আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি, আগামী বাজেটে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের উপর যৌক্তিক কর আরোপ করার।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ট্যারিফ কমিশনকে আমরা জানিয়েছি, কর আদায় করতেই হবে, কিন্তু কোথা থেকে সংগ্রহ হবে তা ঠিক করতে হবে। আপনি মানুষের ইনকামের উপর ট্যাক্স ধরতে পারেন, কিন্তু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের উপর কর যৌক্তিক উপায়ে ধরতে হবে।

রমজানে পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিতে মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা নিয়ে তিনি বলেন, রমজানে যেন কোনও দ্রব্যের সরবরাহ ব্যাঘাত না হয়, সেই দিকে আমাদের লক্ষ ছিল। দ্রব্যমূল্য একটি নিয়ন্ত্রিত জিনিস না। নানান কারণে দাম বাড়তে পারে, কমতে পারে। কিন্তু সরবরাহ ঠিক থাকলে এটার একটা ব্যালান্স করা যায়।

টিসিবির দোকানগুলোকে স্থায়ীকরণের দিকে সরকার মনোযোগী—এ কথা জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আমরা ১ কোটি মানুষকে পণ্য দিচ্ছি। আমরা এই তালিকা আবার নতুন করে হালনাগাদ করব। নতুন কোনও পণ্য ভতুর্কির আওতায় দেওয়া যায় কি না, দেখছি। ভুর্তকি না হলেও ন্যায্য দামে পণ্য দেওয়ার চেষ্ট করছি। টিসিবি ট্রাকে করে জিনিস বিক্রি করে। আমরা এখন এসব ট্রাক বাদ দিয়ে স্থায়ী জায়গায় দোকান তৈরি করার দিকে লক্ষ করছি, যাতে মানুষকে অনিশ্চয়তায় না থাকতে হয়।

“আমরা টিসিবির জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে সরবরাহ পদ্ধতি তৈরি করার চেষ্টা করছি। শুধু ভারত নয়, আমরা রাশিয়ার পণ্য আনার চুক্তি করেছি। মিয়ানমারের সাথেও এ ধরনের চুক্তি করার ইচ্ছা আছে। ব্রাজিল এসেছিল, আমরা তাদের কাছে সয়াবিন তেল এবং চিনি আনার কথা বলেছি। আমরা টিসিবির মাধ্যমে এসব পণ্য সরবরাহ করব।”

রপ্তানিতে বৈচিত্র‍্য আনার চেষ্টায় রয়েছে সরকার—এ কথা জানিয়ে আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, “আমাদের অন্যতম প্রধান লক্ষ রপ্তানিতে বৈচিত্র‍্য আনার। আমরা হস্তশিল্পে মনোযোগ দিয়েছি। এক গ্রাম এক পণ্য নীতি নিয়ে আমরা কাজ করছি। আমরা রপ্তানির সাথে সাথে আমদানিতেও বৈচিত্র্য আনতে কাজ করে যাচ্ছি।”

রপ্তানিতে বাংলাদেশ ভালো করছে জানিয়ে তিনি বলেন, “অনেকে অনেক কথা বলেছে, কিন্তু আপনি দেখবেন আমাদের রপ্তানি এ বছরের প্রথম তিন মাসে প্রতিটি মাসেই আমরা ৫০০ কোটি ডলারের উপর রপ্তানি করেছি, এটা অনেক বড় বিষয়।”

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সভার প্রসঙ্গ টেনে প্রতিমমন্ত্রী বলেন, “বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সভায় আমরা বেশ কিছু ভালো সিদ্ধান্ত তৈরি করতে পেরেছি আমাদের জন্য। ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে যাবে বাংলাদেশ। কিন্তু গ্র‍্যাজুয়েশন টাইম হিসেবে আমরা আরও তিন বছর সময় পাব। সেই সময়টাতে আমরা স্বল্পোন্নত দেশের সুবিধাগুলো পাব। আমাদের সামনের পাঁচ বছর চ্যালেঞ্জিং। আমাদের প্রস্তুতি কাজ এর মধ্যে শেষ করতে হবে।

“বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সভায় আমি চীন, জাপান, ভারত, জার্মানি, সিঙ্গাপুর, কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের সাথে  সভা করেছি। তারা সবাই আমাদের দেশের সাথে বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ করার জন্য উৎসাহী।”

বাংলাদেশকে বাণিজ্যের হাব তৈরির পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা প্রতিটি পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে চাচ্ছি। আমরা ওয়্যারহাউজ হাব তৈরি করার চেষ্টা করছি। আমরা মাতারবাড়ী ডিপ সি পোর্টকে কেন্দ্র করে এসব করার পরিকল্পনা করছি। এর জন্য সমুদ্রে ওয়্যারহাউজ করারও পরিকল্পনা করছি।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত