Beta
শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Beta
শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

লিটারে ১০ টাকা কমছে সয়াবিন তেলের দাম

তেল
দেশের বাজারে ১ মার্চ থেকে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম কমবে ১০ টাকা
Picture of প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

রমজান মাসকে সামনে রেখে দেশের বাজারে কমানো হচ্ছে সয়াবিন তেলের দাম। এই দফায় প্রতি লিটারে ১০ টাকা কমছে। নতুন দাম আগামী ১ মার্চ থেকে কার্যকর হবে।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা বিষয়ক টাস্কফোর্সের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠক শেষে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু সাংবাদিকদের নতুন দামসহ অন্যান্য তথ্য জানান।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, “এনবিআর ভোজ্যতেলের শুল্ক বাবদ ৫ টাকা কমালেও রোজা সামনে রেখে মিল মালিক ও পরিশোধনকারীরা লিটারে ১০ টাকা করে কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন।”

বর্তমানে দেশের বাজারে এক লিটারের সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৩ টাকায়। নতুন দাম কার্যকর হলে দাম কমে দাঁড়াবে ১৬৩ টাকায়। আর খোলা সয়াবিন তেলের দাম কমে বিক্রি হবে ১৪৯ টাকায়।

তবে আপাতত পাম তেলের দাম কমানো হচ্ছে না বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।

ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির সুযোগ তৈরি হচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “এখন মৌখিকভাবে কথা হয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে অফিসিয়াল সিদ্ধান্ত এলে আপনাদের সামনে প্রকাশ করব।”

ভারতের পাশাপাশি মিয়ানমারের সঙ্গেও ভোগ্যপণ্যের সীমান্ত বাণিজ্য সহজ করার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, “মিয়ানমারের সঙ্গে নিত্যপণ্য নিয়ে এমওইউর একটি খসড়া আমাদের কাছে এসেছে। আশা করছি অচিরেই এটি চূড়ান্ত হবে। মিয়ানমারের চাল, ডাল, পেঁয়াজ, আদা সহজে নিয়ে আসতে পারব আমরা।”

বৈঠকে দেশের অন্যতম ব্যবসা প্রতিষ্ঠান টিকে গ্রুপ, সিটি গ্রুপ, এস আলম ও বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন জানিয়ে আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, “আমি ওনাদের বলেছি, প্রধানমন্ত্রী প্রত্যাশা করেন আমাদের যারা শিল্প এবং ব্যবসায়ী বড় আকারের আছেন তাদেরও সোশ্যাল একটা রেসপনসিবিলিটি আছে।

“সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে আমি বলব না যৌক্তিকভাবে, কিছুটা অযৌক্তিকভাবেও আমরা ওনাদেরকে অনুরোধ করেছি এবং ওনারা ভোজ্যতেলের দাম ১০ টাকা প্রতি লিটারে কমানোর জন্য একমত হয়েছেন। ওনারা নিজেরাই প্রস্তাবটা করেছেন।”

তেলের দামের সঙ্গে আরও অনেক কিছু যুক্ত থাকে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী আশা করেন, তেলের দাম কমলে ভোক্তা পর্যায়ে বাজারদরে স্বস্তি ফিরবে।

বাণিজ্য
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা বিষয়ক টাস্কফোর্সের সভায় কথা বলছেন প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু

তিনি বলেন, “আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি লুজ পর্যায়ে লিটারে সর্বোচ্চ মূল্য থাকবে ১৪৯ টাকা। আর পাঁচ লিটারের বোতল ৮০০ টাকায় বিক্রি হবে। আমরা আশা করছি এতে আমাদের ভোক্তা সাধারণ উপকৃত হবেন।”

আসন্ন রমজানে যে পরিমাণ অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বাজারে থাকা দরকার বা মজুদ থাকা দরকার তার সবগুলোই মোটামুটি পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে বলে আশ্বস্ত করেন প্রতিমন্ত্রী।

এসময় বিশ্বজুড়ে চলা ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধসহ নানা কারণে পরিবহনের ব্যয় বেড়ে যাওয়া, ডলারে আমদানি পর্যায়ে ব্যয় বৃদ্ধির কথাও তুলে ধরেন তিনি। বলেন, “তারপরও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য আমাদের ব্যবসায়ীরা সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) যৌক্তিক পর্যায়ে দাম যাতে থাকে সেজন্য কিছু চেঞ্জ করেছে।”

অত্যাবশ্যকীয় পণ্যগুলোর ট্যারিফ যেন আগামী বাজেটে যৌক্তিক পর্যায়ে থাকে, সে বিষয়ে এনবিআরকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

কৃষি মন্ত্রণালয় বছরে দুইবার পেঁয়াজ উৎপাদনের যে উদ্যোগ নিচ্ছে তাতে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে চালের মতো এই পণ্যেও আমদানি নির্ভরতা কমবে বলেও মনে করেন তিনি।

বৈঠকে টিসিবির মাধ্যমে এক কোটি পরিবারকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বিতরণের কাজ শুরুর কথা জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, “এই রমজানে আরও দুইবার আমরা এটা করব। সেখানে চাল থাকবে পাঁচ কেজি, তেল থাকবে, ডাল থাকবে, চিনি, খেজুর এবং ছোলা থাকবে।”

ভোক্তা অধিদপ্তরের নেতৃত্বে আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি মৌলভীবাজার যাবেন জানিয়ে তিনি বলেন, “সেখানে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করব। যেন তারা পণ্য সরবরাহের মাধ্যমে সব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ভোক্তাদের জন্য অ্যাভেইলেবল রাখতে পারে।”

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আজকে আমরা শুধু ভোজ্যতেলের বিষয়ে কথা বলেছি এবং দাম নির্ধারণ করে দিয়েছি। আমরা আশা করি বাজার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বাকি যে পণ্যগুলো আছে সেগুলোর দাম যৌক্তিক পর্যায়ে চলে আসবে।

সভায় বাণিজ্য সচিবসহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থার পাশাপাশি, দেশের ব্যবসায়ী শিল্পতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের প্রতিনিধি, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের বড় যোগানদাতা বেসরকারি উদ্যোক্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত