কয়েকদিন টানা বৃষ্টি হচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। বৃষ্টির কারণে ঢাকার বাজারে কমেছে সবজির সরবরাহ, ফলে দামে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। একটি-দুটি সবজি ছাড়া সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সব সবজিরই দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
শুক্রবার ঢাকার কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে, ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্রই পাওয়া গেল।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মানভেদে প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকায়। অথচ সপ্তাহ খানেক আগেও প্রায় সব ধরনের বেগুনের দাম ছিল কেজিপ্রতি ৬০-৮০ টাকার মধ্যে।
করলা ও উচ্ছে এখন প্রায় একই দামে বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে। তাজা উচ্ছে ও করলা বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজিতে। সপ্তাহ খানেক আগে যার দাম ছিল ৬০-৭০ টাকা কেজি।
ঢেঁড়শ ৫০-৬০ টাকা, বরবটি ৮০-১০০ টাকা, কচুর লতি ৭০-৮০ টাকা ও পটল ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি পেঁপে ৩০-৪০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, গাজর ১৬০ টাকা, কচুরমুখী ৮০ টাকা, টমেটো ১৬০ টাকা ও শসা বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকায়। এসব সবজির প্রায় প্রতিটিই সাতদিনের ব্যবধানে ৫-১০ টাকা করে কেজিতে বেড়েছে।
প্রতি পিস লাউয়ের জন্য গুনতে হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। এছাড়া এক আঁটি লালশাক ২০ টাকা, পাটশাক ১৫ টাকা, পুঁইশাক ৩০-৪০ টাকা, লাউশাক ৪০ টাকা, ডাঁটাশাক ২০ টাকা, কলমিশাক ১৫ টাকা ও পালংশাক ২০ টাকা করে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. মুস্তাফিজ বলেন, বৃষ্টির দিনে একান্ত প্রয়োজন না হলে অনেকে বাজারে আসে না। এ কারণে মহাজনরা পণ্যও কম তুলেছেন। তাছাড়া বিক্রিও তুলনামূলক কম। এ কারণে সবজির দাম কিছুটা বাড়তি।
আলুর দাম আগের মতোই আছে। ঢাকার প্রায় সবখানেই এক কেজি আলু কিনতে ৫৫-৬০ টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে ক্রেতাদের।
গত সপ্তাহে কাঁচা মরিচের কেজি ছিল ১৬০-১৮০ টাকা। এ সপ্তাহে কাঁচা মারিচের দাম বেড়ে ২২০-২৪০ টাকায় উঠে এসেছে। তবে বিক্রেতারা বলছেন মরিচের দাম বেড়েছে গত বুধবার থেকেই। বৃষ্টির কারণে সরবরাহ কম থাকায় মরিচের দাম বেড়েছে বলে জানান তারা।
বাজারে বেড়ে গেছে আদা-রসুনের দামও। প্রতি কেজিতে ৫-১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। প্রতি কেজি রসুন ২৪০-২৬০ টাকা ও আদা বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৮০ টাকায়। বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০-১১৫ টাকায়।
পরিবর্তন নেই মাছের দামে
বেশিরভাগ মাছ বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই। প্রতি কেজি রুই বিক্রি হচ্ছে ৩৬০-৩৮০ টাকায়। এছাড়া, চাষের পাঙাশ প্রতি কেজি ২০০-২২০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০-২৫০ টাকা, চাষের কৈ মাছ ২৪০-২৮০ টাকা, চাষের শিং ৫৫০-৬০০ টাকা, কোরাল ৭০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, বোয়াল ৭০০ টাকা, আইড় ৭৫০-৮০০ টাকা ও পাবদা ৫০০-৫৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
বাজারে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে আগের বাড়তি দামেই। দেড় কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে কেজি হারে ২২০০-২৩০০ টাকায়। এক কেজি ওজনের ইলিশ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ১৭০০-১৮০০। ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ কেজিতে ১৫০০-১৬০০ টাকা ও ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের জন্য কেজিতে গুনতে হচ্ছে ১২০০-১৩০০ টাকা পর্যন্ত।
অপরিবর্তিত আছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৭০-৮০০ টাকায়। প্রতি কেজি খাসির মাংস ১ হাজার ৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বেঁধে দেওয়া দামে মিলছে না ডিম-মুরগি
গত ১৫ সেপ্টেম্বর ব্রয়লার মুরগি, ডিম ও সোনালি মুরগির দাম নির্ধারণ করে দেয় কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। সে অনুযায়ী প্রতি ডজন ডিমের দাম ঠিক করে দেওয়া হয়েছিল ১৪২ টাকা ৪৪ পয়সা আর প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭৯ টাকা ৫৯ পয়সা এবং সোনালি মুরগির দাম ২৬৯ টাকা ৬৪ পয়সা।
তবে সরকার নির্ধারিত দামে ডিম ও মুরগি পাচ্ছেন না ক্রেতারা।
গ্রিনরোডের বাসিন্দা শাহাজাদা ইসলাম গ্রিনরোড ও কাঠালবাগান এলাকা থেকে বাজার করেন। তিনি সকাল সন্ধ্যা বলেন, দাম নির্ধারণের আগে বাজারে যে দামে ডিম ও মুরগি বিক্রি হয়েছে, দাম ঠিক করে দেওয়ার পর তার থেকে কিছুটা হলেও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।
বাজারে মুরগির হালকা বাদামি রংয়ের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকা ডজন। সাদা রঙ্গের ডিম ১৬০ টাকায়। আর প্রতি ডজন হাঁসের ডিম ২৩০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম ২৪০ টাকা।
বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮৫-১৯০ টাকা ও সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৭০-২৮০ টাকায়।