দেশের পরিবর্তিত প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখে এখনই প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোয় শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায়।
শপথ নেওয়ার পর সোমবার প্রথমবারের মত সচিবালয়ে অফিস করেছেন এই উপদেষ্টা। সেখানে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও সভা করেছেন।
সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো খোলার বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, “সামগ্রিকভাবে এখন একটা অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। আর বাচ্চারা খুব ছোট। অস্থিরতা যদি না কমে, সমস্যাগুলো থাকে, তাহলে তো মানুষ বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে আগ্রহ বোধ করবে না। কেবল ঘোষণা দিলেই তো হবে না। সেজন্যই এ বিষয়টি ঠিক করে আমরা জানাব।”
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট সহিংস পরিস্থিতিতে গত ১৬ জুলাই দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
ছাত্র-গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। সেদিন রাতেই এক প্রজ্ঞাপনে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক প্রজ্ঞাপনে জানায়, ৬ আগস্ট থেকে দেশের সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, কলকারখানা, স্কুল কলেজ, মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা খাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা
তবে শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে দেশজুড়ে শুরু হয় নানা ধরনের অরাজকতা-সহিংসতা। এ অবস্থায় সন্তানদের স্কুল-কলেজে পাঠাননি অভিভাবকরা। এর মধ্যে ৮ আগস্ট থেকে কলেজ ও মাদ্রাসায় ক্লাস শুরু হয়। কিছু বিশ্ববিদ্যালয়েও ক্লাসে ফিরেছে শিক্ষার্থীরা। এখন ক্লাসে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা।
প্রাথমিক শিক্ষাকে একটি জাতির ভিত হিসেবে উল্লেখ করে বিধান রঞ্জন রায় বলেন, এই শিক্ষাই শিশুদের ব্যক্তিত্বের ভিত গড়ে দেয়।
“কিন্তু খুব দুঃখজনক হলো, আমাদের দেশে বাস্তবে এটা এতটুকু কার্যকর হয় না। যেমনটা করা উচিত তেমনটা করা হয় না।”
স্বাক্ষরতার হার কিংবা অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও শিক্ষার মানের উন্নয়ন হয়নি মন্তব্য করে তিনি বলেন, “এই মুহূর্তে আমাদের যেটা প্রয়োজন সেটা হচ্ছে, মানের উন্নয়ন করা। প্রাথমিক শিক্ষার মানের উন্নয়ন করা। যেন আমাদের শিশুরা সুনাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠে এবং তারা অবদান রাখতে পারে।”
সবার সঙ্গে বসে এসব বিষয়ে কর্মকৌশল ঠিক করবেন বলেও জানালেন উপদেষ্টা।
এর আগে সকাল ৯ টায় অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় স্মৃতিসৌধে যান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি সম্মান জানাতে। সেখান থেকে সরাসরি যান নিজের দপ্তরে।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সাবেক এই পরিচালক রবিবার শপথ নিয়েছেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার শপথ নিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টাসহ মোট ১৪ উপদেষ্টা। তবে ঢাকার বাইরে থাকায় শপথ নিতে পারেননি ডা. বিধান ও সুপ্রদীপ চাকমা। তারা দুজনেই রবিবার শপথ নিয়েছেন।
এছাড়া দেশের বাইরে থাকায় আরেক উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক-ই-আযম এখনও শপথ নেননি।