চাকরি হারিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রভাবশালী দুই কর্মকর্তা হাসান জাহিদ তুষার ও গাজী হাফিজুর রহমান লিকু। তাদের চাকরি হারানোর কারণ জানা যায়নি। পদমর্যাদায় শীর্ষস্থানে না থাকলেও দল ও সরকারের বিভিন্ন স্তরে প্রভাব রাখতেন তারা।
তুষার ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সচিব-৩ (ডিপিএস-৩)। আর লিকু ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-২ (এপিএস-২)। তাদের দুইজনের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ ছিল।
বুধবার (২৯ মে) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ভাস্কর দেবনাথ বাপ্পির সই করা পৃথক প্রজ্ঞাপনে তাদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিলের বিষয় জানানো হয়েছে। বিষয়টি সকাল সন্ধ্যাকে নিশ্চিত করেছেন উপসচিব ভাস্কর দেবনাথ বাপ্পি।
তুষারের নিয়োগ বাতিলের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, হাসান জাহিদ তুষারের সঙ্গে সরকারের সম্পাদিত চুক্তিপত্রের অনুচ্ছেদ-৮ অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সচিব পদে তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ ২০২৪ সালের ১ জুন থেকে বাতিল করা হলো।
২০১৯ সালের ৪ মার্চে এই পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন তুষার।
লিকুর নিয়োগ বাতিলের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গাজী হাফিজুর রহমানের সঙ্গে সরকারের সম্পাদিত চুক্তিপত্রের অনুচ্ছেদ-৮ অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-২ পদে তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ ২০২৪ সালের ১ জুন থেকে বাতিল করা হলো।
২০১৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি লিকুকে প্রধানমন্ত্রীর এপিএস-২ পদে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
গত ২৮ জানুয়ারি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আশরাফুল আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, “হাসান জাহিদ তুষারকে অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সঙ্গে কর্ম সম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে যোগদানের তারিখ হতে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকাল অথবা তার সন্তুষ্টি সাপেক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সচিব পদে চুক্তিভিক্তিক নিয়োগ প্রদান করা হলো।”
একই ধরনের শর্ত ছিল লিকুর নিয়োগের প্রজ্ঞাপনেও। যোগদানের তারিখ থেকে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকাল অথবা তার সন্তুষ্টি সাপেক্ষে (যেটি আগে ঘটে) চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়ার কথা জানানো হয় প্রজ্ঞাপনে।
মাগুরার ছেলে হাসান জাহিদ তুষার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নিয়োগ পাওয়ার আগে র্দীর্ঘদিন ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারে কর্মরত ছিলেন তিনি।
গাজী হাফিজুর রহমান লিকু ছাত্রজীবনে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পরে ভিপি ছিলেন। পরবর্তী সময়ে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহ-সম্পাদক ছিলেন। ২০০৮ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অ্যাসাইনমেন্ট অফিসার হিসেবে নিয়োগ পান।
বুধবার বিকালে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যে এসেছে তুষার ও লিকুর প্রসঙ্গ।
‘বেনজির ও আজিজ আওয়ামী লীগের সৃষ্টি’ বলে উল্লেখ করে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পাল্টা প্রশ্ন রেখে বলেন, আশরাফুল হুদা, রকিবুল হুদা, কোহিনূর- এরা কাদের সৃষ্টি? দুর্নীতি, লুটপাটের ভবন ‘হাওয়া ভবন’ কাদের সৃষ্টি? তাদের বিচার কি বিএনপি করেছে? শেখ হাসিনার সৎ সাহস আছে। সে কারণে দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার জিরো টলারেন্স। আজকে প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বপূর্ণ দুইজনের নিয়োগ বাতিল হয়েছে। তাদের নিশ্চয়ই কর্তব্যে কোনও বিচ্যুতি ঘটেছে।