Beta
সোমবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৪
Beta
সোমবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৪

বগুড়ায় আন্দোলনকারীদের ধাওয়ায় পিছু হটল আওয়ামী লীগ

ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পর বগুড়ার সাতমাথা এলাকা দখলে নিয়ে আন্দোলনকারীরা। ছবি : সংগৃহীত
Picture of আঞ্চলিক প্রতিবেদক, বগুড়া

আঞ্চলিক প্রতিবেদক, বগুড়া

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা অসহযোগ কর্মসূচির প্রথম দিনে রবিবার সকালে বগুড়া শহরের সাতমাথা এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ঘটনা ঘটেছে।

এক পর্যায়ে টিকতে না পেরে আওয়ামী লীগের লোকজন পিছু হটলে পুরো এলাকা দখলে নেয় আন্দোলনকারীরা। এখন আন্দোলনকারীরা সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছে।

এদিকে, রবিবার রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬ জেলায় বড় বাস-ট্রাক-মিনিট্রাক চলাচল বন্ধ রয়েছে। বাস বন্ধ থাকায়  ব্যাটারি ও সিএনজিচালিত অটোরিকশাতেই চলাচল করতে হচ্ছে মানুষকে।

শহরের সাতমাথায় থাকা একধিক প্রত্যক্ষদর্শী সকাল সন্ধ্যাকে জানান, সকাল থেকেই আওয়ামী লীগ, এর সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের লোকজন সাতমাথা এলাকায় জড়ো হয়। তারা আন্দোলনকারীদের প্রতিহতের ঘোষণা দেন। তবে সকাল ১১টার দিকে শিক্ষার্থীসহ আন্দোলনকারীরা সেখানে জড়ো হলে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের লোকজনের সঙ্গে প্রথমে তাদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানায়, এক পর্যায়ে পুলিশ টিয়ারশেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এ সময় সেখানে একটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। তবে আন্দোলনকারীদের সামনে টিকতে না পেরে এক পর্যায়ে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পিছু হটে। এরপর পুরো সাতমাথা দখল করে নেয় আন্দোলনকারীরা।

এদিকে, বগুড়ার প্রাণকেন্দ্র সাতমাথাসহ শহরের অধিকাংশ এলাকায় সকাল থেকে দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। কাহালু সড়কের শহরদিঘী এলাকায় সকাল থেকে সড়কে গাছের গুড়ি-বাঁশ ফেলে অবরোধ করেছে স্থানীয় শিক্ষার্থী ও লোকজন।  বাঁশ-গাছের পাশাপাশি সড়কে তারা সড়কে টায়ার রেখে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। এতে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

জেলার সহাসড়কে সকাল থেকে বড় গাড়ি চলাচল করতেও দেখা যায়নি। উত্তরবঙ্গ পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, “উত্তরবঙ্গে প্রায় ৫০ হাজারের ওপরে যানবাহন চলাচল করে। রাস্তায় গত ১২ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের আটটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এই কারণে উত্তরবঙ্গের কোনও সড়কে আর বড় যানবাহন চলাচল করছে না। মানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে আমরা আর গাড়ি চালাব না।”

পরিবহন সমিতি সূত্রগুলো বলছে, উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলায় একদিন যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকলে অন্তত ১৫ কোটি টাকা ক্ষতি হয়। বেকার হয়ে পড়েন দুই লাখের বেশি শ্রমিক।

এদিকে, বগুড়ার চারমাথায়ও সকাল থেকে শত শত আন্দোলনকারী অবস্থান নিয়েছে মহাসড়কে। এছাড়া বগুড়া শহরের ঢোকার প্রায় প্রতিটি রাস্তাই এখন আন্দোলনকারীরা ব্লক করে রেখেছেন।

বগুড়ার শাজাহানপুর এলাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক এরশাদ জানান, “এই পরিস্থিতির মধ্যে গাড়ি বের করার কথা কল্পনাও করা যায় না। ভাঙচুর করলে তো সব শেষ হয়ে যাবে। তখন কীভাবে সংসার চলবে। এই কারণে বাড়িতে বসে আছি। দেখা যাক, পরিস্থিতি শান্ত হয় কিনা।”

উত্তরাঞ্চলের প্রাণ কেন্দ্র বগুড়া। রাজশাহী বিভাগের নওগাঁ, জয়পুরহাটসহ রংপুর বিভাগের পরিবহন ব্যবসায়িক কেন্দ্রবিন্দুও বগুড়ায়। ভৌগোলিক কারণে উত্তরের অন্যান্য জেলায় চেয়ে বগুড়ার গুরুত্ব বেশি।

বগুড়া জেলা মোটর মালিক গ্রুপ সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া থেকে প্রায় দেড় হাজার বাস দেশের বিভিন্ন জেলায় চলাচল করে। শিক্ষার্থী আন্দোলনের কারণে  সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ আছে।

জেলা মটর মালিক সূত্র বলছে, সাধারণত বগুড়া থেকে প্রতিদিন প্রায় ৭০০ দূরপাল্লার বাস চলাচল করে। এর সঙ্গে রয়েছে ট্রাক, কাভার্ডভ্যানসহ আরও অনেক যানবাহন। রাত থেকে বন্ধ রাখা হয়েছে সব যানবাহন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত