বিভিন্ন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের কাছে গ্রাহক ও বিক্রেতাদের পাওনা অর্থ পরিশোধে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
এজন্য সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেল থেকে একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
ওই গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যেসকল ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আগাম মূল্য নিয়ে পণ্য সরবরাহ করেনি আগামী ১৪ নভেম্বরের মধ্যে তাদের গ্রাহকদের তালিকা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে। একই সঙ্গে ওইসব প্রতিষ্ঠানে পণ্য সরবরাহ করে যেসব বিক্রেতারা তাদের সরবরাহকৃত পণ্যের দাম পাননি তাদেরও তালিকা জমা দিতে হবে।
গ্রাহকদের মধ্যে যারা অর্থ পরিশোধ করেও ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠান থেকে পণ্য পাননি এবং বিক্রেতাদের মধ্যে যারা ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠানকে পণ্য সরবরাহ করে বিক্রয়মূল্য বুঝে পাননি, তাদেরকে আগামী ১৪ নভেম্বরের মধ্যে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অনলাইন পোর্টালে (https://dncrp.portal.gov.bd) অভিযোগ দায়ের করতে বলা হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা ওই গণবিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আগামী ১৪ নভেম্বরের মধ্যে ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কাছে পাওনাদার গ্রাহক ও বিক্রেতার তালিকা দাখিল না করলে পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে থাকা টাকা ‘ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা ২০২১’ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম ডিপার্টমেন্টের ২০২১ সালের ৩০ জুন জারি করা সার্কুলার অনুসারে সংশ্লিষ্ট গ্রাহক ও বিক্রেতাদের অনুকূলে পর্যায়ক্রমে ছাড়করণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যেসব গ্রাহক ও বিক্রেতা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ দায়ের করবেন, তাদের অভিযোগগুলো পর্যায়ক্রমে নিষ্পত্তির মাধ্যমে পেমেন্ট গেটওয়ে অথবা ব্যাংক হিসাবে জব্দ হওয়া টাকা ছাড়করণের ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও সেখানে জানানো হয়েছে।
২০২১ সালে সেপ্টেম্বরে ইভ্যালির উদ্যোক্তা মোহাম্মদ রাসেল গ্রেপ্তারের পর থেকে একে একে জানা যায় দেশে এ ধরনের প্রায় ৩৫টি ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠানে কয়েক লাখ গ্রাহকের অগ্রিম দেওয়া টাকা আটকে আছে। বিক্রেতারাও পণ্য সরবরাহ করে তাদের পণ্যমূল্য পাননি।
পরবর্তীতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষ আলোচনা সাপেক্ষে এ সকল প্রতিষ্ঠানের পেমেন্ট গেটওয়েতে জমা থাকা টাকা আটকে দেওয়া হয়। কিছু প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে থাকা টাকাও উত্তোলন স্থগিত করে রাখা হয়।
ডিজিটাল কমার্স সেলের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ৩৫টি ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠানের পাঁচটি পেমেন্ট গেটওয়ে ও একটি ব্যাংকের হিসাবে মোট ৫৩৫ কোটি টাকার মতো আটকে রাখা হয়। এর মধ্যে গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৫টি ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠানের নামে আটকে থাকা ৪১৮ কোটি টাকার মতো রিফান্ড বা পুনঃপরিশোধ করা হয়েছে।
বাকি ২০টি ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠানের পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে থাকা টাকা থেকে কোনো অর্থ রিফান্ড করা হয়নি। সবগুলো প্রতিষ্ঠানের এখনও ১১৭ কোটি টাকা পেমেন্ট গেটওয়েগুলোর কাছে জমা আছে।