Beta
শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫

সঞ্জয় রক্ষিতের ঘটনা অশনি সংকেত : পূজা উদযাপন পরিষদ

কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় লালন সাঁইয়ের আখড়া। ছবি: সংগৃহীত
কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় লালন সাঁইয়ের আখড়া। ছবি: সংগৃহীত
[publishpress_authors_box]

লালন সাঁইয়ের যে গান গাওয়া হয় দেশের সব খানে, সেই গানের এক চরণ ফেইসবুকে লেখার জেরে শরীয়তপুরের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা ও তাকে গ্রেপ্তারের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ।

সোমবার এক বিবৃতিতে সংগঠনটি বলছে, সঞ্জয় রক্ষিত নামের ওই ব্যক্তি জামিন পেলেও লালন সাঁইয়ের গান উল্লেখের কারণে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গভীর শঙ্কার জন্ম দিয়েছে। ঘটনাটিকে অশনি সংকেত হিসেবে দেখছে সংগঠনটি।

৪০ বছর বয়সী সঞ্জয় রক্ষিত পেশায় একজন স্বর্ণ ব্যবসায়ী। তাকে রবিবার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে। তার বিরুদ্ধে মামলাও করেছিল। সেই মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।

একদিন বাদে সোমবার বিকালে তার জামিন মঞ্জুর করেন শরীয়তপুর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক মো. সাকিব হোসেন।

পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার রাত ১১টায় সঞ্জয় নিজের ফেইসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট দেন। তাতে লিখেছিলেন- ‘যদি সুন্নত দিলে হয় মুসলমান, নারীলোকের কি হয় বিধান’।

লালন সাঁইয়ের ‘সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে’ গানের একটি চরণ এটি।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের বিবৃতি বলা হয়েছে, সঞ্জয় জামিন পেলেও লালন সাঁইয়ের গান উল্লেখের কারণে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গভীর শঙ্কার জন্ম দিয়েছে এবং অশনি সংকেত হিসেবে প্রতিভাত হচ্ছে।

পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর ও সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা বিবৃতিতে বলেছেন, “লালনের গান ‘সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে’ বাঙালির আবহমান ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিচর্চার অংশ।

“সঞ্জয় রক্ষিতের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ আমাদের কেবল ষাটের দশকের কথাই স্মরণ করিয়ে দেয় না, আমাদের সংস্কৃতিচর্চার পথ রুদ্ধ করার আশঙ্কারও জানান দেয়।”  

পরিষদের দপ্তর সম্পাদক শচীন্দ্র নাথ বাড়ৈ স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, জামিনের সময় সঞ্জয়ের কাছ থেকে ৫০ টাকার অঙ্গীকারনামায় সই নেওয়া হয়েছে। এতে আরও শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে।

এ ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারের কাছে দাবিও জানিয়েছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ।

সঞ্জয় তার ফেইসবুক অ্যাকাউন্টে বেগুনি-গোলাপি রঙের পটভূমিতে লালনের গানের চরণটি জুড়ে দিয়েছিলেন। পরে অবশ্য তা মুছে দেন। তবে ততক্ষণে সেই পোস্টের স্ক্রিনশট স্থানীয়দের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।

প্রচলিত একটি গানের চরণের জন্য তাকে গ্রেপ্তারের কারণ কী? ব্যাখ্যায় পুলিশ বলছে, এই লাইনের কারণে পোস্টটি নিয়ে স্থানীয় মুসলমানদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তারা ভেদরগঞ্জ থানায়ও সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে।

জনরোষ সৃষ্টি হতে পারে- এমন আশঙ্কায় পুলিশ সঞ্জয়কে ধরে থানায় নিয়ে যায় বলে ভেদরগঞ্জ থানার ওসি মিন্টু মন্ডল জানান।

তিনি বলেন, “স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি দাবি করেছিলেন, সঞ্জয় রক্ষিতের ফেইসবুকের লেখায় মুসলমান ধর্মালম্বীদের অনুভূতিতে আঘাত হানা হয়েছে। তাই সামাজিক বিশৃঙ্খলা এড়াতে তাকে আটক করা হয়েছিল।”

তবে পরে থানার এসআই বজলুর রহমান বাদী হয়ে ভেদরগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। সেই মামলায় কারাগারে যেতে হয় তাকে। 

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত