আট বছর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প যেবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন, সেই ভোটে রাশিয়া কারসাজি করেছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল। তখন বলা হয়েছিল, হিলারি ক্লিনটনকে হারাতে হস্তক্ষেপ করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আর তা ঘটিয়েছিলেন অন্তর্জালে।
২০১৬ সালে ট্রাম্প বিজয়ী হয়েছিলেন, পরের বার ডেমক্রেট প্রার্থী জো বাইডেনের কাছে হারলেও এবার আবার রিপাবলিকান প্রার্থী হয়ে ভোটের মাঠে ট্রাম্প।
কিন্তু এবার রাশিয়া ডেমোক্রেট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের জয় চায় বলে মন্তব্য করেছেন পুতিন। রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ এবং নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করার পরিকল্পনা করছে বলে ডেমোক্রেটরা অভিযোগ তোলার পরদিনই রুশ প্রেসিডেন্টের এই মন্তব্য আসে।
গত বুধবার ডেমোক্রেট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন অভিযোগ করে, রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম রাশিয়া টুডে (আরটি) যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়াচ্ছে।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল লিসা মোনাকো বুধবার বলেন, তিনটি রুশ কোম্পানি পুতিনের নির্দেশে ভুয়া প্রোফাইল ব্যবহার করে সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়াচ্ছে। তাদের লক্ষ্য ট্রাম্পের পক্ষে সমর্থন বাড়ানো।
এই অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ রাশিয়ার দুজন সংবাদমাধ্যমকর্মীকে অভিযুক্ত এবং কয়েকটি ওয়েবসাইটও জব্দ করে। এছাড়া ১০ জন ব্যক্তি ও দুটি সংস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছে।
এর পরদিনই বৃহস্পতিবার রাশিয়ার ভ্লাদিভস্তকে অনুষ্ঠিত ইস্টার্ন ইকোনোমিক ফোরামের সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে কমলা হ্যারিসে প্রতি সমর্থনের কথা বলেন।
পুতিনকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, আগামী ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি কাকে জয়ী দেখতে চান? জবাবে তিনি কমলা হ্যারিসের ‘সংক্রামক’ হাসির প্রশংসা করে বলেন, রাশিয়া তার জয় দেখতে চায়।
যদিও এটি সরাসরি রাজনৈতিক সমর্থন নয়, তারপরও পুতিনের মন্তব্যটি বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। কারণ পুতিনকে কমলার প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পের দীর্ঘদিনের বন্ধু বলে মনে করা হতো।
ট্রাম্প ও পুতিন যেভাবে ঘনিষ্ঠ হন
যুক্তরাষ্ট্রের ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। এমনকি অভিযোগ ওঠে যে, সেই নির্বাচনে ট্রাম্পের জয় নিশ্চিত করতে রাশিয়া তাকে গোপনে সহযোগিতাও করেছে।
সেই নির্বাচনের আগে ট্রাম্প রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছিলেন। পুতিনও সেসময় ট্রাম্পের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেন এবং বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেন।
সেই সূত্রেই পরে ডেমোক্রেটরা অভিযোগ করে, ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল প্রভাবিত করেছে রাশিয়া। বলা হয়, নির্বাচনের আগে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে ও অন্যান্য কৌশল ব্যবহার করে রাশিয়া ট্রাম্পের প্রচারেয় সমর্থন জুগিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বলেছিল, রাশিয়া ২০১৬ সালের নির্বাচনে ডেমোক্রেট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের প্রচারণাকে জোরদার করার জন্য বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়িয়েছিল।
তবে পুতিন ও ট্রাম্প দুজনই তখন এসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছিলেন।
২০১৬ সালের ৮ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের জয় নিশ্চিত হওয়ার পরপরই টেলিগ্রাম করে তাকে অভিনন্দন জানান রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। এরপর ১৪ নভেম্বর দুজনে সরাসরি টেলিফোনেও আলাপ করেন।
ডেমোক্রেট প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার শেষ মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার দীর্ঘদিনের তিক্ততা চরম আকার ধারণ করেছিল। পরপর কয়েক বছর ধরে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়ে পাল্টাপাল্টি অবস্থান নিয়েছিল ওবামার যুক্তরাষ্ট্র আর পুতিনের রাশিয়া।
বারাক ওবামার সময় সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন দিয়েছিল দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদবিরোধী বিদ্রোহীদের। অন্যদিকে, পুতিন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পক্ষ নিয়েছিলেন।
বারাক ওবামার সময়েই (২০১৪ সালে) পুতিন ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপে আক্রমণ করেন।
কিন্তু ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর রাশিয়া নতুন করে আর যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। ট্রাম্প যখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখন পুতিনও যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী কিছুই করেননি। কোনও আক্রমণ বা যুদ্ধ কিছুই না।
ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকাকালে পুতিনের সঙ্গে তার অন্তত পাঁচবার মুখোমুখি সাক্ষাৎ এবং বৈঠক হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ছিল ২০১৮ সালে ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিংকিতে অনুষ্ঠিত বৈঠকটি। সেদিন ট্রাম্প একাকি পুতিনের সঙ্গে একান্তে প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে আলাপ করেন।
সেই বৈঠকে শুধু তাদের দুজনের দুজন দোভাষী ছাড়া আর কেউ ছিল না। ওই বৈঠকে কী আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তা প্রকাশও করা হয়নি। তবে আলোচনার বিষয় ছিল পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ, রাশিয়ার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, ইউক্রেন ও সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ।
যাইহোক, ২০২০ সালে ডেমোক্রেট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় আসার দুবছর পরই পুতিন ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করেন। যার জেরে স্নায়ুযুদ্ধের অবসানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সম্পর্কের সর্বোচ্চ অবনতি ঘটে।
এমন প্রেক্ষাপটে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেন, বাইডেনের পরিবর্তে তিনি ক্ষমতায় থাকলে ইউক্রেন সংঘাত কখনোই হতো না। ট্রাম্প একাধিকবার এই দাবিও করেন যে, তিনি আবার প্রেসিডেন্ট হলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে শত্রুতার অবসান ঘটাতে পারবেন।
কিন্তু ট্রাম্পের ওই দাবির একমাস পর গত ফেব্রুয়ারিতেই পুতিন ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেন। পুতিন বলেন, ট্রাম্প নয় বরং জো বাইডেনই যদি আবারও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন, তা রাশিয়ার জন্য বেশি ভালো হবে।
পুতিন বলেন, বাইডেন রাশিয়ার জন্য ভালো হবেন, কারণ তিনি ট্রাম্পের চেয়ে অভিজ্ঞ এবং তার সম্পর্ক আগে থেকে ধারণা করা যায়। তিনি একজন প্রথাগত রাজনীতিবিদ।
ফেব্রুয়ারির সেই মন্তব্যের পর গত বৃহস্পতিবার ফের পুতিন ডেমোক্রেট প্রার্থীর প্রতি সমর্থনের কথা বললেন। তবে ডেমোক্রেট শিবির পুতিনের এই সমর্থনকে বিদ্রুপাত্মক মন্তব্য এবং তার আসল অভিপ্রায় গোপন করার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছে।
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোরও বিশ্বাস, রাশিয়া প্রকৃতপক্ষে ট্রাম্পেরই জয় চায়। কারণ রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনের প্রতি সমর্থনের ক্ষেত্রে ট্রাম্প খুব বেশি প্রতিশ্রুতিশীল নন। ফলে ট্রাম্প ক্ষমতায় ফিরলে আখেরে রাশিয়ারই সুবিধা।
পুতিন ঠিক কী বলেছিলেন
রাশিয়া হ্যারিসকে সমর্থন দিবে জানিয়ে পুতিন বলেন, “প্রথমত, জো বাইডেন তার সমস্ত সমর্থকদের কাছে কমলা হ্যারিসকে সমর্থন করার জন্য সুপারিশ করেছেন। আমরা আগে বলেছিলাম বাইডেন আমাদের পছন্দের প্রার্থী। তাই এখন আমরাও তার কথা মতো কাজ করব, আমরাও হ্যারিসকে সমর্থন করব।
“দ্বিতীয়ত, তার হাসি খুব অভিব্যক্তিপূর্ণ এবং সংক্রামক। তার মানে তিনি ভালো করছেন। ট্রাম্প রাশিয়ার উপর তার আগের যে কোনও প্রেসিডেন্টের চেয়ে বেশি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন এবং হ্যারিস যদি ভালো করেন, তবে সম্ভবত তিনি এই ধরনের কাজ করা থেকে বিরত থাকবেন।”
পুতিনের এই মন্তব্যের পর সেখানে উপস্থিত সকলে হো হো করে হেসে উঠেন। পুতিন এও বলেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট কে হবে, সেটা আমেরিকান জনগণের উপর নির্ভর করছে এবং রাশিয়া তাদের সেই পছন্দকে সম্মান করবে।
এছাড়া পুতিন আরও বলেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীন রাজনীতি নিয়ে রাশিয়ার কোনও মাথাব্যথা নেই।
আল জাজিরার বিশ্লেষণে বলা হয়, “পুতিন যেভাবে মন্তব্যটি করে ছিলেন, তা ইঙ্গিত করে যে তিনি হ্যারিসকে নিয়ে ঠাট্টা করছেন বা ট্রল করছেন। আর এমন এক সময়ে তিনি এই মন্তব্য করলেন, যখন জো বাইডেন প্রশাসন অভিযোগ তুলেছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষ নিয়ে রাশিয়া নভেম্বরের ভোটে হস্তক্ষেপের চক্রান্ত করছে।”
সিএনএনসহ অনেক আমেরিকান সংবাদ সংস্থাও বলছে, রুশ প্রেসিডেন্ট আসলে কমলা হ্যারিসকে নিয়ে ট্রোল করছিলেন।
ইউক্রেনের ইনস্টিটিউট অফ আমেরিকান স্টাডিজের বোর্ড প্রধান ভ্লাদিস্লাভ ফারাপোনভ দ্য পলিটিকোকে বলেছেন, “ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে কমলা হ্যারিস বা বাইডেন প্রশাসনের অন্য কোনও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা পুতিন বা রাশিয়ার স্বার্থ আরও ভালোভাবে দেখবেন, এমনটা আশা করাটা অবশ্যই যৌক্তিক নয়। এটিকে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে রাশিয়ার চলমান প্রচেষ্টাকে গোপন করার জন্য আরেকটি ঢাকনা বলে মনে হচ্ছে।”
ফারাপোনভ যোগ করেছেন, “সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে প্রাথমিক ভোট শুরু হতে যাচ্ছে, তার আগে পুতিনের এই মন্তব্য থেকে বোঝা যায় তিনি স্পষ্টতই সময় বুঝতে পারেন।”
হ্যারিসের প্রতি সমর্থন জানানোর পেছনে পুতিনের যে উদ্দেশ্যই থাকুক না কেন, যুক্তরাষ্ট্রের কোনও প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর প্রতি পুতিনের সমর্থন এটাই প্রথম নয়।
২০০০ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই পুতিন বারবার যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে নাক গলিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ২০০৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পুতিন রিপাবলিকান প্রার্থী জর্জ ডাব্লিউ বুশের প্রতি সমর্থন জানান। পুতিন বলেছিলেন, বুশ না জিতলে বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে পড়বে।
২০০৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পুতিন স্পষ্টভাবে কাউকে সমর্থন না করলেও বিশেষজ্ঞরা বলেন, ডেমোক্রেট প্রার্থী বারাক ওবামার জয় ছিল রাশিয়ার পছন্দের ফলাফল।
২০১২ সালের নির্বাচনে পুতিন প্রকাশ্যেই বারাক ওবামাকেই তার পছন্দের বলেছিলেন। সেসময় পুতিন রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ওবামা ‘একজন সৎ ব্যক্তি যিনি সত্যিই উন্নতির জন্য অনেক কিছু পরিবর্তন করতে চান’।
২০১৬ সালে পুতিন ট্রাম্পকে সমর্থন করেন। তবে ২০২০ সালের নির্বাচনে পুতিন কাউকে সমর্থনের কথা প্রকাশ্যে না বললেও ট্রাম্পের পক্ষেই প্রচার চালান বলে অভিযোগ রয়েছে।
২০১৯ সালের অক্টোবরে পুতিন একবার কৌতুক করে বলেছিলেন, “আমরা এবারও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করব।”
ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া কী
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তার প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা হ্যারিসের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করায় তিনি ‘খুব অপমান’ বোধ করেছেন।
শনিবার উইসকনসিনের মোসিনি শহরে এক সমাবেশে বক্তৃতাকালে ট্রাম্প নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের দাবি করায় হোয়াইট হাউসের নিন্দা করেন। তিনি বলেন, এটি একটি মিথ্যা দাবি।
ট্রাম্প বলেন, “ওহ না, আবার সেই রাশিয়া, রাশিয়া, রাশিয়া।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, তিনি যদি সেই সময়ে প্রেসিডেন্ট থাকতেন তবে ইউক্রেনের সংঘাত কখনোই ঘটত না।
“আমি পুতিনকে চিনতাম। আমি তাকে ভালো করেই চিনতাম। আপনারা জানেন, তিনি কমলাকে সমর্থন করার কথা বলেছেন। আমি এতে খুব অপমানিত বোধ করেছি। আমি ভাবছি, কেন তিনি কমলাকে সমর্থন করলেন?”
এসময় ট্রাম্প পুতিনকে ‘একজন দাবা খেলোয়াড়’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, পুতিন হ্যারিস সম্পর্কে ‘হাসি দিয়ে’ কথা বলেছেন কিনা তিনি সেটাও ভাবছিলেন।
এবারের নির্বাচনী প্রচারে ট্রাম্প বারবার বলেন যে, ফের প্রেসিডেন্ট হতে পারলে তিনি ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে অবিলম্বে নতুন শান্তি আলোচনার ব্যবস্থা করবেন এবং রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বন্দ্ব ‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে’ সমাধান করবেন।
এতে আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, ট্রাম্প হয়তো ইউক্রেনকে রাশিয়ার কাছে নতি স্বীকার করতে বাধ্য করবেন।
তবে রাশিয়া ট্রাম্পের এই দাবির প্রতি সন্দেহ প্রকাশ করেছে। রুশ প্রেসিডেন্ট দপ্তরের মুখপাত্র পেসকভ সম্প্রতি বলেছেন, ট্রাম্পের কাছে এমন ‘কোনও জাদুর কাঠি নেই’ যে তিনি রাতারাতি শান্তি স্থাপন করতে পারবেন। আর যুক্তরাষ্ট্রের প্রথমে ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠানো বন্ধ করা উচিৎ, তারপর শান্তি আলোচনা হবে।
তথ্যসূত্র : আল জাজিরা, রাশিয়া টুডে, এপি, সিএনএন