Beta
মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫
Beta
মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫

বিশ্বে কোটা কবে থেকে? এখন কোন দেশে কেমন?

সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে শাহবাগে অবস্থানে আন্দোলনকারীরা। ফাইল ছবি : হারুন অর রশীদ রুবেল
সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে শাহবাগে অবস্থানে আন্দোলনকারীরা। ফাইল ছবি : হারুন অর রশীদ রুবেল
[publishpress_authors_box]

সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। ছয় বছর আগে এক আন্দোলনে কোটা বাতিল করেছিল সরকার। কিন্তু তাতে বাদ সেধেছে হাইকোর্টের এক রায়। এই প্রেক্ষাপটে কোটার ঠিকুজি তালাশে সকাল সন্ধ্যা।

কোটা ব্যবস্থা হলো জনগোষ্ঠী, লিঙ্গ, ভাষা বা অন্যান্য জনসংখ্যাতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে সমাজকে সংগঠিত করার একটি ধারণা। কবে কোথায় এই ধারণার উৎপত্তি, তা নির্দিষ্ট করে বলা যায় না। তবে বিশ্বের প্রাচীন সব সভ্যতাতেই নির্দিষ্ট কারও জন্য কোটা সংরক্ষণ হতো, এমনটাই জানা যায়।

কোটার উদাহরণের মধ্যে রয়েছে জেন্ডার, বর্ণ ও সংরক্ষিত আসনের বিষয়। এর মূল লক্ষ্য হলো জাতীয় পরিসংখ্যান অনুসারে সমাজের সব স্তরে ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে জনসংখ্যার নানান অংশের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা।

এই ব্যবস্থা পুরো দেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। সরকারি আইনের মাধ্যমে সব সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্যই এটি বাধ্যতামূলক করা হয়।

কোটার আবার প্রকারও রয়েছে। কোটার ধারণাটি ক্ষেত্র বিশেষে ভিন্নভাবে ব্যবহৃত হওয়ায় এর প্রকার নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন। তবে মোটাদাগে শিক্ষা, চাকরি, ব্যবসা ও রাজনীতিতে কোটা ব্যবস্থা চালু আছে। আরও অনেক ক্ষেত্রে কোটা ব্যবস্থার ব্যবহার হয়। সেটা নির্ভর করে উদ্দেশ্য, প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষ ও লক্ষ্যের উপর।

বলা হয়, প্রশাসনিক কাঠামো তৈরি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কোটা পদ্ধতি বা ব্যবস্থারও শুরু হয়েছিল। শুরুতে এই পদ্ধতি ছিল সমাজের সুবিধাভোগী অংশের জন্য। এখন যেমন সমাজের পিছিয়ে পড়া, সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে মূল স্রোতে একীভূত করতে কোটার ব্যবহার হয়, অতীতে তেমনটা ছিল না।

মিশরের ফারাওদের শাসনামলে প্রশাসনিক একাধিক পদে কোটা ছিল নির্দিষ্ট কিছু পরিবারের জন্য। শিক্ষা ক্ষেত্রেও ধনী পরিবারের সন্তানদের অগ্রাধিকার দেওয়া হতো এই ব্যবস্থার অধীনে। এছাড়া ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে রাজ্যভিত্তিক কোটা ব্যবস্থাও ছিল।

প্রাচীন ভারতবর্ষে কোটা ব্যবস্থার বিন্যাস ছিল বিচিত্র। পুরোহিত, যোদ্ধা, ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের জন্য আলাদা আলাদা কোটা ছিল। তবে সেই কোটা পদ্ধতির আধুনিকায়ন হয় বর্তমান মহারাষ্ট্রের কোলাপুর রাজ্যের মহারাজা ছত্রপতি সাহুর হাত ধরে। তিনি অ-ব্রাহ্মণ ও পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর জন্য প্রথম কোটা পদ্ধতিতে সংস্কার করেন। অর্থাৎ তার আমলেই প্রথম কোটার সুবিধা সমাজের ধনী শ্রেণীর হাত থেকে গরিবদের কাছে যায়। শুধু যে দরিদ্ররাই এই সুবিধা পেতে শুরু করে তা নয়, সমাজের পিছিয়ে পড়া বর্ণভিত্তিক শ্রেণীর মানুষও এর আওতায় আসতে শুরু করে।

ভারতীয় উপমহাদেশে কোটার আনুষ্ঠানিক প্রচলন প্রথম শুরু হয় ১৯১৮ সালে। সিভিল সার্ভিসে ব্রিটিশদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারায় ভারতীয়দের জন্য আলাদা কোটার ব্যবস্থা করা হয় তখন থেকে। পরবর্তী সময়ে শিক্ষায় অনগ্রসর মুসলমানদের জন্যও আলাদা কোটা রাখা হয়। পাকিস্তান আমলে পিছিয়ে পড়া পূর্ব পাকিস্তানের (বাংলাদেশ) মানুষদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে চালু করা হয় প্রদেশভিত্তিক কোটা।

প্রাচীন ইউরোপে কোটা পদ্ধতি ছিল মূলত বাণিজ্যকেন্দ্রিক। এক অঞ্চল থেকে আরেক অঞ্চলে পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট মাত্রার কোটার ব্যবস্থা তখনও ছিল। এছাড়া গির্জা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য কিছু আসন সংরক্ষণ করা হতো।

আধুনিককালে ইউরোপের কিছু দেশে নারী, প্রতিবন্ধীদের জন্য শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে কোটার সুবিধা রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে কোটা পদ্ধতি অবশ্য খুব একটা পুরনো নয়। অভিবাসীদের কারণে দেশটিকে ১৯২৪ সালে কোটা ব্যবস্থা তৈরি করতে হয়। বছরে কোন অঞ্চলের কত সংখ্যক অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশ করতে পারে, এনিয়েই কোটা করা হয়েছিল। পরবর্তীতে নেটিভ আমেরিকান, কৃষ্ণাঙ্গ ও হিসপ্যানিক গোষ্ঠীর জন্যও আলাদা আলাদা কোটা ব্যবস্থা চালু করা হয়।

পৃথিবীর অধিকাংশ দেশই ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক বৈষম্যের সমস্যায় আক্রান্ত। দেশগুলো তাদের নীতিমালার মাধ্যমে চেষ্টা করে বৈষম্য কমাতে। এক্ষেত্রে সমাজের বিভিন্ন স্তরে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নত করাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ক্ষতিপূরণ হিসেবে এসব জনগোষ্ঠীকে বিশেষ কিছু সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়ে থাকে, যারা তারা শিক্ষা ও চাকরির মতো ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে।

বিশেষ এই সুবিধাকে স্থানভেদে বিভিন্ন নামে আখ্যা দেওয়া হয়। কোথাও একে ‘রিজার্ভেশন সিস্টেম’ বলা হয়। কোথাও আবার ‘অ্যাফারমেটিভ অ্যাকশন’ বা ‘পজিটিভ অ্যাকশন’ নামেও পরিচিত। তবে সর্বোপরি একে ‘কোটা পদ্ধতি’ হিসেবেই ধরা হয়।

বিশ্বের পার্লামেন্টগুলোতে নারীদের অংশগ্রহণ এখনও তুলনামূলক কম। এই অংশগ্রহণের হার মাত্র ২৬ দশমিক ৯ শতাংশ। ২০২১ সালের নভেম্বর পর্যন্ত বিশ্বের ১৩২টি দেশে জেন্ডার কোটা চালু আছে।

কোন দেশে কেমন কোটা

ভারত

ভারতে কোটাকে বলা হয় রিজার্ভেশন বা অ্যাফারমেটিভ অ্যাকশন। দেশটিতে সরকারি চাকরি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও আইনসভায় জনসংখ্যার নির্দিষ্ট অংশের জন্য আসন সংরক্ষণ করা হয়। দেশটিতে আসন সংরক্ষণের এই বিষয়টি সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত। দেশটিতে মূলত এই পদ্ধতির সূচনা হয় ব্রিটিশদের হাত ধরে।

১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর কোটা পদ্ধতিতে সংস্কার আনা হয়। এরপর ১৯৮০ সালে অন্যান্য পিছিয়ে থাকা শ্রেণীর (ওবিসি-আদার ব্যাকওয়ার্ড ক্লাসেস) পক্ষে এবং ২০১৯ সালে দেশের দরিদ্রদের কথা বিবেচনায় কোটা পদ্ধতিতে সাধারণ ক্যাটাগরি যুক্ত করা হয়।

ভারতের সংবিধানের ১৪ (৪), ১৫ (৫) ও ১৫ (৬) অনুচ্ছেদ অনুসারে শিডিউলড কাস্ট (এসসি), শিডিউলড ট্রাইবস (এসটি), সামাজিক ও শিক্ষাগতভাবে পশ্চাৎপদ শ্রেণীর নাগরিকদের জন্য আসন সংরক্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

এছাড়া ১৬ (৪) ও ১৬ (৬) অনুচ্ছেদে রাজ্যের অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল জনগোষ্ঠী বা ইকোনোমিক্যালি উইকার সেকশনস (ইডব্লিউএস)’কে কোটা সুবিধা দেওয়া হয়।

শিডিউলড ট্রাইবের জন্য ৭ দশমিক ৫ শতাংশ, শিডিউলড কাস্টের জন্য ১৫ শতাংশ, অন্যান্য পিছিয়ে থাকা শ্রেণীর জন্য ২৭ শতাংশ, অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য ১০ শতাংশ কোটার প্রচলন রয়েছে। এছাড়াও প্রতিবন্ধীদের জন্য রয়েছে ৩ শতাংশ কোটা।

মোট ৫৯ দশমিক ৫০ শতাংশ কোটার মাধ্যমে ভারতে সরকারী চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ পায়।

পাকিস্তান

পাকিস্তানে কোটা পদ্ধতি শুরু হয় স্বাধীন হওয়ার পরের বছর ১৯৪৮ সালে। দেশটিতে আঞ্চলিক ও বিশেষ কোটা রয়েছে। এই বিশেষ কোটার অধীনে আছে নারী, সংখ্যালঘু, প্রতিবন্ধী ও অনগ্রসর গোষ্ঠী।

দেশটিতে চাকরির ৯২ দশমিক ৫ শতাংশই কোটার মাধ্যমে নিয়োগ হয়। বাকি ৭ দশমিক ৫ শতাংশ নিয়োগ হয় মেধার ভিত্তিতে।

পাকিস্তানে অবশ্য কোটাগুলো প্রদেশের হিসেবে ভাগ করা। যেমন- পাঞ্জাবে ৪০, সিন্ধে ১৯ শতাংশ। এর মধ্যে সিন্ধ প্রদেশের শহরগুলোর জন্য ৪০ শতাংশ এবং গ্রামীণ এলাকার জন্য ৬০ শতাংশ। এছাড়াও খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের জন্য ১১ দশমিক ৫ শতাংশ, বেলুচিস্তানের জন্য ৬ শতাংশ, গিলগিট বালচিস্তানের জন্য ১ শতাংশ এবং কাশ্মীর প্রদেশের জন্য ২ শতাংশ কোটা।

নেপাল

নেপালে সরকারি চাকরিতে বর্ণ, জাত ও লিঙ্গের ওপর ভিত্তি করে কোটাব্যবস্থা রয়েছে। দেশটিতে সাধারণ কোটা ৫৫ শতাংশ এবং সংরক্ষিত কোটা ৪৫ শতাংশ। সংরক্ষিত কোটার মধ্যে নারী, আদিবাসী, মদেশি, দলিত সম্প্রদায়, প্রতিবন্ধী ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে রাখা হয়েছে।

এই ব্যবস্থা নেপালের আইনসভায় স্বীকৃত। ১৯৯৩ সালে নেপালের আইনসভা প্রণীত ‘সরকারি চাকরি আইন’ নামের বিশেষ একটি আইনের মাধ্যমে এই ব্যবস্থা সুরক্ষিত।

ভুটান

ভুটানে ১৬টির বেশি জাতিগোষ্ঠীর বাস। প্রত্যেক গোষ্ঠীর জন্য সরকারি চাকরি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য নির্দিষ্ট কোটা নির্ধারণ করা আছে। ২০২০ সালে দেশটির সরকার কয়েকটি গোষ্ঠীর জন্য সংরক্ষিত আসন সংখ্যা কমিয়ে অন্যদের বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। শারচোপ গোষ্ঠীর কোটা ছিল ১৬ শতাংশ, তা কমিয়ে করা হয় ১২ শতাংশ। নারীদের জন্য সরকারি চাকরি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিতে ন্যূনতম ৩০ শতাংশ কোটা রাখা হয়েছে। আর প্রতিবন্ধীদের জন্য আছে ২ শতাংশ কোটা।

মালয়েশিয়া

মালয়েশিয়ার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ মালয়, ২০ দশমিক ৬ শতাংশ চীন, ৬ দশমিক ২ শতাংশ ভারতীয় ও অন্যান্য ১০ দশমিক ৭ শতাংশ।

দেশটিতে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে জাতিগত কোটার মোট ৫৫ শতাংশ সুবিধা পায় মালয় জনগোষ্ঠী। উচ্চশিক্ষা, চাকরি, স্বল্প মূল্যে বাসস্থানসহ সব ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ সুবিধা ভোগ করে মালয় জনগোষ্ঠী। আর বাকি ৪০ শতাংশ সুবিধা পায় অন্যরা।

চীন

চীনের মোট জনসংখ্যার ৮ শতাংশ হচ্ছে বিভিন্ন জাতিগত ও আদিবাসী সম্প্রদায়। এই জনগোষ্ঠীর জন্য চীন সরকার স্বীকৃতভাবে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে অন্যদের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম যোগ্যতার বিধান রেখেছে।

চীনে নারীদের জন্য একসময় ২০ শতাংশ কোটা ছিল। তবে গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকে ওই কোটা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য দেশটিতে এখনও ১ দশমিক ৫ শতাংশ চাকরি সংরক্ষিত।

জাপান

অন্যান্য দেশের মতো জাপানেও আছে কোটা ব্যবস্থা। বুরাকুমিন ও কোরীয় সম্প্রদায়কে সরকারি চাকরিতে বিশেষভাবে প্রাধান্য দেওয়া হয়। এছাড়া ব্যক্তি মালিকানাধীন কিংবা বেসরকারি কোনও পণ্য ও সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মীসংখ্যা ৫ শতাধিক হলে বুরাকুমিন ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের জন্য ৫ শতাংশ কোটার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

সৌদি আরব

সৌদি আরবে ২০১১ সালে নিতাকাত নামে কোটা পদ্ধতি চালু করা হয়। দেশটির সরকারি ও বেসরকারি খাতে সৌদি নাগরিকদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিতের জন্যই পদ্ধতিটি গ্রহণ করে সৌদি রাজতন্ত্র।

সেখানে শিল্প ও কোম্পানির আয়তন অনুসারে ছয় ক্যাটাগরিতে কোটা ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হলো-প্লাটিনাম, হাই গ্রিন, মিড গ্রিন, লো গ্রিন, ইয়েলো এবং লাল। প্রত্যেক ক্যাটাগরিতে সৌদি নাগরিকদের চাকরি দেওয়ার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট অনুপাত রয়েছে। আর এটি প্রায় ২৫ থেকে ৪০ শতাংশ।

কানাডা

কানাডায় নারী, প্রতিবন্ধী, আদিবাসী ও সংখ্যালঘুদের জন্য কোটা রয়েছে। এই চার শ্রেণীর জন্য মোট কত শতাংশ কোটা বরাদ্দ করা হয়েছে, তা দেশটির এমপ্লয়মেন্ট ইকুইটি অ্যাক্টে উল্লেখ নেই। তবে এই কোটার হার মেধার চেয়ে অর্থাৎ ৫০ শতাংশের বেশি নয়।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন

নারীর ক্ষমতায়নের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো ২০১২ সালে এক পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এর মাধ্যমে ২০২০ সালের মধ্যে নন-এক্সিকিউটিভ চাকরিগুলোতে যেন ৪০ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব করতে পারে।

এছাড়া শারীরিকভাবে অক্ষমদের জন্য ৪ শতাংশ কোটা রাখা হয়েছে। বাকি ৫৬ ভাগ নিয়োগ হয় মেধার ভিত্তিতে।

যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রে কোটা পদ্ধতিকে বলা হয় অ্যাফারমেটিভ অ্যাকশন পলিসি। নীতির অধীনে দেশটিতে কৃষ্ণাঙ্গ, হিসপ্যানিক জাতি, নেটিভ আমেরিকানদের চাকরি ও যথাযথ শিক্ষার বিষয়টি সুরক্ষিত করা হয়। এই নীতি সরকারি ও বেসরকারি চাকরির ক্ষেত্রে প্রয়োজ্য।

১৯৩৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্টের আমলে অ্যাফারমেটিভ অ্যাকশন পলিসি আলোচনায় আসে। এরপর ১৯৬১ সালে প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির নির্বাহী আদেশে অ্যাফারমেটিভ অ্যাকশন পলিসি কার্যকর হয়।

এর মথ্যে জাতিগত ও নারী কোটা অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত এই নীতি কার্যকর ছিল। কিন্তু ওই বছর দেশটির সুপ্রিম কোর্ট এক রায়ে জাতিগত কোটা পদ্ধতিকে অসাংবিধানিক আখ্যা দেয়।

২০২৩ সালে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট এক ঐতিহাসিক রায়ে দেশটির ইউনিভার্সিটিগুলোতে ভর্তির জন্য জাতিগত কোটা ব্যবহার নিষিদ্ধ করে। তখন এই রায়ের বিরোধিতা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

বর্ণ বৈষম্যকে একটি শাস্তিযোগ্য ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে দেখা হয় দেশটিতে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত