পুলিশের মামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা; মামলায় কারও নাম উল্লেখ না করার বিষয়টি নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন এই প্ল্যাটফর্মের নেতারা।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসা ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ শনিবার নতুন কর্মসূচি ঘোষণার সংবাদ সম্মেলনে মামলার প্রতিক্রিয়া জানায়।
পুলিশের এই মামলা দায়েরকে সরকারের দমন-পীড়নের অংশ হিসাবে দেখছে এই আন্দোলনকারীরা।
সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহাল করে হাইকোর্টের রায়ের পর জুলাই মাসের শুরু থেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে প্রায় প্রতিদিন সড়কে অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি চালাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
বুধবার আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা দেওয়ার পর পুলিশ এরপর সড়কে নেমে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করলে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল।
তবে তাদের দাবি সরকারের প্রতি এবং তা কোটা সংস্কারের জন্য- এই বক্তব্য তুলে বৃহস্পতিবার পুলিশের বাধা উপেক্ষা করেই শাহবাগ অবরোধ করে। সেখানে নেওয়া একটি সাঁজোয়া যান আন্দোলনকারীদের প্রতিরোধের মুখে সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছিল পুলিশ।
সেই ঘটনা ধরেই শুক্রবার রাতে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করে পুলিশ। সেই মামলায় শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে পুলিশের যানবাহন ভাংচুর, পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা এবং মারধরের অভিযোগ আনা হয়েছে।
শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংবাদ সম্মেলনে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’র অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ বলেন, “ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠন ক্যাম্পাসে বাহির থেকে লোক নিয়ে এসে মহড়া দিল, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যখন আন্দোলনের বিপক্ষে কথা বলল, তখনই পুলিশ ছাত্রদের সাংবিধানিক অধিকার নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে বাধা দেওয়ার মাধ্যমে উত্তেজনা উস্কে দিয়েছে।”
মামলার প্রসঙ্গে আন্দোলনকারীদের আরেক সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “সেদিন বলল, ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। আজকে কেন পুলিশ মামলা করল? পুলিশের কাছে জবাবদিহি চাচ্ছি।”
পুলিশের করা মামলায় আসামির তালিকায় সুনির্দিষ্ট কারও নাম উল্লেখ না করে অনেক শিক্ষার্থী লেখার বিষয়টি তুলে তিনি বলেন, “এখানে কারা নেতৃত্ব দিচ্ছে, সেটা স্পষ্ট।
“বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের প্রতিনিধির মাধ্যমে এই আন্দোলন পরিচালনা হচ্ছে। আমরা আপনাদের সামনে উপস্থিত আছি। তারা কেন অজ্ঞাতনামাদের নামে মামলা দিল? যদি মামলা দিতেই হয়, আমদের নামে যেন দেয়?”
২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “মামলা-হামলার ভয় দেখিয়ে লাভ হবে না।”
আসিফ মাহমুদ অভিযোগ করেন, বিভিন্ন জেলায় আন্দোলনকালীদের ওপর হামলা হচ্ছে প্রশাসনের মদদে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিক সমিতির সদস্য একজন সদস্যকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা দুই ঘণ্টার বেশি সময় আটকে রেখে নির্যাতন করে।
সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি হিসাবে রবিবার গণপদযাত্রা করে রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি পেশের ঘোষণা দেওয়া হয়।