সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের সময় আবু সাঈদসহ সব হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষকরা। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবিও জানান তারা।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টায় বেরোবির শেখ রাসেল মিডিয়া চত্বরে এ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষকরা। এসময় শিক্ষকরা একটি মৌন মিছিল বের করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাসের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে আবার শেখ রাসেল মিডিয়া চত্বরে এসে শেষ হয়।
অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. তুহিন ওয়াদুদ, ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মতিউর রহমান, মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শেখ মাজেদুল হক, একাউন্টিং এ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ওমর ফারুক, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদসহ অন্যান্য বিভাগের শিক্ষকরা। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন প্রায় অর্ধশত শিক্ষক।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলন চলাকালে গত ১৬ জুলাই রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে পুলিশ ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। ওই সংঘর্ষের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন আবু সাঈদ।
শিক্ষকরা বলেন, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছে তারা ন্যায়বিচার পাবে কিনা তা নিয়ে শিক্ষক সমাজ সন্দিহান। সরকার দলীয় প্রশাসনে জনগণের টাকায় বেতনভোগী কর্মচারীরা জনগণের টাকায় কেনা অস্ত্র দিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের গুলি, হত্যা ও গুম করল।”
শিক্ষকরা আরও বলেন, “আমরা দেখলাম আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ তাকে রাতের মধ্যেই দাফন করার জন্য উঠেপড়ে লাগল। এমনকি পুলিশের বড় বড় কর্মকর্তারা লাইন দিয়ে তাদের হেফাজতে আবু সাঈদের মৃতদেহ নিয়ে গেছে। এরকম অবিচার বিচারহীনতার সংস্কৃতি ছিল পাকিস্তান শাসন আমলে।”
আবু সাঈদের হত্যাকাণ্ডের পর বেরোবির উপাচার্যের বাসায় হামলার প্রসঙ্গ টেনে শিক্ষকরা বলেন, “আর পুলিশ চেয়ে চেয়ে দেখল। মুক্তিযুদ্ধের সময় দেখেছিলাম রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে এদেশের পুলিশ কী অসাধারণ ভূমিকা পালন করেছে। মুক্তিযুদ্ধের পুলিশ আর এখনকার সময়ের পুলিশের কত পার্থক্য!”