বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে সোমবার ময়মনসিংহে বিক্ষোভ মিছিলের চেষ্টা করে সফল হয়নি শিক্ষার্থীরা। পুলিশের বাধার মুখে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেছে তারা।
৯ দফা দাবিতে সোমবার বিকালে বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচির ডাক দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই নগরীতে র্যাব, পুলিশ, বিজিবি ও আনসার সদস্যদের কঠোর অবস্থান দেখা যায়।
নগরীর শহীদ ফিরোজ-জাহাঙ্গীর চত্বর এলাকায় পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি এবং এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের সমাবেশের খবরে আশপাশের এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে নগরীর গাঙ্গিনাপাড় ট্রাফিক মোড়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাদের ঘিরে থাকতে দেখা যায় পুলিশ সদস্যদের।
সরকারি চাকরিতে নিয়োগে কোটা সংস্কার দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন গত সপ্তাহে সহিংসতায় গড়ানোর পর দুই শতাধিক নিহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কারফিউ জারি করে সেনা মোতায়েন করতে হয় সরকারকে।
এদিকে সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে কোটা ৫৬ শতাংশ থেকে ৭ শতাংশে নামিয়ে আনার পর আন্দোলনের আর যৌক্তিকতা নেই বলে সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে।
আন্দোলনকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয়জন সমন্বয়ককে ঢাকায় গোয়েন্দা পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার পর তাদের মাধ্যমে আন্দোলনের প্রত্যাহারের একটি বার্তাও দেওয়া হয়েছে।
তবে বাইরে থাকা সমন্বয়করা সোমবার বিক্ষোভের কর্মসূচি ঘোষণা করে জানান, তাদের আন্দোলন চলবে। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে ময়মনসিংহে বিক্ষোভ করতে চেয়েছিল শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশে আন্দোলনের সমন্বয়করা বলেন, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে আন্দোলন চলবে। ঢাকা থেকে যে কর্মসূচি দেওয়া হবে আমরা তা যথাযথভাবে পালন করব। যত বাধা আসুক, শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে মাঠে থাকবে।”
ময়মনসিংহ নগরীর মিন্টু কলেজ সংলগ্ন যে জায়গায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থী রোদোয়ান হোসেন সাগর নিহত হন, সেই জায়গাটিকে ‘শহীদ সাগর চত্ত্বর’ ঘোষণার দাবি জানানো হয় সমাবেশে।
সমাবেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক আশিকুর রহমান, আরিফুল ইসলাম, রাকিবসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশ শেষে পুলিশ সদস্যরা শিক্ষার্থীদের দ্রুত সরে যেতে বললে তারা চলে যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহিনুল ইসলাম ফকির বলেন, “কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে একটি চক্র নাশকতা করার চেষ্টা করছে। আমরা শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সমর্থন জানাই। তবে কেউ যেন তাদের আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে নাশকতা করতে না পারে, সে জন্য নগরীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্তক অবস্থানে রয়েছে।”