বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে র্যাবের অবস্থান ছিল না বলে দাবি করেছেন বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস।
তিনি বলেছেন, তার বাহিনী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সঙ্গে ছিল এবং এখনও রয়েছে।
ঢাকার কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন এই সেনা কর্মকর্তা।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গত জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হলে তা দমনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করেছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।
কয়েকশ মানুষের প্রাণহানির পর তা গণবিস্ফোরণে রূপ নিলে গত ৫ আগস্ট পতন ঘটে শেখ হাসিনার সরকারের। এরপর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়।
ওই আন্দোলনে দেড় হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল বলে প্রাথমিক হিসাব দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
আন্দোলন দমনে হেলিকপ্টার থেকে গুলিবর্ষণের অভিযোগও উঠেছিল পুলিশ ও র্যাবের বিরুদ্ধে। তবে গত বুধবার তা অস্বীকার করে র্যাবের মুখপাত্র বলেছিলেন, তারা হেলিকপ্টার থেকে কোনও গুলি ছোড়েনি।
তার চারদিন বাদে ঢাকা থেকে অপহৃত একটি শিশুকে পিরোজপুর থেকে উদ্ধারের খবর জানাতে সংবাদ সম্মেলনে এলে সাংবাদিকরা লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌসের কাছে আন্দোলনের সময় এই বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে আবার প্রশ্ন করেন।
জবাবে তিনি বলেন, “র্যাব সময় সময় জনগণের সাথে আছে।
“ছাত্র-জনতার ওপরে র্যাবের কোনও সদস্য লিথাল উয়েপন (প্রাণঘাতী অস্ত্র) ব্যবহার করেনি। সাধারণ ছাত্র-জনতার যে আন্দোলন ছিল, সেটার সঙ্গে আমরা ছিলাম, সেটার সঙ্গে আমরা আছি। এবং এই যে অভ্যুত্থান সফল করার জন্য আমাদের যা যা করণীয়, আমরা তা তা করে যাচ্ছি।”
৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া ১ হাজার ১৭০ জনকে র্যাব গ্রেপ্তার করেছে বলে দাবি করেন মুনীম।
“এর মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের ৩৯ জনকে আমরা গ্রেপ্তার করেছিলোম।”
ছাত্র-জনতার দিকে গুলিবর্ষণকারী যাদের ছবি-ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় এসেছিল, তা দেখে চিহ্নিত করে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর জনরোষে পড়া পুলিশের অনেক সদস্য বাহিনীতে ফিরে না এলেও র্যাবের ক্ষেত্রে তেমন কিছু ঘটেনি বলে জানান লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম।
তিনি বলেন, “আমাদের কোনও সদস্য পালিয়ে যায়নি, র্যাবের কোনও সদস্য কর্মবিরতিতে যায়নি। আমরা প্রথম থেকে একসঙ্গে ছিলাম, শেষ পর্যন্ত আমরা একসঙ্গে ছিলাম।”
তিনি জানান, ভিন্ন ভিন্ন আটটি বাহিনী থেকে ১০ হাজারের মতো সদস্য নিয়ে গঠিত র্যাবের ৪৪ শতাংশই আসে পুলিশ থেকে।