কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী লোকসভা নির্বাচনে দুটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন; এরমধ্যে একটিতে তার বিজয় ঘোষণা হয়েছে, আরেকটিতেও তার জয় ঘোষণার অপেক্ষায়।
ঘোষিত ফলে দেখা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিজেপির প্রার্থী হয়ে যে ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন, নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে রাহুলের ভোট তার চেয়ে বেশি।
ভারতে অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে ছয় সপ্তাহে সাত দফায় ভোটগ্রহণের পর মঙ্গলবার একযোগে ফল ঘোষণা শুরু হয়েছে।
মোদী প্রার্থী হন উত্তর প্রদেশের বারাণসিতে। সেখানে ৬ লাখ ১২ হাজার ৯৭০ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন তিনি। তার প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসের রাজ্যপ্রধান অজয় রাই পেয়েছেন ৪ লাখ ৬০ হাজার ৪৫৭ ভোট। তাদের ভোটের ব্যবধান ১ লাখ ৫২ হাজার ৫১৩।
উত্তর প্রদেশেরই রায়বেরেলি আসনে প্রার্থী হন রাহুল। পাশাপাশি কেরালার ওয়েনাদ আসনেও প্রার্থী হন তিনি।
ওয়ানাদে ৬ লাখ ৪৭ হাজার ভোট পেয়ে রাহুল নির্বাচিত হয়েছেন বলে ভারতের নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে তথ্য পাওয়া গেছে। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি সিপিআইর প্রার্থী অ্যানি রাজা পেয়েছেন ২ লাখ ৮৩ হাজার ভোট। বিজেপির কে সুরেন্দ্রন পেয়েছেন ১ লাখ ৪১ হাজার ভোট।
রায়বেরেলি আসনেও নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির দীনেশ প্রতাপ সিংয়ের চেয়ে ৩ লাখের বেশি ভোটে রাহুল এগিয়ে আছেন বলে বিকাল পর্যন্ত ঘোষিত ফলে দেখা যায়। এরই মধ্যে রাহুলের কাছে পরাজয় মেনে নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়েছেন দীনেশ সিং।
তিনি বলেছেন, তার দল বিজেপির কর্মীরা কংগ্রেসের ঘাঁটি রায়বেরেলিতে জয় নিশ্চিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছিল, তবে জনরায়ের ওপর তাদের কোনও হাত ছিল না।
রায়বেরেলি আসনে অতীতে সোনিয়া গান্ধী ছেলের মতো বিশাল ব্যবধানে জয় আর কখনও দেখা যায়নি বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
২০০৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত রায়বেরেলি আসন থেকে চারবার প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামেন কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী। ২০১৯ সালে সর্বোচ্চ ১ লাখ ৬৭ হাজার ভোটের ব্যবধানে বিজেপির দীনেশ প্রতাপ সিংকে হারিয়েছিলেন তিনি।
এবারের লোকসভা নির্বাচনে রায়বেরেলি আসনে না দাঁড়িয়ে সেটি ছেলেকে ছেড়ে দেন সোনিয়া। মা সোনিয়া এবং দল কংগ্রেসকে হতাশ করেননি রাহুল।
প্রথমবার রায়বেরেলিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশ নিয়ে বিপুল ভোটে এগিয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছেন গান্ধী পরিবারের ৫৩ বছর বয়সী এই সদস্য।
ঐতিহাসিকভাবে উত্তর প্রদেশের রায়বেরেলি কংগ্রেসের ঘাঁটি হিসেবে বিবেচিত। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, তার স্বামী ফিরোজ গান্ধীর মতো বাঘা বাঘা রাজনীতিকরা এই আসন থেকেই নির্বাচনে লড়েছিলেন।
রাহুল ২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত উত্তর প্রদেশেরই আমেথি আসন থেকে জয়ী হয়ে লোকসভায় আসন িনয়েছিলেন। কিন্তু ২০১৯ সালের নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী অভিনেত্রী স্মৃতি ইরানির কাছে হেরে যান তিনি। সেবার কেরালার আসনে জয়ী হওয়ার মধ্য দিয়ে পার্লামেন্ট সদস্য পদ ধরে রাখেন তিনি।
আমেথিতে এবার রাহুল না দাঁড়ালেও স্মৃতি ইরানি হারতে যাচ্ছেন। পূর্ণাঙ্গ ফল ঘোষণা না হলেও কংগ্রেসের কিশোরী লাল তার চেয়ে ৬২ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে আছেন।