‘ভারতীয় রাজনীতিতে অন্যতম বিভেদ সৃষ্টিকারী ও ‘হিন্দুত্ববাদী’ নেতা হিসেবে পরিচিত ভিনায়ক দামোদর সাভারকারের চরিত্রে অভিনয়ে জন্য আগেই খবর হয়েছেন জনপ্রিয় বলিউড তারকা রনদীপ হুডা। এবার ‘স্বতন্ত্রা ভীর সাভারকার’ (স্বতন্ত্র বীর সাভারকর) সিনেমায় শুটিংয়ের ফাঁকে ইনস্টাগ্রামে নিজের ভগ্ন শরীরের উর্ধ্বাংশের একটি ছবি দিয়ে আবারও নেটিজানদের আলোচনায় এসেছেন তিনি।
সাভারকারকে ‘হিন্দুত্ববাদী মতাদর্শের জনক’ মনে করেন কংগ্রেসের অনেক নেতা। ঐতিহাসিকদের একটা বড় অংশ দাবি করেন, আন্দামানের সেলুলার জেলে বন্দি থাকার সময়ে সাভারকার ব্রিটিশ সরকারের কাছে একাধিকবার ক্ষমাভিক্ষা করে চিঠিও লিখেছিলেন। এর ঠিক উল্টো অবস্থানে রয়েছে বিজেপি। কেউ কেউ মনে করেন, ভারতের জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধী হত্যার পেছনে সাভারকরের ভূমিকা রয়েছে।
সাভারকারের বায়োপিকে মূল চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে তার মতোই শারিরীক গঠন বানিয়েছেন রনদীপ। এজন্য তাকে নিদারুণ পরিশ্রম করতে হয়েছে।
সাভারকারের চরিত্রে তাকে কেমন মানাবে সে সংক্রান্ত ছবি ও চলচ্চিত্রের প্রমোশন বা টিজার আগে থেকেই নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে প্রকাশ করছিলেন এই তারকা।
সেই ধারাবাহিকতাতেই এবার ইনস্টাগ্রামে দিয়ে খালি গায়ে কালো শর্টস পরা ছবি দেন রনদীপ। সিনেমার সেটের পর্দার পেছন থেকে তোলা হয়েছে ওই ছবিটি। এতে স্পষ্ট ফুটে উঠেছে, দামোদর সাভারকারের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য রনদীপকে নিজের দুর্দান্ত ফিগার কতোটা ভাঙতে হয়েছে!
ছবিটি শেয়ার করে রনদীপ লিখেছেন, ‘কালাপানি’। মনে করা হচ্ছে ছবিটি সেই সময়ে তোলা হয়েছিল যখন রনদীপ সিনেমার প্রয়োজনে ব্রিটিশ আমলের কালাপানি কারাগারের দৃশ্যের শুটিং করছিলেন।
ভিনায়ক দামোদর সাভারকারের নাতি রঞ্জিত সাভারকর এর আগে সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছিলেন, এই বায়োপিকে অভিনয়ের জন্য রনদীপের ৩০ কেজি ওজন কমানো লেগেছে।
মুক্তির অনেক আগে থেকেই ‘ভীর সাভারকর’ সিনেমাটি স্বত্ব নিয়ে আইনি জটিলতায় পড়ে। শুরুতে মহেশ মাঞ্জেকরের পরিচালনার কথা থাকলেও তাকে সরে দাঁড়াতে হয়। তার জায়গায় পরিচালকের দায়িত্বে আসেন খোদ রনদীপ হুডাই। ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে, সিনেমার চিত্রনাট্য লেখাতেও উৎকর্ষ নৈতাথানির সঙ্গে হাত লাগিয়েছেন রনদীপ। এই সিনেমায় সাভারকরের স্ত্রী ‘যমুনা বাই’ চরিত্রে রয়েছেন অভিনেত্রী অঙ্কিতা লোখান্ডে।
‘মনসুন ওয়েডিং’ সিনেমা দিয়ে রনদীপ হুডার হিন্দি চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় । গ্যাংস্টার নিয়ে সিনেমা ‘ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন মুম্বাই’ (২০১০) এর মাধ্যমে তার ক্যারিয়ারে টার্নিং পয়েন্টের শুরু। এরপর একে একে সাহেব, বিবি অর গ্যাংস্টার (২০১১), রং রাসিয়া (২০১৪), হাইওয়ে (২০১৪) এবং সরবজিৎ (২০১৪) সিনেমায় অভিনয়ের জন্য সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করেন।
এছাড়াও জান্নাত টু (২০১২), জিসম টু (২০১২), ককটেল (২০১২), কিক (২০১৪), সুলতান (২০১৬), বাঘী ২ (২০১৮)- এর মতো সফল সিনেমায় তিনি ছিলেন অন্যতম মূল চরিত্র। ২০২০ সালে ‘এক্সট্রাকশন’ মুভি দিয়ে হলিউডেও আত্মপ্রকাশ করেন রনদীপ।
তার অভিনীত আরেকটি বায়োপিক ‘রং রসিয়া’ বিখ্যাত ভারতীয় পেইন্টার রাজা রাভি ভার্মার ওপর। সেখানেও তিনি মূল চরিত্রে ছিলেন।