পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদী গ্রাফিতি আঁকতে বাধা দেওয়া ও মুছে দেওয়ার প্রতিবাদে রাঙ্গামাটিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, পাহাড়ের মানুষ এখনও স্বাধীনভাবে নিজের মত প্রকাশ করতে পারে না। পাহাড়ের মানুষ এখনো স্বাধীন হয়নি। তিন পার্বত্য জেলাজুড়ে শিক্ষার্থীরা গ্রাফিতি আঁকলে সেখানে লাঠিচার্জ করে শিক্ষার্থীদের তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করা হয়।
শুক্রবার সকালে রাঙ্গামাটি জেলাপ্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি (আদিবাসী) ছাত্র সমাজের’ ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল শেষে সমাবেশ করেন তারা।
সমতলের শিক্ষার্থীরা স্বাধীনভাবে গ্রাফিতি করতে পারলে পাহাড়ের শিক্ষার্থীদের ওপর বাধা কেন দেওয়া হয়? এমন প্রশ্নও তোলেন তারা। শিক্ষার্থীরা বলেন, মানুষের অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে শত শত সত্য ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী কিকো দেওয়ানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন কর্ণফুলী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী উচামং মারমা, রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ক্যাচিনুং মারমা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি জিকো তালুকদার ও সমাজসেবক নবশীষ চাকমা।
বক্তারা আরও বলেন, জোর-জবরদস্তি করে কেউ আমাদের অধিকার, আমাদের ভূমি কেড়ে নিতে পারবে না। ন্যায়-অধিকার ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে।
সমাবেশে সংবিধানে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী হিসেবে নয় ‘আদিবাসী’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য ৫ শতাংশ কোটা পুনর্বহাল, পাহাড়ে ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত বন্ধ করা, উন্নয়ন ও পর্যটনের নামে পাহাড়িদের উচ্ছেদ বন্ধ করার দাবি তোলা হয়। বৃহত্তর আন্দোলন বেগবান করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বানও জানান বক্তারা।
সমাবেশের আগে রাঙ্গামাটি জেলা শহরের কুমার সুমিত রায় জিমনেসিয়াম প্রাঙ্গন থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলাপ্রশাসক কার্যালয়ের সামনে আসে। সমাবেশ চলাকালে রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে ঘণ্টাব্যাপী যান চলাচল বন্ধ থাকে।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গত জুলাইয়ের প্রথমে আন্দোলন শুরু করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। মাসের মাঝামাঝিতে সেই আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নেয়। এরপর ধীরে ধীরে এই আন্দোলন পরিণত হয় সরকার পতনের আন্দোলনে। ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এরপর সারা দেশব্যাপীই প্রতিবাদী গ্রাফিতি আঁকা শুরু করে শিক্ষার্থীরা। এরই মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় গ্রাফিতি আঁকতে বাধা দেওয়া ও মুছে দেওয়ার অভিযোগ তোলেন শিক্ষার্থীরা।