রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে এক কয়েদির মৃতুকে কেন্দ্র করে কারাগারের ভেতরে উত্তেজনা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে কারারক্ষীদের সঙ্গে কয়েদিদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাঁকা গুলি ছোড়েন কারারক্ষীরা।
শুক্রবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে রফিকুল নামের এক কয়েদির লাঠির আঘাতে বাহারুল বাদশা নামের আর এক কয়েদি নিহত হয়। এরপরই কারাগারের ভেতরে অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হয়।
রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান জানান, কারাগারের ভেতরের একটি গাছ থেকে আমড়া পেড়ে খাওয়াকে কেন্দ্র করে রফিকুল ও বাহারুল নামে দুই কয়েদির মধ্যে ঝগড়া লাগে। বিবাদের একপর্যায়ে রফিকুল লাঠি দিয়ে বাহারুলের মাথায় আঘাত করেন।
এরপর কারাগারের নার্স এসে বাহারুলের শরীরের পালস পাচ্ছিলেন না। তাকে দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বাহারুল বাদশা রংপুরের পীরগঞ্জের বাহাদুর মিয়ার ছেলে। তার মৃত্যুর পর কারাগারের বন্দিদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মোবাশ্বের হাসান ও ৬৬ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কারাগারে গিয়ে বিক্ষুব্ধ কয়েদিদের শান্ত থাকার জন্য আহ্বান জানান।
কারাগারের আশপাশে থাকা ব্যবসায়ীসহ স্থানীয়রা গুলির শব্দ শোনার কথা জানান। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি বলেন, সকাল থেকে কারাগারের ভেতর থেকে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। এ সময় মানুষজন ছুটাছুটি করছিল। রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কে চলাচলকারী গাড়িগুলোও থামিয়ে দেওয়া হয়। সবার মধ্যে তখন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দেয়।
ওই ঘটনার পর পরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কারাগারের ভেতরে এবং বাইরে বাড়তি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়।
মোবাশ্বের হাসান বলেন, কারাগারের ভেতরে ও বাইরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ঘটনায় শাহজাহান ও মোতালেব নামের দুই কারারক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া একটি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।