Beta
শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫
Beta
শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের পর কী বলছে তারা

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগে সমাবেশে হাসনাত আব্দুল্লাহ।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগে সমাবেশে হাসনাত আব্দুল্লাহ।
[publishpress_authors_box]

জুলাই অভ্যুত্থানের পরপরই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি তুলেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। আদালতে গিয়ে পিছু হটে এলেও দাবিটি জারি রেখেছিল।

অভ্যুত্থানের নয় মাস পর বৃহস্পতিবার আবার রাজপথে ফেরে অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতারা; প্রথমে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান নেয় তারা; পরে অবস্থান নেয় শাহবাগে।

তাদের অবস্থান কর্মসূচির মধ্যে শনিবার রাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি সভায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে বিচার কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত আসে।

একে নিজেদের আন্দোলনের বিজয় হিসাবে দেখছেন অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতারা; যারা এখন নানা ভূমিকায় রয়েছেন।

নয় মাস পর যার নেতৃত্বে বিক্ষোভ শুরু হয়, সেই হাসনাত আব্দুল্লাহ সরকারি সিদ্ধান্ত আসার পর ফেইসবুকে লিখেছেন, “লীগ ধর/জেলে ভর।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত এখন নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির মুখ্য সংগঠকের দায়িত্বে রয়েছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ লিখেছেন- “লীগ নিষিদ্ধ হলো!” তিনি এখন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়কের পদে রয়েছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক মো. সারজিস আলম আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে হাসনাতের সঙ্গে রাজপথে থাকলেও প্রতিক্রিয়া জানিয়ে নতুন করে কিছু লেখেননি ফেইসবুকে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তটিকে ‘ঈদ মোবারক’ বলে প্রথম প্রতিক্রিয়া জানান।

এরপর তিনি ফেইসবুকে আরেক পোস্টে লেখেন, “আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণের সাথে সাথে তাদের ধামাধরাদের কথাও মাথায় রাইখেন। এত বছর ফিনান্সিয়ালি, কালচারালি যারা তাদের সার্ভ করছে তাদের সুশীল চেহারা ভুইলেন না। সমূলে বিনাশ না করতে পারলে এদের ঝাড়বংশ ঠিকই সাপ হয়ে উঠবে।”

তাবাসসুম আরও লিখেছেন, “আর হ্যাঁ, নতুন বাংলাদেশে নতুন করে আর কোনও প্রোপাগাণ্ডা চলতে দিয়েন না। এই আন্দোলনকে বিভক্ত করার জন্য লীগীয় স্টাইলে যে হলুদ সাংবাদিকতা চলল, সেটা আমরা মনে রাখব। নতুন করে কাউকে আর প্রআ-দিল্লী স্টারের মত গুণ্ডা হয়ে উঠতে দেয়া হবে না।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক থেকে এখন এনসিপির আহ্বায়কের দায়িত্বে আসা নাহিদ ইসলাম সরকারকেও সাধুবাদ জানিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দাবি তুলেছেন।  

তিনি লিখেছেন, “দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন চাই। তবে জুলাই ঘোষণাপত্র ও বিচার প্রশ্নে আমাদের সংগ্রাম জারি রাখতে হবে। সারাদেশের ফ্যাসিস্ট গণহত্যাকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে নিষিদ্ধ ঘোষিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নিবন্ধন দ্রুত সময়ের মধ্যে বাতিল করতে হবে।”

তার এই বক্তব্যই জাতীয় নাগরিক পার্টি তাদের বক্তব্য হিসাবে প্রকাশ করেছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক থেকে এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টার পদে থাকা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সরকারের সিদ্ধান্ত জানিয়ে ফেইসবুকে পোস্ট দেন শনিবার রাতেই।

সেখানে তিনি লিখেছেন- “উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিচার কার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে সাইবার স্পেস-সহ আওয়ামী লীগ এর যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।”

জুলাই অভ্যুত্থানের নেপথ্যের কারিগর হিসাবে খ্যাতি পাওয়া মাহফুজ আলম এই সময়ে একটি ফেইসবুক পোস্ট দিয়েছেন, যা অনেকে শেয়ার করছেন।

‘দুটি কথা’ শিরোনামের এই পোস্টে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ লিখেছেন, “৭১ এর প্রশ্ন মীমাংসা করতেই হবে। যুদ্ধাপরাধের সহযোগীদের ক্ষমা চাইতে হবে। বাংলাদেশে রাজনীতি করতে হলে পাকিস্তানপন্থা বাদ দিতে হবে।

“পাকিস্তান এদেশে গণহত্যা চলিয়েছে। (পাকিস্তান অফিসিয়ালি ক্ষমা চাইলেও,  তদুপরি আবারো ক্ষমা চাইতে রাজি হলেও যুদ্ধাপরাধের সহযোগীরা এখনো ক্ষমা চায়নি)। ইনিয়ে বিনিয়ে গণহত্যার পক্ষে বয়ান উৎপাদন বন্ধ করতে হবে। জুলাইয়ের শক্তির মধ্যে ঢুকে স্যাবোট্যাজ করা বন্ধ করতে হবে। সাফ দিলে আসতে হবে।”

তিনি অন্য বিষয়ে লিখেছেন, “মুজিববাদী বামদের ক্ষমা নাই। লীগের গুম-খুন আর শাপলায়, মোদীবিরোধী আন্দোলনে হত্যাযজ্ঞের মস্তিস্ক এরা। এরা থার্টি সিক্সথ ডিভিশন।

“জুলাইয়ের সময়ে এরা নিকৃষ্ট দালালি করেও এখন বহাল তবিয়তে আছে। আজ পর্যন্ত মুজিববাদী বামেরা কালচারালি ও ইন্টেলেকচুয়ালি জুলাইয়ের সাথে গাদ্দারি করে যাচ্ছে। দেশে বসে জুলাইয়ের পক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে এরা চক্রান্ত করেই যাচ্ছে। লীগের এসকল বিটিম ও শীঘ্রই পরাজিত হবে। অন্য কারও কাঁধে ভর করে লাভ নেই।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত