Beta
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
Beta
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫

হলুদ ঢেউ থামিয়ে রিয়ালের ১৫

যযযযযযযয
[publishpress_authors_box]

‘ইউরোপে মৃত্যু আসে সাদা বাসে চড়ে’- রিয়াল মাদ্রিদকে নিয়ে বলা হয় এমনটাই। সবচেয়ে বেশিবার চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতা দলটাকে আদর করে বলা হয় ইউরোপের রাজাও। রাজারা মুকুট পেল আরও একবার। বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের হলুদ ঢেউ থামিয়ে জিতল ১৫তম শিরোপা।

ঐতিহ্যবাহী ওয়েম্বলির ফাইনালে ডর্টমুন্ডকে ২-০ গোলে হারাল রিয়াল। একটি করে গোল দানি কারভাহাল ও ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের। ফাইনালের সবশেষ চারটি স্কোরলাইনই ছিল ১-০। সেই ধারা ভেঙে রিয়াল জিতল ২-০-তে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গত কয়েকদিনে রিয়াল মাদ্রিদের সব পোস্টে হ্যাশট্যাগ দিয়ে লেখা ছিল ‘আ পোর লা ১৫’। স্প্যানিশ এই বাক্যের অর্থ ’১৫-এর জন্য’। পূরণ হলো লক্ষ্যটা। রেকর্ড ১৫তমবার রুপালি ট্রফিটা জিতল তারা। ১৯৮১ সালের পর এ নিয়ে টানা নবম ফাইনাল জিতল রিয়াল। আর কোচ হিসেবে আনচেলোত্তি জিতলেন পঞ্চম চ্যাম্পিয়নস লিগ। ভাঙলেন নিজেরই চার শিরোপার রেকর্ড।

রিয়ালের দ্বিতীয় গোলটি করেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। ছবি : এক্স

লির গ্যালারিতে ছিল তারার মেলা। স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন, জিনেদিন জিদান, লুইস ফিগো, ইয়ুর্গেন ক্লপ, গ্যারেথ বেলরা উপভোগ করেছেন ফাইনাল। ডর্টমুন্ড সবশেষ ফাইনাল খেলেছিল ক্লপের কোচিংয়ে। সেবার ওয়েম্বলির ডাগআউটে দলের হারে দেখেছিলেন তিনি। এবার সেই ওয়েম্বলির গ্যালারিতে দেখলেন ডর্টমুন্ডের আরেকটি পরাজয়।

কিক অফের পরপরই তিন তিনজন অতি উৎসাহী দর্শক ঢুকে বিঘ্ন করেন খেলার। ওয়েম্বলির মত ভেন্যুতে যা দৃষ্টিকটু ছিল।

ম্যাচের শুরুটা সতর্কতার সঙ্গেই করেছিল দুই দল। ফাইনাল সাধারণত এভাবেই খেলে সবাই। ২২তম মিনিটে প্রথম সেরা সুযোগটা নষ্ট করেন ডর্টমুন্ডের করিম আদেমি। সাবিৎজারের অসাধারণ পাস ধরে গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়াকে বোকা বানিয়েছিলেন তিনি। তবে শট নিতে পারেননি সময়মত। দানি কারভাহালের ব্লকে সে যাত্রায় রক্ষা রিয়ালের।

পরের মিনিটে আরও একটা সুযোগ নষ্ট হয় ডর্টমুন্ডের। ইয়ান ম্যাটসেনের থ্রু বল ধরে নেওয়া নিকলাস ফুলক্রুগের শট ফিরে আসে পোস্টে লেগে। অথচ ভাগ্য এতদিন সঙ্গ দিয়ে গেছে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডকে। ফাইনালের আগে প্রতিপক্ষের ১২টি শট লেগেছিল তাদের ক্রসবারে। কেবল সেমিফাইনালে পিএসজির ৬টা শট প্রতিহত হয় বারে লেগে। এবার সেই পোস্টই বাধা হল তাদের।

২৮ মিনিটে করিম আদেমির বাম প্রান্ত থেকে নেওয়া বাম পায়ের জোড়ালো শটে দুর্দান্ত সেভ করেন কোর্তোয়া। পুরো টুর্নামেন্টে অসাধারণ খেলা লুনিনের জায়গায় তাকে নামিয়ে যে আনচেলোত্তি ভুল করেননি সেটাই প্রমাণ করেন এই বেলজিয়ান গোলরক্ষক। তিনি প্রাচীর হয়ে না দাঁড়ালে ২২ থেকে ২৮- এই ৭ মিনিটে ৩-০ গোলে পিছিয়ে পড়তে পারত রিয়াল। ৪১ মিনিটে সাবিৎজারের নিচু শটও ঝাঁপিয়ে ফেরান কোর্তোয়া।

প্রথম ৩৫ মিনিটে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র সফল ড্রিবল করেছিলেন ৪টি। এ সময় সব খেলোয়াড় মিলেও করতে পারেননি ২টির বেশি ড্রিবল। তারপরও রিয়ালের আক্রমণগুলো ভীতি ছড়াচ্ছিল না। এমনকি বিরতির আগে ৬৩.৬ শতাংশ বলের দখল রেখে খেলে একটা শটও লক্ষ্যে ছিল না তাদের! উল্টো ডর্টমুন্ড পোস্টে ৮টা শট নিয়ে লক্ষ্যে রেখেছিল ৩টি।

বিরতির পর জেগে উঠে রিয়াল। বাড়ে আক্রমণে ধার। ৪৯ মিনিটে টনি ক্রুসের ফ্রিকিক সেভ করেন ডর্টমুন্ড গোলরক্ষক গ্রেগর কোবেল । দানি কারভাহাল হেডে অল্পের জন্য মিস করেন দারুণ এক সুযোগ।

কিছুক্ষণ পর  ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের অসাধারণ ক্রসে শুধু মাথা ছোঁয়ালেই গোল পেতে পারতেন জুড বেলিংহাম। কিন্তু অবিশ্বাস্য মিস করেন এই ইংলিশ তারকা। ৭৪ মিনিটে আর কোনও ভুল নয়। টনি ক্রুসের ইন সুইং কর্নারে লাফিয়ে করা হেডে বল জালে জড়ান দানি কারভাহাল।

 

উচ্চতায় তিনি ছয় ফুটের নন। কিন্তু লম্বা ডিফেন্ডারদের ফাঁক গলে শূন্যে লাফিয়ে কাংখিত গোলটা এনে দেন কারভাহালই। যখন দরকার হয় তখনই জেগে উঠে রিয়াল। জেগে উঠল আরও একবার। ৮৩ মিনিটে জার্মান প্রাচীর গুঁড়িয়ে লস ব্লাঙ্কোসদের হয়ে আরেক গোল করেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। ইয়ান মাটসেনের ভুল পাস থেকে বেলিংহাম হয়ে বল পেয়ে গোল করতে ভুল করেননি এই ব্রাজিলিয়ান।

রিয়ালের টনি ক্রুস ও ডর্টমুন্ডের মার্কো রয়েস অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন মৌসুম শেষে। দুই ক্লাবের দুই কিংবদন্তিকে শিরোপায় বিদায় জানাতে উন্মুখ ছিলেন সতীর্থরা। তবে সেরা উপহারটাই পেলেন ক্রুস। প্রথম গোলের অ্যাসিস্টও ছিল তার।

গ্যালারিতে রিয়ালের সমর্থনই ছিল বেশি। ওয়েম্বলিকে মনে হচ্ছিল বার্নাব্যু। তবে এর মাঝেও মাতিয়েছেন ডর্টমুন্ড দর্শকরা। বিরতিতে নিজেদের গ্যালারি আলোর রোশনাই করে ফেলেছিলেন তারা। কিন্তু সেই আলো নিভিয়ে দিল সর্বজয়ী রিয়াল।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত