পাক-ভারত সংঘাতের কারণে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল বাংলাদেশের পাকিস্তান সফর। শেষ পর্যন্ত পাঁচ ম্যাচের সিরিজ তিন ম্যাচে কমিয়ে পাকিস্তানে খেলতে গেছেন লিটন দাসরা। সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ লিটনের দল হেরেছে যাচ্ছেতাইভাবে। আজ (রবিবার) লাহোরে শেষ ম্যাচে তাদের হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর অভিযান।
এর আগে লাহোরে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের অভ্যর্থনা জানিয়েছেন পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি। লাহোরের গভর্নর হাউসে আয়োজিত এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পাঞ্জাবের গভর্নর সরদার সালিম হায়দার। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান মহসিন নাকভির সঙ্গে ছিলেন দুই দলের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তারা। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে সামনে রেখেই প্রেসিডেন্ট জারদারি বলেছেন, “ক্রিকেট শুধু খেলা নয়—এটি দুই জাতির মধ্যে সম্পর্ক গড়ার একটি সেতুবন্ধন। ”
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি আরও বলেছেন, তার দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা–বাণিজ্য, খেলা, সংস্কৃতি, মানবিক বন্ধনসহ সব ক্ষেত্রে শক্তিশালী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায়, ‘‘বাঙালি জাতি এই অঞ্চলের অন্যতম প্রাচীন ও সমৃদ্ধ জাতি এবং তাদের গর্ব করার মতো একটি ইতিহাস আছে। অর্থনৈতিকভাবে এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে একটি সফল উদাহরণ। পাকিস্তান সরকার বাংলাদেশের সঙ্গ একটি শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তুলতে কাজ করার চেষ্টা করছে। তবে এটি এক রাতেই সম্ভব নয়।’’
বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা নিজেদের স্বাক্ষরিত একটি ব্যাট উপহার দেন পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতিকে। উপহারটা তুলে দেন বোর্ড পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিম। ১৯৭১ সালের স্মৃতিচারণা করে এ সময় পাকিস্তান প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘আমাদের নতুন প্রজন্ম জানে না, আমরা কতটা বেদনার মধ্য দিয়ে গেছি। আমরা একে অন্যের হৃদয় ভেঙে দিয়েছিলাম। এখন সেই হৃদয়গুলো জোড়া লাগানোর সময় এসেছে। ক্রিকেট এমন একটি খেলা, যা বিশ্বব্যাপী মানুষকে একত্র করে। আমি খুশি যে আপনাদের সবাইকে পাকিস্তানে, লাহোরে স্বাগত জানাতে পারছি।’’
এদিকে আরব আমিরাতের কাছে সিরিজ হারের পর বাংলাদেশ সিরিজ হেরেছে পাকিস্তানের বিপক্ষেও। আজ হোয়াইটওয়াশ এড়াতে হলে দায়িত্ব নিতে হবে ব্যাটারদের। পাকিস্তান প্রথম দুই ম্যাচে ২০০’র বেশি স্কোর করার পর তাড়া করতে নেমে ব্যর্থ ছিলেন বাংলাদেশি ব্যাটাররা।
মিডলঅর্ডারে তাওহিদ হৃদয় সবশেষ তিন ইনিংসে করেছেন ০, ১৭ ও ৫। অথচ দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ৯ নম্বরে নেমে ফিফটি করে তানজিম হাসান সাকিব বুঝিয়েছেন লাহোরের উইকেটে ব্যাটিং করা কঠিন নয়।
দলকে আত্মবিশ্বাস জোগাতেই সাকিব বলেছেন, ‘‘আমাদের খেলোয়াড়েরা ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজেদের প্রমাণ করেছেন। তাঁরা হয়তো ছন্দের বাইরে আছেন। কিন্তু আমি আমার সতীর্থদের ওপর অনেক বেশি আত্মবিশ্বাস রাখি। আশা করি, তাঁরা পরের ম্যাচে ফিরে আসবেন।’’
President of Pakistan Asif Ali Zardari, hosted a reception in honour of the Pakistan and Bangladesh cricket teams, along with match officials, at the Governor's House in Lahore. pic.twitter.com/k7FI8tIYy1
— Pakistan Cricket (@TheRealPCB) June 1, 2025
সেই পরের ম্যাচটা আজই। চোট পাওয়া শরিফুল ইসলামকে ছাড়া লিটনরা শেষ ম্যাচে লড়াই করতে পারেন কিনা সেটাই দেখার।
এদিকে এই সিরিজ শেষ না হতেই পাকিস্তানের তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে বাংলাদেশে আসার খবর দিয়েছে পাকিস্তানি মিডিয়া। ‘জিও সুপার’ জানিয়েছে ১৮ জুলাই ঢাকায় আসবে সালমান আগার দল। ২০, ২২ ও ২৪ জুলাই হতে পারে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজের তিনটি টি-টোয়েন্টি। সবগুলো ম্যাচই হতে পারে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে।
এই সিরিজটি আইসিসির ফিউচার ট্যুরস প্রোগ্রামের (এফটিপি) অংশ নয়। বিসিবি ও পিসিবির শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আলোচনার সময় এই দ্বিপাক্ষিক সিরিজ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।