মোবাইল ফোন ব্যবহার করে গত জুন মাসে দেশে মোট এক লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। একক মাসের হিসাবে যা রেকর্ড। এসময় দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু হওয়ার পর কখনোই এক মাসে এত টাকা লেনদেন হয়নি।
এর আগে গত মার্চে লেনদেন হয়েছিল ১ লাখ ৫৩ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা। যা ছিল রেকর্ড, জুনের লেনদেন যা ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়েছে।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত মোবাইলে আর্থিক লেনদেনের হালনাগাদ তথ্যে এ পরিসংখ্যান উঠে এসেছে।
একটা সময় পর্যন্ত ব্যাংকিং সেবার যেকোনো প্রয়োজনে মানুষকে ব্যাংকে যেতে হতো। সময়ের সঙ্গে বিকাশ, রকেট, নগদ ও উপায়ের মতো মোবাইলে আর্থিক সেবা (এমএফএস) ব্যবহারের মাধ্যমে হাতে থাকা মোবাইল ফোনটিই হয়ে উঠেছে সব ধরনের লেনদেনের অপরিহার্য মাধ্যম। এমনকি হিসাব খুলতেও এখন আর কোথাও যেতে হয় না। গ্রাহক নিজেই নিজের হিসাব খুলে লেনদেন করতে পারেন।
জুন মাসে মোবাইলে রেকর্ড লেনদেনের কারণ জানতে কথা হয় এমএফএস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে।
তারা বলছেন, গত ১৭ জুন দেশে কোরবানির ঈদ উদযাপিত হয়। ঈদের কারণে ওই মাসে মোবাইলে লেনদেন বেড়েছে। ঈদে মানুষের বাড়তি টাকার প্রয়োজন হয়; কেনাকাটাও বেশি করে। সে কারণেই লেনদেনে রেকর্ড হয়েছে।
চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে মোবাইলে লেনদেনের অঙ্ক ছিল এক লাখ ২৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। দ্বিতীয় মাস ফেব্রুয়ারিতে লেনদেন হয় ১ লাখ ৩০ হাজার ১৪০ কোটি টাকা।
এপ্রিল ও মে মাসে লেনদেন হয় যথাক্রমে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৯২৯ কোটি ও ১ লাখ ৪০হাজার ৯৫২ কোটি টাকা।
গ্রাহক সংখ্যা ছাড়াল ২৩ কোটি
লেনদেনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে গ্রাকহ সংখ্যা। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে মোট গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৬ কোটি ৭৬ লাখ ৭০ হাজার ৪৬৮। জুনে সেই গ্রাহক প্রায় চার গুণ বেড়ে ২৩ কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার ২০৬ তে পৌঁছেছে।
তবে যেহেতু একজন গ্রাহক একাধিক এমএফএস সেবায় হিসাব খুলতে পারেন তাই ঠিক কতজন নাগরিক এমএফএসের আওতায় এসেছেন, সে হিসাবটি এখনও কারও কাছে নেই।
বাংলাদেশে মোবাইলের মাধ্যমে আর্থিক সেবার যাত্রা শুরু হয় ২০১১ সালের ৩১ মার্চ। বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংক প্রথম এ সেবা চালু করে। পরে এটির নাম বদলে হয় রকেট। এরপর ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে এমএফএস সেবা চালু করে বিকাশ।
পরবর্তী সময়ে আরও অনেক ব্যাংক এ সেবায় এসেছে। বর্তমানে বিকাশ, রকেটের পাশাপাশি মাই ক্যাশ, এম ক্যাশ, উপায়, শিওর ক্যাশসহ ১৫টি ব্যাংক এ সেবা দিচ্ছে। এর বাইরে ডাক বিভাগের নগদও দিচ্ছে এই সেবা।