প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগের (ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ) লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশের ক্ষেত্রে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারি করা কোটা সংক্রান্ত সর্বশেষ প্রজ্ঞাপন অনুসরণের দাবি জানিয়েছেন চাকরি প্রত্যাশীরা।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বৈষম্যবিরোধী চাকরি প্রত্যাশী আন্দোলন’ ব্যানারে সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়।
তারা বলেন, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০১৯ বাতিল করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারি করা কোটা সংক্রান্ত সর্বশেষ প্রজ্ঞাপন অনুসারে মেধায় ৯৩ ও কোটায় ৭ শতাংশের ভিত্তিতে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ (ঢাকা ও চট্টগ্রাম) পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রকাশ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু জাফর মো. সালেহ লিখিত বক্তব্য রাখেন।
সালেহ বলেন, “গত ২৯ মার্চ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগে (ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ) লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় আমরা ৪৬ হাজার ১৯৯ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হই। গত ৯ মে থেকে ১২ জুন পর্যন্ত ৪৬ হাজার ১৬৯ জন প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। মৌখিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার প্রায় ৩ মাস সময় অতিবাহিত হলেও এখনও ফল প্রকাশিত হয়নি।”
তিনি বলন, “প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০১৯ অনুসারে ওই নিয়োগ মেধার চূড়ান্ত অবমাননা বলে আমরা মনে করি। এক্ষেত্রে মহিলা ৬০ শতাংশ, পোষ্য ২০ শতাংশ ও পুরুষ ২০ শতাংশ ধার্য করেছে, যা গত ২৩ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে কোটা সংক্রান্ত পূর্বের সব পরিপত্র/প্রজ্ঞাপন/আদেশ/নির্দেশ/অনুশাসন রহিত করা হয়েছে। তাই প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগে ৯৩ শতাংশ ও ৭ শতাংশ কোটা অনুসরণ করতে আইনগত কোনও জটিলতা থাকার কথা নয়।
“আমরা মেধাভিত্তিক নিয়োগের দাবি জানিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি জমা দিয়েছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে দৃশ্যমান কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা যায়নি।”
সর্বশেষ প্রজ্ঞাপন জারির আগে অনুষ্ঠিত কয়েকটি নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “যেগুলোতে সর্বশেষ প্রজ্ঞাপন অনুসরণ করা হয়েছে, তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর (পিএসসি), বিভিন্ন পদের নিয়োগ পরীক্ষা কর অঞ্চল ১২।
“এমতাবস্থায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের রক্তের ওপর দিয়ে এই কোটা প্রথা কোনোভাবেই বহাল থাকতে পারে না। কোটা বৈষম্যের বিরুদ্ধে এত প্রাণহানির পর কোনো অবস্থাতেই প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০১৯ এ উল্লিখিত কোটা বহাল থাকতে পারে না।”
এসময় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে ৭২ ঘণ্টা সময় দিয়ে কোটা বৈষম্য দূর করে মেধাবীদের নিয়োগ নিশ্চিত করার জন্য দুই দফা দাবি পেশ করা হয়।
দাবিগুলো হলো
১. প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০১৯ বাতিলপূর্বক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত কোটা সংক্রান্ত সর্বশেষ প্রজ্ঞাপন অনুসারে ১৩ শতাংশ মেধা ও ৭ শতাংশ কোটার ভিত্তিতে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ (ঢাকা ও চট্টগ্রাম)-এর চূড়ান্ত ফলাফল দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রকাশ করতে হবে।
২. ৩১ জুলাই ২০২৪ পর্যন্ত শূন্য পদগুলোর বিপরীতে সর্বোচ্চ সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।
আগামী ৭২ ঘণ্টা অর্থাৎ ১২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবারের মধ্যে এসব দাবি পূরণ না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।
সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী চাকরি প্রত্যাশী আন্দোলনের আহ্বায়ক কাজল চন্দ্র রায়, সমন্বয়ক আশরাফুদ্দীন রমিজ উপস্থিত ছিলেন।