টেস্টে দিনের শেষের ওভারে ব্যাটারের উইকেট বাঁচাতে বোলার নামিয়ে দেওয়ার প্রচলনটা অনেক পুরোনো। ওই বোলারদের “নাইটওয়াচম্যান” বলা হয়। তাদের কাজ কোন রকমে শেষের কয়েকটি ওভার উইকেটে টিকে থাকা।
উইকেটে টিকে থাকতে আসা নাইটওয়াচম্যানদের ব্যাটে দলের জয়ের এপিটাফ লেখা হওয়া ইতিহাসে ক্রিকেটে অনেক আছে। তবে বাংলাদেশের ক্রিকেটে এমন ঘটনা খুব কম। ঘরোয়া ক্রিকেটেও মনে রাখার মতো কিছু নেই। এরকম সাফল্যজনক কীর্তি গড়েছেন রেজাউর রহমান রাজা।
রংপুরের বিপক্ষে বগুড়ায় এই পেসারের ব্যাটে জাতীয় লিগের ম্যাচ জিতেছে সিলেট। লো স্কোরিং ম্যাচটিতে ১৯২ রান সিলেটের জয়ের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে ছিল। ১১৭ বলে ৫৯ রানের ইনিংসে দলকে সেই চ্যালেঞ্জে জয় এনে দিয়েছেন রাজা। দুর্দান্ত এই ইনিংসের জন্য হয়েছেন ম্যাচ সেরা।
বাংলাদেশ টেস্ট দলে টপঅর্ডারদের দুর্দশার সময়ে একজন পেসারের ব্যাটে রান দারুণ উদাহরণ। ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে বরাবরই ব্যর্থ হয়েছেন স্বীকৃত ব্যাটাররা। ওই সময় তাইজুল, হাসান মাহমুদদের ব্যাটে কিছু রান এসেছে। তাসকিনও রান করেছেন আগে। এবার জাতীয় দলের পাইপলাইনে থাকা আরেক পেসার ব্যাট হাতে সামর্থ্য দেখালেন।
রান কম হলেও রংপুর ও সিলেটের এ লড়াই জমজমাট হয়েছে। প্রথম দুই ইনিংসে রংপুরের ১৫৮ রানের জবাবে সিলেট করেছে ১৮৯। দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৬ রানে ৬ উইকেট হারানো রংপুর তানবীর হায়দার ও নবীন ইসলামের ১৪৯ রানের জুটিতে ভালোভাবে ম্যাচে ফেরে। তানবীর ৭২ ও নবীন ৬৩ রান করেন।
শেষ ইনিংসে প্রায় দুইশো রান করে ম্যাচ জেতা এশিয়ান কন্ডিশন শুধু নয়, বিশ্বের যে কোন উইকেটে কঠিন। তার ওপর বগুড়ার লো স্কোরিং ম্যাচে সিলেটের জন্য সবদিক থেকেই কঠিন ছিল। তার ওপর ৫০ রানে দিন শেষে ২ উইকটে হারায় সিলেট।
মঙ্গলবার দিনের শুরুটা অবশ্য অন্যরকম ছিল। রেজাউর রহমান রাজা একপ্রান্ত আগলে শক্ত হাতে প্রতিরোধ গড়েন। ৪২ রান করা পিনাক ঘোষের সঙ্গে ৫৬ রান ও ৩৭ রান কর অমিত হাসানের সঙ্গে আরও ৫০ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের পথ দেখান। এই জয়ে ৩ ম্যাচে রাউন্ড রবিন পর্বের লিগে শীর্ষে উটেছে সিলেট।
ব্যাটিং সাফল্যে জয় খুলনার
সিলেটে ব্যাটিং শক্তি দেখিয়েছে খুলনা। ঢাকা মেট্রোর দেওয়া ২০৯ রানের লক্ষ্য মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে অতিক্রম করেছে দলটি। জয়ের লক্ষ্যে নেমে এনামুল হক বিজয় ৭১ রানে ফিরলেও ইমরুল কায়েস ৮৩ রানে অপরাজিত ছিলেন। এর আগে ফলোঅনে পড়া ঢাকা মেট্রো মার্শাল আইয়ুবের ১৫২ দলীয় ৩৭২ রানে দ্বিতীয় ইনিংস শেষ করে।
কক্সবাজারে বরিশালকে সহজেই হারিয়েছে রাজশাহী। অবশ্য জয়ের জন্য ৬৮ রান করতে নেমে ৪ উইকেট খুইয়েছে তারা। এর আগে সানজামুল ইসলামের ৬ উইকেটে বরিশালের দ্বিতীয় ইনিংস মাত্র ১৩৭ রানে গুটিয়ে গেলে রাজশাহীর জয় সহজ হয়। প্রথম ইনিংসে বরিশালের ২০৫ রানের জবাবে ২৭৫ রান করেছিল রাজশাহী।
একই ভেন্যুর অ্যাকাডেমি মাঠে চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিভাগের ম্যাচ ড্র হয়। চট্টগ্রামের প্রথম ইনিংসে করা ৩৭১ রানের জবাবে ঢাকা ৪০১ রান করে। ১ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। দ্বিতীয় ইনিংসে শেষ দিনে চট্টগ্রাম ৪ উইকেটে ১২৪ করতে ড্র মেনে নেয় দুই দল।