বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে কলকাতায় বাড়ির কার্নিশ ভেঙে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
আনন্দবাজার ওই ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ করতে পারেনি। তবে প্রথম আলো ওই ব্যক্তির নাম বলছে মোহাম্মদ সজীব (৫১)। তিনি কলকাতার এন্টালি এলাকার বিবির বাগানের বাসিন্দা।
ঘূর্ণিঝড় রেমালে কলকাতার পরিস্থিতি নিয়ে আনন্দবাজার বলছে, ঝড়ে শহরের বেশ কয়েকটি এলাকায় গাছ ভেঙে পড়েছে। বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে শহরের অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ নেই।
রবিবার রাতে কেবল কলকাতাতেই ১৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়, জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া দপ্তর। এর জেরে সোমবার সকাল থেকে শহরের মেট্রো পরিষেবা ব্যাহত হয়। বন্ধ আছে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার ট্রেন চলাচল।
পার্ক স্ট্রিট ও এসপ্ল্যানেড মেট্রো স্টেশনের মাঝের ট্র্যাকে পানি প্রবেশ করেছে। ওই অংশের স্টেশনের একাংশ ও পুরো ট্র্যাকই পানির নিচে।
ভারতের আবহাওয়া দপ্তর পূর্বাভাসে জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে কলকাতায় সোমবারও বজ্রপাতসহ ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এদিন সকালে ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইতে পারে।
সোমবার রাজ্যের আট জেলায় অরেঞ্জ অ্যালার্টের পাশাপাশি দুই জেলায় রেড অ্যালার্ট জারি রয়েছে।
এছাড়া এদিন মুর্শিদাবাদ ও নদীয়া জেলায় ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টি হতে পারে। বাতাসের গতি থাকতে পারে ঘণ্টায় ৬০-৭০ কিলোমিটার।
সাময়িকভাবে দমকা বাতাসের গতি ৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠতে পারে। মুর্শিদাবাদ ও নদীয়ায় সোমবার ৭-২০ সেন্টিমিটার বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া দপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সোমবার কলকাতা ছাড়াও হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান ও বীরভূমে ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
জেলাগুলোতে বাতাসের গতি ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।
রবিবার রাত আটটার দিকে প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমালের কেন্দ্র মোংলার দক্ষিণ-পশ্চিম দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ উপকূল ও বাংলাদেশের পটুয়াখালীর খেপুপাড়া উপকূলে আঘাত হানে। এর প্রভাবে উভয় দেশের উপকূলবর্তী এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
প্রথম আলো বলছে, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পটুয়াখালী, বরগুনাসহ উপকূলের বিভিন্ন জেলায় ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যায়।
এসময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯০-১২০ কিলোমিটার। এর প্রভাবে বিভিন্ন এলাকায় জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়।
ঘূর্ণিঝড়ে প্রাথমিকভাবে দুজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছে প্রথম আলো। ঝড়ের প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারে বরগুনার আমতলীতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে যায়।
দক্ষিণবঙ্গে মঙ্গলবার থেকে দুর্যোগ কাটতে পারে বলে জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া দপ্তর।
সংস্থাটি বলেছে, সোমবারের পর থেকেই বৃষ্টি কমবে। মঙ্গলবার থেকে দক্ষিণের কোনও জেলাতে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।
সোমবার সকালে শক্তি হারিয়ে প্রবল থেকে সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে রেমাল। এটি এখন খুলনা ও কয়রার দিকে আছে। ঘূর্ণিঝড়টি ক্রমশ আরও উত্তর-পূর্বে সরে যাচ্ছে বলে জানায় আবহাওয়া দপ্তর।