Beta
শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি ঝরাবে রেমাল

রেমালের দিনে পটুয়াখালীর আগুনমুখা নদীতে দেখা যায় এমন দৃশ্য।
[publishpress_authors_box]

অস্বাভাবিক ধীরগতিতে বাংলাদেশ অতিক্রম করবে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। এই সময়ে সারা দেশে ‍রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হবে বলে ধারণা করছেন আবহাওয়াবিদরা। সেই সঙ্গে রয়েছে ঢাকায় জলাবদ্ধতার আশঙ্কাও।

কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “অস্বাভাবিক ধীরগতিতে বাংলাদেশ ছাড়বে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। রেমালের কারণে ঘূর্ণায়মান মেঘমালা (ক্লাউড লেন) মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বাংলাদেশের উপরে থাকার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। তাই অন্যান্য ঘূর্ণিঝড়ের তুলনায় রেমালের প্রভাবে দেশের আট বিভাগে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।”

এসময় সারাদেশের কোথায় কতটা বৃষ্টিপাত হতে পারে সেই পূর্বাভাসও দিয়েছেন এই গবেষক। তিনি জানান, রেমালের কারণে ২৮ মে রাত পর্যন্ত খুলনা ও বরিশাল বিভাগে ৪০০ থেকে ৫০০ মিলিমিটার করে, সিলেট বিভাগে ৪০০ থেকে ৬০০ মিলিমিটার, ঢাকা বিভাগে ২০০ থেকে ৩৫০ মিলিমিটার (পদ্মা নদীর পশ্চিম পাশের জেলাগুলোর উপরে ২৫০ থেকে ৩৫০ মিলিমিটার ও ঢাকার উত্তর ও পূর্ব পাশের জেলাগুলোর উপর ২০০ থেকে ২৫০ মিলিমিটার) বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া রাজশাহী বিভাগে ২৫০ থেকে ৩৫০ মিলিমিটার, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩৫০ মিলিমিটার থেকে ৪০০ মিলিমিটার, চট্টগ্রাম বিভাগে ২০০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার আর রংপুর বিভাগে ১৫০ থেকে ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ঢাকার ওপর দিয়ে অতিক্রমের সম্ভাবনা আছে বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত রেমালের। তাই সোমবার ও মঙ্গলবার ঢাকা শহরের ওপরে ২০০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টির আশঙ্কা করছে আবহাওয়াবিদরা। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ভারি থেকে খুবই ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকায় আশঙ্কা রয়েছে ঢাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টিরও।

পলাশ জানান, মোংলার পশুর নদীতে যখন জোয়ার সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকবে ঠিক তখন রেমাল তার সর্বোচ্চ গতি নিয়ে হাজির হবে।

উপকূলের মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “যারা এখনও আশ্রয়কেন্দ্রে যাননি, তারা দ্রুত আশ্রয় গ্রহণ করুন।”

একই ধরনের কথা বলেন দেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুর রহমান। সকাল সন্ধ্যাকে তিনি বলেন, “জলোচ্ছ্বাসের সময় যদি জোয়ার থাকে তাহলে তা স্বাভাবিকের তুলনায় সাত থেকে ১০ ফুট বেশি উচ্চতার হবে।”

জাপানের কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে পাওয়া চিত্র বিশ্লেষণ করে পলাশ বলেন, রেমাল তার সর্বোচ্চ শক্তি অর্জন করতে পারে রবিবার রাত ৯টার দিকে। এই সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১১০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার। এই গতিবেগ দমকা হাওয়াসহ ঘণ্টায় ১৪০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় রেমালের কেন্দ্র ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা ও বাংলাদেশের সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট জেলার উপর দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশের সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে থাকবে। স্থল ভাগে প্রবেশের পরে ঘূর্ণিঝড় রেমাল যখন খুলনা ও ঢাকা বিভাগের জেলাগুলোর ওপর দিয়ে অতিক্রম করবে তখন বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়াবিদরা।

সর্বোচ্চ গতিবেগের বাতাস নিয়ে উপকূলে আঘাতের কারণে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলো পানিতে ব্যাপক প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। রবিবার রাতে জোয়ারের সময় সাতক্ষীরা, খুলনা বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, ও নোয়াখালী জেলার নদ-নদী ও চর অঞ্চলগুলো স্বাভাবিকের চেয়ে ১০ থেকে ১২ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা যাচ্ছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত