নতুন অর্থবছরের শুরুতে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স প্রবাহে ধীরগতি দেখা যাচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক রবিবার রেমিটেন্সের সাপ্তাহিক তথ্য প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ের ১৩ দিনে (১ থেকে ১৩ জুলাই) ব্যাংকিং চ্যানেলে ৯৭ কোটি ৬৫ লাখ ৫০ হাজার ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
বর্তমান বিনিময় হার (প্রতি ডলার ১১৮ টাকা) হিসাবে টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ১১ হাজার ৫৪৮ কোটি টাকা। প্রতিদিনের গড় হিসাবে এসেছে ৭ কোটি ৫১ লাখ ১৯ হাজার ডলার, টাকার অঙ্কে যা ৮৮৬ কোটি ৪০ লাখ টাকার কিছু বেশি।
মাসের বাকি ১৮ দিনে (১৪ থেকে ৩১ জুলাই) এই হারে এলে মাস শেষে রেমিটেন্সের অঙ্ক ২৩২ কোটি ৮৭ (২.৩২ বিলিয়ন) ডলার হবে।
৩০ জুন শেষ হওয়া ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শেষ মাস জুনের ১২ দিনে (১ থেকে ১২ জুন) ১৪৬ কোটি (১.৪৬ বিলিয়ন) ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। টাকার অঙ্কে ওই অর্থের পরিমাণ ছিল ১৭ হাজার ২২৮ কোটি টাকা।
প্রতিদিনের গড় হিসাবে এসেছিল ১২ কোটি ১৭ লাখ ডলার বা ১ হাজার ৪৩৬ কোটি টাকা।
বরাবরই দুই ঈদের আগে বেশি রেমিটেন্স পাঠান প্রবাসীরা। ১৭ জুন দেশে কোরবানির ঈদ উদযাপিত হয়। তার আগে রেমিটেন্সে উল্লম্ফন দেখা যায়।
তবে ঈদের পরও রেমিটেন্সের গতি বেশ ভালো ছিল। সব মিলিয়ে বিদায়ী অর্থবছরের শেষ মাস জুনে ২৫৪ কোটি ১৬ লাখ (২.৫৪ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।
প্রতিদিনের গড় হিসাবে এসেছিল ৮ কোটি ৪৭ লাখ ২০ হাজার ডলার, টাকার অঙ্কে যা ছিল এক হাজার কোটি টাকা।
জুন মাসের রেমিটেন্স ছিল গত বছরের জুনের চেয়ে ১৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ বেশি। আর একক মাসের হিসেবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিটেন্স।
২০২০ সালের জুলাই মাসে এ যাবৎকালের সবচেয়ে বেশি ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছিল দেশে। গত বছরের জুনে ২১৯ কোটি ৯০ লাখ (২.২০ বিলিয়ন) ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।
গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছিল দেশে, যা ছিল আগের অর্থবছরের (২০২২-২৩) চেয়ে ১০ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেশি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার এসেছিল দেশে; প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
অর্থবছরের হিসাবে বিদায়ী অর্থবছরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিটেন্স এসেছে দেশে। ২০২০-২১ অর্থবছরে ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স।
পাঁচ বছর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১৮ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছিল দেশে। ২০২০-২১ অর্থবছরে এক লাফে ৩৬ দশমিক ১৫ শতাংশ বেড়ে ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলারে ওঠে।
পরের অর্থবছরে (২০২১-২২) অবশ্য তা কমে ২১ দশমিক শূন্য তিন বিলিয়ন ডলারের নেমে আসে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে আসে একটু বেশি, ২১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার।