উপজেলা পরিষদের অপসারিত চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানরা অবিলম্বে তাদের পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন।
রবিবার ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফোরাম আয়োজিত প্রতিবাদ সভা থেকে এই দাবি জানানো হয়।
সভায় বক্তব্য দেন ফোরামের সভাপতি এবং দিনাজপুরের চিরিবন্দরের অপসারিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লায়লা বানু।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানদের নির্বাহী আদেশে অপসারণের প্রক্রিয়াকে ‘অনভিপ্রেত ও অমানবিক’ আখ্যায়িত করে তিনি অবিলম্বে তাদের পুনর্বহালের দাবি জানান।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়ে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের আইনগুলো সংশোধনের পর জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় নির্বাচিত সব চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মেয়রদের অপসারণ করে।
শুরু থেকেই সরকারের এই পদক্ষেপের প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে বাংলাদেশ ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফোরাম। সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে তারা।
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের ভোটের প্রসঙ্গ টেনে প্রতিবাদ সভায় লায়লা বানু বলেন, “নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে একাধিক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সাথে তৃণমূলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আমরা নির্বাচিত হয়েছি।”
তিনি বলেন, “উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত ১৯ আগস্ট উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা চেয়ারম্যানদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক এক নির্বাহী আদেশে অপসারণ করা হয়েছে, যা অত্যন্ত অনভিপ্রেত ও অমানবিক।”
লায়লা বানু বলেন, অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে কথা বলতে অপসারিত জনপ্রতিনিধিরা জনগণের সামনে এসেছেন, যে অন্যায়ের কারণে ভোগান্তিতে সাধারণ জনগণ, যে অন্যায়ের কারণে সারাদেশে আইনশৃঙ্খলার অবনতি, বাজার নিয়ন্ত্রণহীন, বন্যায় সরকারি সহায়তা প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছানোয় ব্যর্থতা।”
জনপ্রতিনিধিদের অপসারণের ফলে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা ভেঙে পড়াসহ জনগণের কাঙ্ক্ষিত সেবা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করেন সাবেক এই জনপ্রতিনিধি।
তিনি বলেন, “সরকারের সেবা প্রত্যন্ত পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে এবং স্থানীয় সরকার কাঠামো শক্তিশালী করার লক্ষ্যে জনপ্রতিনিধিদের অপসারণের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের কোনও বিকল্প নেই।
পলাতক থাকা কিংবা অনুপস্থিতিকে কারণ দেখিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের অপসারণ করাকে ‘অত্যন্ত দুঃখজনক’ বলেও উল্লেখ করেন লায়লা বানু।
তিনি বলেন, “আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই– আমাদের স্ব স্ব অধিক্ষেত্রে অপসারণের দিন পর্যন্ত স্ব স্ব উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে নিয়মিত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলাম, যার দালিলিক প্রমাণ আমাদের নিকট রয়েছে।
“সুতরাং, অনতিবিলম্বে অপসারণ প্রত্যাহার করে আমাদের দাবি মেনে নিয়ে সরকারের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ত্বরান্বিত করতে এবং জনগণের কাঙ্ক্ষিত সেবা সুনিশ্চিত করতে জোর দাবি জানাচ্ছি।”