আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলোর ঋণ পরিশোধে বাংলাদেশের সংকটময় এই সময়েও কোনও সমস্যা হবে না, তা যথা সময়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ।
মঙ্গলবার অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) ও বিশ্বব্যাংক গ্রুপের সঙ্গে বৈঠকের পর উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কক্ষে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকের পর সালেহ উদ্দিন বলেন, “বৈদেশিক ঋণের কিস্তি শোধ নিয়ে কোনও টেনশন নাই, এটা উন্নয়ন সহযোগীদের আশ্বস্ত করতে হবে। বাংলাদেশ যেসব বৈদেশিক ঋণ নিয়েছে, তা যথা সময়ে পরিশোধ করা হবে।
“অনেকে বলছে আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ। কিন্তু আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা এত খারাপ না যে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে পারব না। তবে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ ব্যবস্থাপনা জোরদার করতে হবে।”
এসময় ইআরডির কর্মকর্তাদের উদ্দেশে উপদেষ্টা বলেন, “উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে ঋণ নেগোশিয়েশনে দক্ষতা বাড়াতে হবে। অনেকে বিদেশ যাচ্ছে, ভাব যেন বেড়াতে যাচ্ছে। আর উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে মিটিংয়ে আমতা আমতা করেন।
“আমাদের সম্পদ অপর্যাপ্ত। বৈদেশিক ঋণ দরকার। তবে সব ঋণই নেওয়া যাবে না। ঋণের শর্ত, সুবিধা এবং ব্যবহার করা যাবে কি না, সবদিক বিবেচনতায় ঋণ নিতে হবে। ঋণের অর্থ দিয়ে ৫০০ টাকার জিনিস ৫ হাজার টাকায় কেনা হবে, তা হবে না। মনে রাখতে হবে, এটা আমাদের টাকা, এটা আমাদের শোধ করতে হবে।”
ঋণ ফেরত পাওয়া নিয়ে দুঃশ্চিন্তা নেই বিশ্বব্যাংকের
বৈঠকের পর বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি আব্দুলায়ে সেকের কাছে জানতে চাওয়য়া হয় পাওনা অর্থ ফেরত পাওয়া নিয়ে কোনও দুশ্চিন্তা করছেন কি না। তখন তিনি বলেন, “বিগত ৫০ বছরে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের কাছে খুবই নির্ভরযোগ্য অংশীদার। এই সময়ে বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধে কোনও সমস্যা হয়নি। বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধ সক্ষমতা নিয়ে আমাদের কাছে কখনোই উদ্বেগের বিষয় ছিল না। এ বিষয়ে বাংলাদেশের গর্ব করা উচিত।”
এসময় তিনি সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া ছাত্র-জনতা আন্দোলনে মৃত্যুবরণ করা তরুণদের জন্য সমবেদনা জানান।
তিনি বলেন, “আমরা বাংলাদেশের জনগণকে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছি।”
তবে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কিছু সংস্কার পরিচালনার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের আর্থিক খাতে সংস্কার খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে আর্থিক খাতে। এছাড়া বাণিজ্য সংস্কার, ব্যবসায়িক পরিবেশ সহজীকরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় কাজ করতে হবে।”
“বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের দীর্ঘস্থায়ী শক্তিশালী অংশীদারত্ব অব্যাহত রাখতে অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টার সঙ্গে কাজ করতে আমরা প্রস্তুত”, বলেন বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি।