Beta
শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Beta
শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
ট্যারিফ কমিশনের সেমিনারে ড. জায়েদীর অভিমত

রিজার্ভ পরিস্থিতি স্বস্তিদায়ক নয়

বৃহস্পতিবার সকালে কারওয়ান বাজারে টিসিবি ভবনে ট্যারিফ কমিশনের সেমিনার।
বৃহস্পতিবার সকালে কারওয়ান বাজারে টিসিবি ভবনে ট্যারিফ কমিশনের সেমিনার।
Picture of প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

দেশের অর্থনীতির সবচেয়ে উদ্বেগজনক সূচক বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ বেশ খানিকটা বাড়লেও স্বস্তিদায়ক অবস্থায় পৌঁছায়নি বলে মনে করেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) চেয়ারম্যান ড. জায়েদী সাত্তার। তিনি বলেন, রিজার্ভ স্বস্তিতে পৌঁছাতে আরও সময় এবং সঠিক নীতি প্রয়োজন।

বৃহস্পতিবার সকালে কারওয়ান বাজারে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ভবনে আয়োজিত এক সেমিনারে এসব কথা বলে ড. জায়েদী।

বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় এই সেমিনার আয়োজন করে কমিশন।

বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ হিসাবে বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল ১৯ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন ডলার। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘গ্রস’ হিসাবে ছিল ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার।

সেমিনারে ড. জায়েদী সাত্তার বলেন, “আমাদের রিজার্ভ এখন কিছুটা ব্যালান্স অবস্থায় আছে। আমাদের প্রায় সাড়ে তিন মাসের খরচ রিজার্ভে আছে। আগে আমাদের ৭-৮ মাসের রিজার্ভ ছিল। যতক্ষণ না ৫ মাসের খরচ রিজার্ভে থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত অবস্থা স্বস্তিদায়ক হবে না।”

রিজার্ভ বাড়ানোর জন্য রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আনার বিকল্প নেই বলে তার অভিমত। তিনি পোশাক শিল্পকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার সমালোচনা করেন। 

তিনি বলেন, “সকল উদ্যোক্তা বা খাতকে একভাবে দেখতে হবে। আমাদের তৈরি পোশাক রপ্তানি খাতে এক ধরনের নীতি, অন্যান্য খাতে আরেক নীতি। পোশাক খাতে যে ধরনের সুবিধা দেওয়া হয়, তা কিন্তু অন্যান্য খাত পায় না। এটা উচিত না। সবাইকে এক গ্রাউন্ডে আনতে হবে।”

উন্নয়ন স্থায়ী করতে হলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতির সঙ্গে তাল মেলাতে হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করে জায়েদী সাত্তার বলেন, “আমরা কিন্তু স্বাধীনতার প্রথম দুই দশক আমাদের বাণিজ্যনীতিতে খুব একটা কাজ করিনি। আমরা পাকিস্তান সময়ে চলা নীতিটা ধরেই চলছিলাম।

“১৯৯০ এ প্রথম আমরা বাণিজ্যনীতি তৈরি করলাম। তখন ওটাকে অনেকেই অসম্পূর্ণ বলেছিল। কিন্তু তাও সেই বাণিজ্যনীতির কারণে আমরা ১০-১৫ বছর ধরে সুবিধা পাচ্ছি। আমি মনে করি, এখন আমাদের পুনরায় বর্তমান যুগের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বাণিজ্যনীতি প্রস্তুত করতে হবে। এটাই হাই টাইম।”

সেমিনারে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু উপস্থিত ছিলেন। তিনিও তার বক্তব্যে সব খাতকে একই রকমের সুবিধা নিশ্চিত করার বিষয়ে জোর দেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পরই প্রধানমন্ত্রী আমাদের নির্দেশনা দিয়ে বলেছেন, যেভাবে গার্মেন্টস সুবিধা পাচ্ছে ঠিক একইভাবে লেদার, জুট এবং অন্যান্য যে রপ্তানি খাত আছে, তারা যেন একই সুযোগ-সুবিধা পায়। যেভাবে আমরা তৈরি পোশাক খাতকে বিকশিত করেছি, ঠিক একইভাবে যেন আমরা লেদার এবং জুটকে বিকশিত করতে পারি, তারই চেষ্টা করে যাচ্ছি।  

“আমরা বৈদেশিক বিনিয়োগ উৎসাহিত করছি। কিন্তু আশানুরূপ সাড়া আমরা পাচ্ছি না। তাই আমরা সরাসরি বিভিন্ন দেশের সাথে বাণিজ্য চুক্তি করার দিকে বিশেষ মনোযোগী হতে হচ্ছে। আমরা তা ট্রাই করে যাচ্ছি।”

তিনি বলেন, “আমরা একাধিক দেশের সাথে সরাসরি বাণিজ্য নিয়ে কাজ করছি। আঞ্চলিক সম্পর্ক এবং আঞ্চলিক দেশগুলোর সাথে একসাথে বাণিজ্য করা নিয়েও কাজ করছি। আমরা ২৬টি দেশের সাথে বিভিন্ন ধরনের ট্রেড এগ্রিমেন্ট নিয়ে বর্তমানে কাজ করছে।

“আমরা যদি গ্লোবাল ভ্যালু চেইনের জায়গায় মনোযোগ দিতে পারি আমাদের বন্দরগুলোকে ব্যবহার করে। আমরা মাতারবাড়ীতে ডিপ সি পোর্ট করেছি। আমাদের ট্র্যাডিশনাল চট্টগ্রাম পোর্ট, মোংলা পোর্ট আছে। সেইসঙ্গে আমরা বে টার্মিনাল করছি। আমরা অনেক বেশি ইনিশিয়েট নিচ্ছি।”

সেমিনারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, “আমাদের রপ্তানিতে এগিয়ে থাকার অন্যতম মূল কারণ হচ্ছে, আমাদের শ্রম শক্তির খরচ কম। এভাবে তো সামনে চলতে পারবে না। এভাবে তো মধ্যম আয়ের দেশ হওয়া যাবে না।

“আমি কি শুধু এই কারণে আমার রপ্তানি চালিয়ে যাব। আমাকে তো হাই ভ্যালু প্রোডাক্টে যেতে হবে। সেটার জন্য কিন্তু আমরা বিভিন্ন সময় এনবিআরের তরফ থেকে নীতি সমর্থন দিয়ে আসছি।”

“আমাদের দেশে গাড়ি তৈরির কিছু প্ল্যান্ট চালু হয়েছে এবং কিছু সামনে চালু হবে। আগে আমরা লিফট তৈরি করতে পারতাম না, এখন আমরা তাও করছি। দেশের চাহিদার ২০ শতাংশ পূরণ হচ্ছে দেশি উৎপাদন দিয়ে” বলেন এনবিআর চেয়ারম্যান।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত