Beta
শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫

এক মাসে রিজার্ভ বেড়েছে ৬৬ কোটি ডলার

মার্কিন ডলার
মার্কিন ডলার
[publishpress_authors_box]

বাংলাদেশে বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ বাড়ছে। অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলোর মধ্যে অন্যতম রেমিটেন্সের ওপর ভর দিয়ে রিজার্ভ এখন ২০ বিলিয়ন ডলার ছুঁইছুঁই।

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত ‘উইকলি সিলেক্টেড ইকোনমিক ইন্ডিকেটরস’ প্রতিবেদনে এই হিসাব পাওয়া গেছে। সে অনুযায়ী, এক মাসের ব্যবধানে রিজার্ভ বেড়েছে ৬৬ কোটি ডলার।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ হিসাবে বুধবার বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল ১৯ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলার। গ্রস হিসাবে ছিল ২৫ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার।

ব্যালেন্স অব পেমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন বা বিপিএম-৬ হলো, আইএমএফের সদস্য দেশগুলোর জন্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হিসাব করার নীতিমালা।

রিজার্ভ হিসাবের দুটি পদ্ধতি প্রচলিত রয়েছে। একটি হচ্ছে গ্রস, অন্যটি নিট হিসাব। বিপিএম-৬ পদ্ধতি অনুযায়ী, বৈদেশিক সম্পদ গণনার ক্ষেত্রে সব বৈদেশিক দায় ও ঋণ এবং রিজার্ভের অর্থ অন্য কোনও কাজে ব্যবহার করলে তা মূল রিজার্ভ থেকে বাদ দিয়ে হিসাব করতে হবে।

এক মাস আগে ১৮ সেপ্টেম্বর বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ছিল ১৯ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলার। গ্রস হিসাবে ছিল ২৪ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার।

সে হিসাবে, এক মাসের ব্যবধানে বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ বেড়েছে ৫৬ কোটি ডলার। গ্রস হিসাবে বেড়েছে ৬৬ কোটি ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, রেমিটেন্সের যেভাবে বাড়ছে তাতে দু-একদিনের মধ্যেই বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। আর এই ধারা অব্যাহত থাকলে অক্টোবর শেষে তা ছাড়াবে ২০ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার।

গত ৯ সেপ্টেম্বর এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) জুলাই-আগস্ট মাসের ১ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলারের আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ কমে গিয়েছিল।

আকুর দেনা শোধের আগে ৫ সেপ্টেম্বর বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার। গ্রস হিসাবে ছিল ২৫ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার।

এক বছর আগে গত বছরের ১৬ অক্টোবর বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ছিল ২১ দশমিক শূন্য ছয় বিলিয়ন ডলার। গ্রস হিসাবে ছিল ২৬ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার।

আমদানি ব্যয় কমায় ২০২১ সালের আগস্টে বাড়তে বাড়তে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গ্রস হিসাবে রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল।

আইএমএফের কথা অনুযায়ী, গত বছরের ১২ জুলাই থেকে রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করতে শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সে সময় থেকেই মূলত গ্রস হিসাবের পাশাপাশি বিপিএম-৬ পদ্ধতি অনুসরণ করেও রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে।

ওই দিন গ্রস হিসাবে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৯ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার। আর বিপিএম-৬ হিসাবে ছিল ২৩ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংক বিপিএম-৬ হিসাবের রিজার্ভকে ‘তাৎক্ষণিক ব্যবহারযোগ্য’ রিজার্ভ হিসাবে উল্লেখ করে।

সবশেষ গত আগস্ট মাসের আমদানির তথ্য প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাতে দেখা যায়, ওই মাসে পণ্য আমদানিতে বাংলাদেশের ৫ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে।

সে হিসাবে ১৯ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলার ‘তাৎক্ষণিক ব্যবহারযোগ্য’রিজার্ভ দিয়ে প্রায় চার মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব হবে।

আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রা মজুদ থাকতে হয়।

নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আকুর সেপ্টেম্বর-অক্টোর মেয়াদের আকুর বিল পরিশোধ করতে হবে। স্বাভাবিকভাবেই তখন রিজার্ভ কমে ফের ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে যাবে।

আকু হলো—কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর মধ্যকার একটি আন্ত–আঞ্চলিক লেনদেন নিষ্পত্তিব্যবস্থা। এশিয়ার নয়টি দেশের মধ্যে যেসব আমদানি-রপ্তানি হয়, এই ব্যবস্থার মাধ্যমে তা প্রতি দুই মাস পরপর নিষ্পত্তি হয়।

অন্য দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের লেনদেন তাৎক্ষণিকভাবে সম্পন্ন হয়। আকুর সদস্য দেশগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ, ভারত, ইরান, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, ভুটান ও মালদ্বীপ। তবে দেনা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় গত বছর এ ব্যবস্থা থেকে বাদ পড়ে শ্রীলঙ্কা।

১২ দিনেই এসেছে বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স

রিজার্ভের অন্যতম প্রধান উৎস হচ্ছে রেমিটেন্স। আগস্ট ও সেপ্টেম্বরের পর চলতি অক্টোবর দেশে রেমিটেন্সের প্রবাহ ভালো।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের চতুর্থ মাস অক্টোবরের প্রথম ১২দিনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে ৯৮ কোটি ৬৬ লাখ ৩০ হাজার (প্রায় ১০০ কোটি বা ১ বিলিয়ন) ডলার দেশে পাঠিয়েছেন।

মাসের বাকি ১৯ দিন এই ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে এই অঙ্ক ২৫৫ কোটি বা ২ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে পৌঁছবে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত