বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেশের অর্থনীতির সবচেয়ে উদ্বেগজনক সূচক বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ বেড়ে ২১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলারে উঠেছে। তবে দুই একদিনের মধ্যে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মেয়াদের আমদানি বিল পরিশোধ করলে রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের সামান্য উপরে থাকবে।
আইএমএফের ঋণের তৃতীয় কিস্তি পাওয়ার পথ মসৃণ করতে রিজার্ভ বাড়িয়ে রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সংস্থাটি নতুন যে শর্ত দিয়েছে, তাতে চলতি মার্চ মাস শেষে বাংলাদেশের প্রকৃত বা নিট রিজার্ভ থাকতে হবে ১৯ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার।
বুধবার দিন শেষে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ বেড়ে ২১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলারে উঠেছে। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘গ্রস’ হিসাবে রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলারে।
এক সপ্তাহে আগে ২৮ ফেব্রুয়ারি বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার। ‘গ্রস’ হিসাবে ছিল ২৫ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলারে।
এক মাস আগে ৭ ফেব্রুয়ারি বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ছিল ১৯ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার। ‘গ্রস’ হিসাবে ছিল ২৫ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলারে।
এ হিসাবে দেখা যাচ্ছে, এক মাসের ব্যবধানে বাংলাদেশের রিজার্ভ ১ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার বেড়েছে।
তবে দু-এক দিনের মধ্যেই এই রিজার্ভ বেশ খানিকটা কমে আসবে। বুধবার অথবা বৃহস্পতিবার এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মেয়াদের ১ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলারের আমদানি বিল পরিশোধ করতে হবে। সেটা সমন্বয়ের পর রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের সামান্য কিছু উপরে অবস্থান করবে।
আকুর বিল পরিশোধের পরও যাতে রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের উপরে অবস্থান করে এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) তৃতীয় কিস্তির ঋণ পেতে তাদের শর্ত অনুযায়ী চলতি মার্চ মাস শেষে নিট রিজার্ভ যেন ১৯ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার থাকে—সেজন্য নানা পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সেজন্যই রজিার্ভ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকাররা।
বাংলাদেশের জন্য আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ৯৮ লাখ ডলার ছাড়ের বিষয়টি অনুমোদন হয় ১২ ডিসেম্বর। তবে নিট রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে না পারায় বাংলাদেশ এ শর্তে কিছুটা ছাড় চাইলে সংস্থাটি তা পুনর্নির্ধারণ করে।
সে অনুযায়ী গত ডিসেম্বর শেষে ১৭ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন, এ বছরের মার্চ শেষে ১৯ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ও জুন শেষে ২০ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলারের নিট রিজার্ভ সংরক্ষণের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ডিসেম্বরের লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি গেলেও তা পূরণ সম্ভব হয়নি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, গত ৭ ফেব্রুয়ারি বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১৯ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার। নিট রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১৬ বিলিয়ন ডলারের মতো।
অর্থনীতির গবেষক পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, “কেন্দ্রীয় ব্যাংক আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী, রিজার্ভ রাখার জন্য সোয়াপ কারেন্সি সুবিধাসহ নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। সে কারণেই গত কয়েক দিনে রিজার্ভ বেশ খানিকটা বেড়েছে। তারপরও মনে হয় না মার্চ শেষে আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী রিজার্ভ সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে।”
তিনি বলেন, “বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভের চেয়ে নিট রিজার্ভের পরিমাণ ৩ থেকে সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলার কম থাকে। আকুর বিল পরিশোধের পর বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের কিছু উপরে অবস্থান করবে। সেখান থেকে ৩ থেকে ৪ বিলিয়ন ডলার বাদ দিয়ে হিসাব করলে আইএমএফের শর্ত পূরণ হবে না।”
“তখন আইএমএফের তৃতীয় কিস্তি পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে সংস্থাটি।”
আইএমএফের ৪৭০ কোটি (৪.৭ বিলিয়ন) ডলার ঋণের তৃতীয় কিস্তি পাওয়ার পথ মসৃণ করতে বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ বাড়াতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সংস্থাটি নতুন যে শর্ত দিয়েছে, তাতে চলতি মার্চ মাস শেষে বাংলাদেশের প্রকৃত বা নিট রিজার্ভ থাকতে হবে ১৯ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার।
এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য সোয়াপ কারেন্সি সুবিধার মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর কাছে থাকা বাড়তি ডলার রিজার্ভে জমা করাসহ নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাতে রিজার্ভ বেশ খানিকটা বেড়েছেও।
সংকটের মধ্যে রিজার্ভ বেড়ে ২১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। মঙ্গলবার দিন শেষে আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ বেড়ে ২১ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলারে উঠেছে।
চার দিন আগে ২৮ ফেব্রুয়ারি রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার। এক মাস আগে ৭ ফেব্রুয়ারি ছিল ১৯ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার।
এ হিসাবে দেখা যাচ্ছে, এক মাসের ব্যবধানে বাংলাদেশের রিজার্ভ ১ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার বেড়েছে।
তবে দু-এক দিনের মধ্যেই এই রিজার্ভ বেশ খানিকটা কমে আসবে। বুধবার অথবা বৃহস্পতিবার এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মেয়াদের ১ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলারের আমদানি বিল পরিশোধ করতে হবে। সেটা সমন্বয়ের পর রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের সামান্য কিছু উপরে অবস্থান করবে।
আকুর বিল পরিশোধের পরও যাতে রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের উপরে অবস্থান করে এবং আইএমএফের তৃতীয় কিস্তির ঋণ পেতে তাদের শর্ত অনুযায়ী চলতি মার্চ মাস শেষে নিট রিজার্ভ যেন ১৯ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার থাকে—সেজন্য নানা পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।